সমর্থন দেয়নি সরকার: কিংস পার্টির গঠনের টোপ দেয়া হয়েছিল আওয়ামী লীগকে!
*মেজর হাফিজ, কর্নেল অলি আহমেদ সহ বিএনপির একাধিক নেতা পশ্চিমাদের চাহিদা অনুযায়ীএকটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন দেখানোর জন্য সরকারকে কিংস পার্টি গ্রহণে উৎসাহিত করেছিল ব্যক্তিগত লাভের আশায়!
*আওয়ামী লীগের থিংক ট্যাংক থেকে বলা হয়, দলত্যাগী এসকল নেতারা জনগণের কাছে সাধারণত ধিকৃত হন, ভোটের মাঠে এদের তেমন কোন গুরুত্ব থাকে না এবং এরা নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করে তুলতে পারবে না।
ওয়ান ইলেভেনের তত্ত্বাবধায়ক সরকার মাইনাস টু ফর্মুলা বাস্তবায়নের জন্য সর্ব প্রথম ফেরদৌস আহমেদ কোরেশী ও ড. ইউনুসকে দিয়ে দুটি কিংস পার্টি তৈরী করেছিলেন। এরপর থেকেই প্রায়ই আলেচনায় আসে কিংসপার্টির বিষয়টি।
সম্প্রতি দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে তৃণমূল বিএনপি, বিএনএমসহ কয়েকটি দলের অবির্ভাব হয়। তখন ধারণা করা হয়েছিলো, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ইশারাতেই এসব পার্টি সামনের দিকে আসছে। তাই কিংস পার্টি হিসেবেই অভিহিত করা হয়েছিলো তাদের। কিন্তু সম্প্রতি বিভিন্ন ঘটনায় জানা গেছে সরকারকে ফাঁদে ফেলতে কিংস পার্টি গঠনের টোপ দেয়া হয়েছিল আওয়ামী লীগকেই। কিন্তু সরকার এটিকে সমর্থন দেয়নি।
সরকারবিরোধী বিভিন্ন মহল থেকে প্রচারণা চালানো হয়েছিল যে, নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করতে সরকার কিংস পার্টি গঠনের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছিল। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে মেজর হাফিজ, কর্নেল অলি আহমেদ সহ বিএনপির একাধিক নেতা পশ্চিমাদের চাহিদা অনুযায়ীএকটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন দেখানোর জন্য সরকারকে টোপ দিয়েছিলো। বিনিময়ে কেউ শত কোটি টাকা চেয়েছিলেন, কেউ নির্বাচনে জয়ী হওয়ার গ্যারান্টিসহ নানা রকম ব্যবসা, খেলাপি ঋণ মওকুফের দাবী করেছিলেন।
তখন আওয়ামী লীগের থিংক ট্যাংক থেকে বলা হয়, দলত্যাগী এসকল নেতারা জনগণের কাছে সাধারনত ধিকৃত হিসেবে চিহ্নিত হন, ভোটের মাঠে এদের তেমন কোন গুরুত্ব থাকে না এবং এরা নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করে তুলতে পারবে এমনটি মাঠের জরিপে প্রমাণিত হয়নি। ফলে তাদেরকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে সরকারের আরেকটি সাজানো, পাতানো নির্বাচনের কলঙ্ক মাথায় নেয়ার দরকার নেই।
বরং সরকারের কাছে সহজ উপায় ছিল যে, আওয়ামী লীগের প্রচুর বিদ্রোহী প্রার্থীরা রয়েছে তারা জয়ী হওয়ার জন্য জীবন-প্রাণ উৎসর্গ করে দিবেন। কাজেই তাদেরকে যদি নির্বাচনের মাঠে নামানো যায় সেটিই হবে আওয়ামী লীগের জন্য ইতিবাচক। আর আওয়ামী লীগ দ্বিতীয় পদ্ধতিতেই যায়।
গোপন সুত্রে জানা গেছে, তৃণমূল বিএনপি নির্বাচন করার জন্য পাঁচশ কোটি টাকার তহবিল চেয়েছিল। যেটি সরকারের কোন মহল থেকে শেষ পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। কারণ এই বিপুল অর্থ দিয়ে তারা নির্বাচন করবেন এটি বিশ্বাসযোগ্য ছিল না। বরং এই টাকা তারা তাদের আখের গোছানোর জন্য খরচ করবেন, এমনটি মনে করা যথেষ্ট যুক্তিসঙ্গত কারণ ছিল সরকারি মহলে।
এছাড়া বিএনএম এর চেয়ারপার্সন হওয়ার জন্য মেজর (অবঃ) হাফিজ মুখিয়ে ছিলেন। এজন্য তিনিও সরকারের কাছে একশ কোটি টাকার তহবিল চেয়েছিলেন। কিন্তু মেজর হাফিজের মত একজন পরিত্যাক্ত নেতাকে এই বিপুল টাকা ওদয়ার কোন মানে খুঁজে পায়নি সরকার। এ একারণেই সরকার এসমস্ত চাহিদার থেকে বরং যেসমস্ত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচন করতে আগ্রহী তাদেরকে নির্বাচনে দাঁড় করানোটাকে সহজ হিসেবে মনে করেছিল। একারণে কিংস পার্টির পক্ষে কোন অবস্থান নেয়নি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।