মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর অপ্রতিরোধ্য, ধারণায় চিড়

  বাংলাদেশের কথা ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ দুপুর ১২:৫৫, শনিবার, ২ ডিসেম্বর, ২০২৩, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩০

রাখাইন রাজ্যে জান্তার নিরাপত্তা বাহিনীকে অন্তত ৪০টি অবস্থান ত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে এবং এ রাজ্যের প্রশাসনও ভেঙে পড়েছে। অন্যদিকে সংঘর্ষের কারণে চীন, ভারত ও বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের সীমান্ত বাণিজ্য বন্ধ রয়েছে। 

বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো সেনাচৌকিতে হামলা চালিয়ে আসছে। জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে ‘অপারেশন ১০২৭’ নামে ২৭ অক্টোবর থেকে চালানো বিদ্রোহীদের সমন্বিত অভিযান ক্রমান্বয়ে জোরদার হচ্ছে দেশজুড়েই। গত এক মাসে উত্তরাঞ্চলীয় শান প্রদেশে জান্তার সৈনিকদের প্রায় ২০০ সামরিক স্থাপনা দখল করেছে বিদ্রোহীরা। 

পর্যবেক্ষকদের মতে, বিদ্রোহীদের দখলে নেওয়া এ স্থাপনাগুলো পুনরুদ্ধার করতে অক্ষম সেনাবাহিনী। 

আক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে দেশের অন্যান্য স্থানেও। সাগাইং অঞ্চলের কাওলিন ও কামফাট শহর দখল করেছে বিদ্রোহীরা। এ ছাড়া সাগাইং ও ম্যাগওয়ে অঞ্চলে জান্তা বাহিনীর সৈন্য এবং জান্তা-সহযোগী মিলিশিয়াদের ঘাঁটিগুলো দখল করা হয়েছে। কোথাও কোথাও জনবলস্বল্পতার কারণে জান্তা সৈন্যরা তাদের অবস্থান ত্যাগ করতে বাধ্য হচ্ছে। 

 

সাগাইং এবং ম্যাগওয়ে অঞ্চলের গ্রামে সাম্প্রতিক সময়ে জান্তা অভিযান এবং অগ্নিসংযোগের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। এর কারণ, এ ধরনের অভিযান চালানোর জন্য লোকবলের অভাব রয়েছে জান্তা বাহিনীর। 

চিন রাজ্যে জাতিগত চিন বিপ্লবী সংগঠনগুলো রিহখাওদার ও লাইলিনপি শহরগুলো দখল করে বেশির ভাগ অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। কারেনি (কায়া) রাজ্যে কারেনি বিদ্রোহী গোষ্ঠী মেসে টাউনশিপ দখল করেছে এবং রাজ্যের রাজধানী লইকায় লড়াই করছে তারা। জান্তার প্রশাসন রাজ্যের বেশির ভাগ অংশে ভেঙে পড়েছে। কাচিন রাজ্যে জান্তা সৈন্য এবং প্রশাসনিক কর্মীদেরও ইনজানিয়াং শহর ছেড়ে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। জান্তা সরকার কারেন রাজ্যে অনেক ঘাঁটি এবং গুরুত্বপূর্ণ পরিবহন রুটও হারিয়েছে। 

রাখাইন রাজ্যে জান্তার নিরাপত্তা বাহিনীকে অন্তত ৪০টি অবস্থান ত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে এবং এ রাজ্যের প্রশাসনও ভেঙে পড়েছে। অন্যদিকে সংঘর্ষের কারণে চীন, ভারত ও বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের সীমান্ত বাণিজ্য বন্ধ রয়েছে। 

২০২১ সালে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই মিয়ানমারজুড়ে বিদ্রোহীরা বিচ্ছিন্নভাবে তৎপর ছিল। তবে গত ২৭ অক্টোবরের পর থেকেই মূলত জান্তার বিরুদ্ধে লড়াই তীব্র হয়েছে। আরাকান আর্মি, মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ) এবং তাঙ ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ) ‘থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স’ জোট গড়ে। এ জোট ওই দিন থেকে ‘অপারেশন ১০২৭ ’-এর নামে সমন্বিত অভিযান পরিচালনা করছে। 

জান্তা এখন বেশ কঠিন সময় পার করছে। সামরিক বাহিনী মনস্তাত্ত্বিকভাবে ভেঙে পড়ছে। এই দ্রুত অবনতি ইঙ্গিত দেয়, মিয়ানমার সেনাবাহিনী পরাজিত হতে পারে এবং ভেঙে পড়তে পারে।

Share This Article