রেমিট্যান্সের ওপর আইএমএফের কর আরোপের পরামর্শ শুনবে কি সরকার?
আইএমএফের পরামর্শকে স্ববিরোধী আখ্যা দিয়ে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, আইএমএফের কথাতে নয়, বাস্তবতার আলোকে সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
দেশের জনগণের মাথাপিছু আয় বাড়লেও কর-জিডিপির অনুপাত সে অনুযায়ী তেমনটা বাড়েনি। এ ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) তাই সুপারিশ করেছে, চলতি ২০২৩–২৪ অর্থবছরের জুনের মধ্যেই যেন জিডিপির দশমিক ৫০ শতাংশ পরিমাণ অতিরিক্ত কর আদায় বাড়ে। শুধু তাই নয়, সরকারকে পরামর্শ দিয়ে তারা বলেছে, রেমিট্যান্সের ওপর দ্রুত কর আরোপ করার জন্য। এমনকি এ খাতে নগদ প্রণোদনাও বন্ধ করার প্রস্তাব দিয়েছে সংস্থাটি।
গত ১৪ মার্চ সংস্থাটির ঢাকা সফররত মিশন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠককালে 'ইনকাম ট্যাক্স এক্সপেনডিচার' শীর্ষক তাদের মূল্যায়ন প্রতিবেদনে এ সুপারিশ করা হয় বলে জানিয়েছে বৈঠক সূত্র।
যদিও এমন পরামর্শ সরকার শুনবে কিনা তা নিয়ে রয়েছে যথেষ্ট প্রশ্ন। কারণ অর্থনীতিবিদরা আশঙ্কা করছেন এই পরামর্শ বাস্তবায়িত হলে রিজার্ভ বৃদ্ধির পরিবর্তে উল্টো ফল হতে পারে।কেননা আইএমএফ এর পরামর্শে বহু আগে থেকেই বিভিন্ন খাতে করারোপ করলেও রেমিট্যান্সের ওপর কর আরোপ করেনি সরকার, উল্টো প্রণোদনা দিয়ে আসছে, যাতে হুন্ডির দৌরাত্ম কমে গিয়ে রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি পায়। এর সুফলও পাওয়া যাচ্ছে।
কিন্তু রেমিট্যান্সের ওপর আইএমএফ’র পরামর্শ মেনে নিলে প্রবাসীরা ফের ব্যাঙ্কিং চ্যানেল এড়িয়ে হুন্ডিতে উৎসাহিত হবে, যার ফলে রেমিট্যান্সসহ রিজার্ভও হ্রাস পাবে, অথচ রিজার্ভ সঠিক মাত্রায় রাখাও আইএমএফ'র শর্ত। ফলে এই পরামর্শকে স্ববিরোধী আখ্যা দিয়ে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, আইএমএফের কথাতে নয়, বাস্তবতার আলোকে সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
উল্লেখ্য, ২০২৩–২৪ অর্থবছরে ব্যক্তি খাতে বিদ্যমান করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়ানোর পাশাপাশি ন্যূনতম করহার ৫ থেকে ১০ শতাংশে উন্নীত করার পরামর্শ দিয়েছে সংস্থাটি। এ জন্য রেমিট্যান্সসহ শেয়ারবাজার থেকে অর্জিত আয়ের ওপর দেওয়া করছাড়ও বাতিলের পক্ষে মত দিয়েছে সংস্থাটি।