১৯৭৫ সালের ১৭ মার্চ: যেমন ছিল বঙ্গবন্ধুর জীবনের শেষ জন্মদিনটি
‘বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে কমপক্ষে ৫০ হাজার লোকের সমাগম হয়। নেতা জনতার সম্মিলনে কোনো বাধা ছিল না। ভোর সাড়ে ছয়টা থেকে ৩২নং রোডস্থ বাসভবনে নেতার সাক্ষাৎপ্রার্থীদের ভিড় শুরু হয়। কেহ ফুলের মালা, কেক, মিষ্টিসহ বিভিন্ন উপহার সামগ্রী লইয়া জাতির জনকের বাসভবনে উপস্থিত হন।
বঙ্গবন্ধুর জীবনের শেষ জন্মদিন ছিল ১৯৭৫ সালের ১৭ মার্চ। এই দিনটি ছিল বঙ্গবন্ধুর ৫৫তম জন্মবার্ষিকী। দিনটি ছিল উৎসবের আলোয় বর্ণিল। জন্মদিনের সকালটা বঙ্গবন্ধু শুরু করেছিলেন তার বাবা শেখ লুৎফুর রহমানের দোয়া নেওয়ার মধ্য দিয়ে। এ সময় বঙ্গবন্ধু অসুস্থ বাবার চরণ স্পর্শ করে আশীর্বাদ কামনা করেন। পরদিন ১৮ মার্চ দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত হয় এই ঘটনাটি।
১৮ মার্চ দৈনিক ইত্তেফাকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে কমপক্ষে ৫০ হাজার লোকের সমাগম হয়। নেতা জনতার সম্মিলনে কোনো বাধা ছিল না। ভোর সাড়ে ছয়টা থেকে ৩২নং রোডস্থ বাসভবনে নেতার সাক্ষাৎপ্রার্থীদের ভিড় শুরু হয়। কেহ ফুলের মালা, কেক, মিষ্টিসহ বিভিন্ন উপহার সামগ্রী লইয়া জাতির জনকের বাসভবনে উপস্থিত হন। সকাল ৭টা হইতে সোয়া ১১টা পর্যন্ত ৪ ঘণ্টাধিক কাল ধরিয়া তিনি শুভার্থীদের সাক্ষাৎদান করেন। প্রেসিডেন্ট হলেও মিশে যান সাধারণ মানুষের সাথে ।'
বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী উদযাপন করতে বাকশাল নেতাকর্মীরা ৫৫ পাউন্ডের একটি কেকে বঙ্গবন্ধুর ৫৫ বছর বয়সের প্রতীক হিসেবে কেকটিতে ৫৫টি চিহ্ন অঙ্কিত করেছিলো। একইসঙ্গে ছিল ৪টি পায়রা, যা রাষ্ট্রের ৪টি মূলনীতির প্রতীক। বঙ্গবন্ধু সেই কেক কাটেন। এছাড়া জন্মদিন উপলক্ষে এদিন ভারতের রাষ্ট্রপতি ফখরুদ্দিন আলী আহমেদ ও প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বঙ্গবন্ধুকে শুভেচ্ছা জানান।
বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে ১৯৭৫ সালের ১৭ মার্চ প্রথমবারের মতো 'বঙ্গবন্ধু পুরস্কার' প্রদান করা হয়। এদিন ৩৯ জন আদর্শ চাষিকে আনুষ্ঠানিকভাবে বঙ্গবন্ধু পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। এছাড়া দিনটিকে কেন্দ্র করে গণমাধ্যমে বিশেষ ক্রোড়পত্র ও অনুষ্ঠান প্রকাশিত হয়। আর বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান দৈনিক পত্রিকাগুলোতে বঙ্গবন্ধুকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বড় আকারের বিজ্ঞাপন দিয়েছে।
তথ্যসূত্র: কারাগারের রোজনামচা/ শেখ মুজিবুর রহমান, দৈনিক ইত্তেফাক ও দৈনিক সংবাদ ১৭ ও ১৮ মার্চ ১৯৭৫