দক্ষিণ আফ্রিকায় ডাকাতের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত
দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে ডাকাতের গুলিতে মো. সোহাগ (৩৫) নামে এক বাংলাদেশি ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার স্থানীয় সময় রাত ৮টায় জোহানেসবার্গের ব্রি স্ট্রিটের ‘নোয়াখালী সুপার মার্কেটে’ এ ঘটনা ঘটে।
অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা দোকানে ডাকাতি শেষে যাওয়ার পথে সোহাগকে গুলি করে। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি নিহত হন। মো. সোহাগ নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার নাটেশ্বর ইউনিয়নের নজরপুর গ্রামের বাসিন্দা।
জীবিকার তাগিদে ১১বছর আগে সাউথ আফ্রিকায় যান সোহাগ। ছয় ভাইবোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট। তার এমন মৃত্যুতে পরিবারের চলছে কান্নার আহাজারি। সোহাগের লাশ দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের কাছে আকুল আবেদন জানান নিহতের স্বজনরা। পাশাপাশি দুর্বৃত্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তারা।
এ ঘটনায় হামলায় আহত হয়েছেন সোহাগের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের একজন নিরাপত্তা প্রহরী।
নিহতের বড় ভাই বেলাল হোসেন জানান, জীবিকার সন্ধানে গত ২০১৩ সালের ডিসেম্বর মাসে দক্ষিণ আফ্রিকায় যান সোহাগ। গত বছর বাড়িতে আসার পর বিয়ে করে ৯ মাস ছিলো সে। গত বছরের রোজায় আফ্রিকায় যায় সোহাগ। এরই মধ্যে তার একটি ছেলে সন্তান হয়। সবকিছু ঠিক থাকলে নিজের সন্তানকে দেখার জন্য ইদের পর বাড়িতে আসার কথা ছিল সোহাগের।
তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিদিন রাত ১১টায় সোহাগের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলতেন তিনি। গতকাল শনিবার রাত ১১টায় কথা বলা অবস্থায় সোহাগের মোবাইলের সংযোগ কেটে যায়। আফ্রিকায় ইফতারের সময় হয়েছে ভেবে আমি পরে আর কল করেননি। ভেবেছিলাম ভোর রাতে সোহাগের সঙ্গে আবার কথা হবে। পরে সেহরির সময় ভাগিনা মামুনের কাছ থেকে শুনতে পেয়েছি সোহাগ সন্ত্রাসীদের গুলিতে মারা গেছেন।’
নিহতের ভাগিনা মামুন জানান, ইফতার শেষ করে সোহাগ ও তার ৪ সহকর্মী দোকানে যান। এর কিছুক্ষণ পর ৬-৭জন সন্ত্রাসী দোকানে এসে হামলা চালিয়ে লুটপাট শুরু করে। সন্ত্রাসীদের হামলার সময় দোকানে থাকা অপর সবাই নিচে শুয়ে পড়লেও সোহাগ পাশে দাঁড়ানো অবস্থায় ছিলেন। লুটপাট শেষে সন্ত্রাসীরা সবাইকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছুঁড়লে সোহাগ ও তাদের প্রহরী গুলিবিদ্ধ হন। তাদের দ্রুত উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে সোহাগের মৃত্যু হয়। সোহাগের মাথা ও গলায় গুলি লেগেছিল।
এ দিকে, সোহাগের অকাল মৃত্যুতে তার বাড়িতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সন্তানকে হারিয়ে কান্নায় মুচ্ছা যাচ্ছেন বাবা কোব্বাত মিয়া, মা নূরজাহান বেগম। বিয়ের বছর পার না হতে স্বামীকে হারিয়ে পাগল প্রায় সোহাগের স্ত্রী আখি আক্তার। নিহতের পরিবারের দাবি সরকারি সহযোগিতায় দ্রুত সময়ের মধ্যে সোহাগের মরদেহ বাংলাদেশে আনার ব্যবস্থা করা হয়।