ডেঙ্গু আক্রান্তের তুলনায় মৃত্যু হার বেশী : চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় মনোযোগ জরুরী!

  বাংলাদেশের কথা ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ দুপুর ০২:২৯, বৃহস্পতিবার, ২০ জুলাই, ২০২৩, ৫ শ্রাবণ ১৪৩০

গত বুধবার দেশে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ১৯ জন মারা গেছেন, যা বিগত ৫ বছরে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড। একই সময়ে আরও ১ হাজার ৭৯২ জন হাসপাতালে ভর্তি হন। এ নিয়ে চলতি বছরে কয়েক মাসেই গত বুধবার পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মোট ১৪৬ জন মারা গেলেন। গত বছর ডেঙ্গুতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ২৮১ জন। পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপের দিকেই যাচ্ছে। তবে বিগত বছরের তুলনায় আক্রান্তের হার তুলনামূলক অনেক কম হবার পরও মৃত্যুর সর্বাধিক হার ভাবিয়ে তুলেছে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের। আর আক্রান্তের সংখ্যার সাথে মৃত্যু হার বাড়তে থাকলে ডেঙ্গু পরিস্থিতি আরও ঘনীভূত হবে বলে আশঙ্কা করছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

 

বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে মোট ৫ হাজার ৫৫২ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন। এ বছর ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে এ পর্যন্ত ভর্তি হয়েছেন মোট ২৫ হাজার ৭৯২ জন, যা ক্রমান্বয়ে আরো বৃদ্ধি পাবে। গত বছর মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬২ হাজার ৩৮২ জন।

তবে গত ছয় বছরের মধ্যে এ বছর ১৭ জুলাই পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সর্বোচ্চ হার রেকর্ড করা হয়। এ বছর ০.৫৫ শতাংশ মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে যেখানে এটি ২০২২ সালে ০.৪৫ শতাংশ, ২০২১ সালে ০.৩৭ শতাংশ, ২০২০ সালে ০.৫০ শতাংশ, ২০১৯ সালে ০.১৮শতাংশ এবং ২০১৮ সালে ০.২৬ শতাংশ ছিল। হিসেব অনুযায়ী, রোগী মৃত্যুর হার ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে, যদিও আক্রান্তের  হার বিগত বছরের তুলনায় অনেক কম। অর্থাৎ আক্রান্তের তুলনায় মৃত্যু হার অনেক বেশী হওয়ায় চিকিৎসার মান ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্নের উদ্রেক হয়েছে। তবে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এর কারণ হিসেবে ডেঙ্গুর নতুন ভেরিয়েন্টকে দায়ী করছেন, যদিও গত বছরই কীটতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা এ নিয়ে সতর্ক করেছিলেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালকে। ফলে এবছর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলেও অবাক হবার কিছু থাকবেনা।

তাই বিগত বছরের তুলনায় সিটি করপোরেশন কর্তৃক গৃহীত ব্যবস্থাপনা তুলনামূলক ভালো হলেও চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় অপরিহার্য দুর্বলতার বিপরীতে অবিলম্বে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণের বিকল্প নেই। নইলে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব মহামারীতে রূপ নিতে পারে বলে মত দিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তবে এক্ষেত্রে সিটি করপোরেশন তথা সরকারের একক পদক্ষেপ যথেষ্ট নয়। সাধারণ নাগরিকদেরও নিজ উদ্যোগেই নিজেদের পরিবারকে মৃত্যু ঝুঁকি থেকে বাঁচাতে নিজ আবাসস্থলসহ আশেপাশের এলাকা মশকমুক্ত রাখতে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া জরুরী। নইলে সম্ভাব্য ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের কোন উপায় থাকবেনা।

Share This Article