কেমন আছে ইউনুসবিহীন গ্রামীন ব্যাংক?

  নিউজ ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ দুপুর ১২:৫৬, শনিবার, ৩০ মার্চ, ২০২৪, ১৬ চৈত্র ১৪৩০

সার্বিক বিষয়ে গ্রামীণ ব্যাংকে আগের থেকে আর বেশি ভালো চলছে; বরং আগের থেকে কার্যক্রম অনেক সম্প্রাসারিত হয়েছে। ড. ইউনূসের অনুপস্থিতিতে গ্রামীণ ব্যাংকের কার্যক্রম কোনোভাবেই বাধাগ্রস্ত হয়নি, বরং বিস্তৃত হয়েছে জানান অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা।

গ্রামীন ব্যাংকের প্রতিষ্ঠানলগ্ন থেকে ২০১১ সাল নাগাদ এমডি পদে ছিলেন নোবেলজয়ী ড. ইউনুস। অবসরের বয়স হওয়ার পরও বিভিন্ন অযুহাতে ব্যাংকটির সর্বোচ্চ পদ আঁকড়ে ছিলেন তিনি। পদ ছাড়তে অগ্রাহ্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুরোধ। শেষতক ২০১১ সালে আইনের মারপ্যাঁচে হেরে ছাড়তে হয় এমডি পদটি।  ড. ইউনুস পদ ছাড়ার পর ব্যাংকের কার্যক্রম ঠিক মত চলবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় জাগে সংশ্লিষ্টদের মনে। এমনকি তিনি নিজেও এ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন।

এখন কেমন আছে গ্রামীন ব্যাংক, জানতে হলে দেখতে হবে পরিসংখ্যান।  ড. ইউনূসের অনুপস্থিতিতে গ্রামীণ ব্যাংকের কার্যক্রম আগের থেকে বেশি সম্প্রসারিত হয়েছে নাকি সংকুচিত হয়েছে?

ইউনূস অধ্যায়ের পরিসমাপ্তির পর থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত প্রাপ্ত হিসেবে অনুযায়ী সাড়ে ৮ বছরে নতুন নেতৃত্বে পরিচালিত গ্রামীণ ব্যাংক ক্ষুদ্রঋণ হিসেবে ১ লাখ ৫২ হাজার ৭৮৪ কোটি টাকা বিতরণ করে।

অথচ আগের ২৮ বছরে বিতরণকৃত ঋণ ছিল ৭০ হাজার ৩০০ কোটি টাকা । সেই হিসেবে ইউনূস আমলে ঋণ বিতরণের তুলনায় নতুন নেতৃত্বের হাত ধরে ব্যাংকটির ঋণ বিতরণ কার্যক্রম দ্বিগুনের বেশি বেড়েছে।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত ৩৭ লাখ ৩৩ হাজার ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ১১ হাজার ৮৮ কোটি টাকা ঋণ পায়। অন্যদিকে ২০১২ সাল থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত এক কোটি ১৪ লাখ ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানকে ৪২ হাজার ৭৩০ কোটি টাকা ঋণ দেয় ব্যাংকটি। অর্থাৎ নতুন ব্যবস্থাপনায় ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানে ঋণ বেড়েছে প্রায় চার গুণ।

প্রতিষ্ঠানটিতে আমানত আছে ২৩ হাজার ২৪৮ কোটি টাকার। ২০১১ সাল শেষে আমানত ছিল ১১ হাজার ৬৮৭ কোটি টাকার।

২০১১ সাল পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির ঋণ নিয়ে বানানো বাড়ির সংখ্যা ছিল ছয় লাখ ৯১ হাজার। ২০২০ সালের জুনে এই সংখ্যা বেড়ে হয়েছে সাত লাখ ৬২ হাজার।

ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমের বাইরে গরিব মানুষদের জীবনমান উন্নয়নেও অনেক ধরনের চাহিদা পূরণেও কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি, যা আগের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে।

