কৃষিতে ডিজিটালাইজেশন : যেভাবে অধিক লাভবান হবেন কৃষক

সারা বছর ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে কিংবা রোদে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ফসল ফলান কৃষকরা। কিন্তু আক্ষেপের বিষয় হচ্ছে, এই ফসল ফলাতে ও বিক্রি করতে গিয়ে নানা সমস্যায় পড়েন তারা। বিশেষ করে সঠিক পরিকল্পনার অভাবে ফসলের উৎপাদন কমে গিয়ে লোকসানের মুখে পড়া ও ফসলের কাঙ্ক্ষিত মূল্য পান না অনেক কৃষক।
এহেন পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে কৃষি ও কৃষককে একসাথে একটি ডিজিটাল প্লাটফর্মে আনার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার, যেখানে অ্যাপসের মাধ্যমে ডিজিটাল প্রোফাইলে অন্তর্ভুক্ত করা হবে কৃষকদেরকে। আর প্রত্যেক কৃষককে দেয়া হবে একটি স্মার্ট 'কৃষি কার্ড‘। এর মাধ্যমে অধিক লাভবান হবেন কৃষক।
কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এই ডিজিটাল প্রোফাইল ব্যবহার করে বিশেষজ্ঞ কৃষি বিশারদদের পরামর্শ নিয়ে কৃষকরা যেমন ফসলের উৎপাদন বাড়াতে পারবেন, তেমনি শঙ্কা কাটবে তাদের ন্যায্য মূল্য নিয়েও। একই সাথে এই কার্ডে থাকা বারকোড স্ক্যান করলে একজন কৃষকের সব তথ্যই চলে আসবে। ফলে সরকারের সব সুবিধা পাবেন তারা। অন্যদিকে, কৃষকদের নাম ভাঙিয়ে কেউ ঋণ নিয়ে তাদের বিপদে ফেলতে পারবে না।
প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে কৃষকের সঙ্গে সম্প্রসারণ কর্মী ও কৃষি বিশেষজ্ঞদের যোগাযোগ, তথ্যের আদান-প্রদান ও এলাকাভিত্তিক চাহিদা অনুযায়ী সেবা কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
এছাড়া অ্যাপসে ডিজিটাল কৃষি তথ্যের সাহায্যে উৎপাদন পরিকল্পনা ও বাজারজাতকরণ সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন কৃষকরা নিজেই। সেই সাথে এ কার্যক্রমের মাধ্যমে নারী কৃষক ও নারী কৃষি উদ্যোক্তাদের ডিজিটাল প্রক্রিয়ায় সচেতনতা ও দক্ষতা উন্নয়নে সহায়তা করা সম্ভব হবে বলেও আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে কৃষি মন্ত্রণালয়, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এবং এসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই) প্রোগ্রামের যৌথ উদ্যোগে কৃষি বাতায়ন এবং কৃষক বন্ধু ফোনসেবা ৩৩৩১ নামক দুটি ডিজিটাল সেবা চালু হয়েছিলো।
নতুন প্রকল্পের আওতায় দেশের পাঁচ কোটি কৃষকের মধ্যে প্রথম পর্যায়ে এক কোটি ৬২ লাখ কৃষককে ডিজিটাল প্রোফাইলে যুক্ত করা হবে। পাশাপাশি এক কোটি নয় লাখ কৃষককে দেওয়া হবে স্মার্ট কৃষি কার্ড। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।