গাজায় বেসামরিক মৃত্যুর সংখ্যা ‘অনেক বেশি’: যুক্তরাষ্ট্র
গাজা উপত্যকায় বেসামরিক মৃত্যুর সংখ্যা ‘অনেক বেশি’ বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ যুদ্ধ-বিধ্বস্ত এই ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবিতে একটি প্রস্তাব পাস করার একদিন পরে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টকে এ তথ্য জানালেন তিনি।
মঙ্গলবার ওয়াশিংটন ডিসিতে গ্যালান্টের সাথে বৈঠকের শুরুতে বক্তৃতাকালে অস্টিন বলেন, গাজায় পৌঁছানো মানবিক সহায়তার পরিমাণও ‘খুব কম’।
মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগনের এই প্রধান আরো বলেন, গাজা মানবিক বিপর্যয়ের শিকার হচ্ছে এবং পরিস্থিতি আরো খারাপ হচ্ছে। সেখানে দুর্ভিক্ষ এড়ানোর জন্য আমাদের অবিলম্বে সহায়তা বৃদ্ধির প্রয়োজন এবং সমুদ্রপথে অস্থায়ী মানবিক করিডোর খোলার জন্য আমাদের কর্মকাণ্ড এই কাজকে সাহায্য করবে। তবে মূল বিষয় হল- স্থলপথে সাহায্য বিতরণ আরো প্রসারিত করা।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট এমন এক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানীতে সফরে এসেছেন যখন জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ গত সোমবার গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে একটি প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে।
ইসরায়েল গাজায় অতীব জরুরি মানবিক সহায়তার প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছে। এতে করে ফিলিস্তিনি এই ভূখণ্ড ‘দুর্ভিক্ষের মতো পরিস্থিতির’ সম্মুখীন হচ্ছে বলেও জাতিসংঘসহ অনেকেই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায় হামাস। এর জবাবে সেদিন থেকেই গাজায় বিমান হামলা শুরু করে দখলদার ইসরায়েল। পাশাপাশি স্থল অভিযানও চালানো হয়। পাঁচ মাসের বেশি সময়ে ফিলিস্তিনি ছিটমহলটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। পানি, খাবার ও নিরাপদ স্থানের অভাবে গাজাবাসী ক্রমাগত মরিয়া পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছে।
গাজায় ইসরায়েলের টানা ৪৭ দিনের হামলার পর গত বছরের ২৪ নভেম্বর প্রথম দফায় চার দিনের যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। এ যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতা করে কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্র। এরপর দুই দফায় মোট তিন দিন বাড়ানো হয় যুদ্ধবিরতির মেয়াদ।
সাত দিনের যুদ্ধবিরতি শেষ হতে না হতেই আবারো গাজায় আবার হামলা শুরু করে ইসরায়েল। এর পাশাপাশি স্থল অভিযানও চালানো হচ্ছে।
ইসরায়েলি বাহিনীর এমন আচরণে বিশ্বজুড়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে। যুদ্ধ বন্ধের বদলে গত রোববার মিশরের সীমান্তবর্তী রাফা শহরে স্থল অভিযানের হুমকি পুনর্ব্যক্ত করেছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। যেখানে হামলার মুখে গাজার অন্যান্য এলাকা থেকে প্রায় ১০ লাখের বেশি বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি আশ্রয় নিয়েছেন।
কঠোর অবরোধ ও অবিরাম হামলার মধ্যে থাকা গাজাবাসীরা অনাহারে ভুগতে ভুগতে দুর্ভিক্ষের প্রান্তে চলে গেছে। ইতোমধ্যেই অপুষ্টি ও পানিশূন্যতায় শিশুসহ অনেকের মৃত্যু হয়েছে। ক্ষুধায় বেপরোয়া হয়ে ওঠা লোকজন ত্রাণের জন্য হাহাকার করছে।