২০০২ সালের জুলাই মাসে গ্রামীণ ব্যাংক ভিক্ষুকদের বিনা সুদে ঋণ দেয়ার জন্য একটি বিশেষ প্রকল্প হাতে নেয়। ২০১১ সাল পর্যন্ত ভিক্ষুকদের বিনা সুদে ঋণ ছিল প্রায় ১৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রায় ১৩ কোটি টাকা ফেরতও দিয়েছিল তারা। ২০২০ সালের জুনে মোট ঋণের পরিমাণ বেড়ে হয় ১৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে ফেরত আসে প্রায় ১৬ কোটি টাকা।

২০১১ সালের শেষে গ্রামীণ ব্যাংকের শাখার সংখ্যা ছিল দুই হাজার ৫৬৫টি। তখন তিনটি শাখায় একটি কম্পিউটার ছিল। বর্তমানে শাখা দুই হাজার ৫৬৮টি। এর সবগুলোতেই কম্পিউটারাইজড পদ্ধতিতে হিসাব-নিকাশ করা হচ্ছে।

২০১১ সালে ব্যাংকটির সদস্য সংখ্যা ছিল ৮৩ লাখ ৭১ হাজার। বর্তমানে সদস্য ৯৩ লাখ ১৩ হাজার। এর মধ্যে নারী সদস্যের হার ৯৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ। ২০১১ সালে এই হার ছিল ৯৬.১২ শতাংশ।

সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী ব্যাংকের সার্বিক পরিস্থিতি উন্নীত লক্ষণীয়। তবে বিগত তিন বছরের সঠিক তথ্য পাওয়া  না গেলেও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের মতে অগগ্রতি আশানুরূপ হবে। কেননা বর্তমানে গ্রামীন ব্যাঙ্কের কোনো অর্থই অন্যত্র সরানোর উপায় নেই, যা করেছিলেন ড. ইউনুস। তারা বলছেন, সরকারের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হওয়ায় ব্যাংকের সর্বক্ষেত্রে সচ্ছতা বিরাজমান। ড.ইউনুসের সময়  অর্থপাচারের অভিযোগসহ ব্যাংকের সকল অব্যবস্থারোধ হয়েছে। সেই সাথে ঋণ বিতরণ ও আমানত বেড়ে ভালো অবস্থানে আছে ব্যাংকটি।

সার্বিক বিষয়ে গ্রামীণ ব্যাংকে আগের থেকে আর বেশি ভালো চলছে; বরং আগের থেকে কার্যক্রম অনেক সম্প্রাসারিত হয়েছে। ড. ইউনূসের অনুপস্থিতিতে গ্রামীণ ব্যাংকের কার্যক্রম কোনোভাবেই বাধাগ্রস্ত হয়নি, বরং বিস্তৃত হয়েছে বলে মনে করছেন অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা।

বিষয়ঃ বাংলাদেশ

Share This Article


মোমবাতি জ্বালিয়ে সেহরি-ইফতার খাবারের দিন এখন অতীত!

ভিসা নিষেধাজ্ঞায় ইউনুসের হাত!

ঈদযাত্রায় স্বস্তি আনতে ১৫ বছরে সরকারের যত উদ্যোগ

বৃদ্ধির পথে রিজার্ভ: বাড়ল ৫১ কোটি ডলার!

গ্রামীণ ফোনের ইনকামিং কল চার্জ বন্ধ করলেও বিদেশী বন্ধুদের দ্বারা সরকারকে থ্রেট দিয়েছিলেন ইউনুস!

পোশাকের নতুন বাজার: আওয়ামীলীগ সরকারের শাসনামলে ১০ গুণ বেড়েছে রপ্তানি!

পাহাড়ে ‘কেএনএফ’ সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আসলে কারা?

বিশ্ব খাদ্য নিরাপত্তায় শঙ্কা: বাংলাদেশের অবস্থান কোথায়

প্রধানমন্ত্রীর মুখে গ্রামীন ফোন নিয়ে ধোঁকাবাজির গল্প!

ইউনূসের ক্ষুদ্র ঋণের ‘সাপ্তাহিক কিস্তি’ চক্র যখন ফাঁদ

ইজরাইলি ভাস্কর্য শিল্পী মিজ হেদভা সের স্বারক পুরস্কারকে কেন ইউনেস্কোর বলে চালালেন ইউনুস?