কায়রোতে বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন

  নিউজ ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ বিকাল ০৩:২২, সোমবার, ১৮ মার্চ, ২০২৪, ৪ চৈত্র ১৪৩০

শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রুহের মাগফেরাত এবং প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশ ও জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি ও উন্নতি কামনায় বিশেষ প্রার্থনা করা হয়। পরবর্তীতে রাষ্ট্রদূত দূতাবাসের কর্মকর্তাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর দিবসটি উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শোনানো হয়।

মিসরের কায়রোস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী এবং জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন করা হয়েছে। গতকাল রবিবার (১৭ মার্চ) সকালে জাতীয় পতাকা আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়।

রাষ্ট্রদূত সামিনা নাজ দূতাবাস প্রাঙ্গণে জাতীয় সংগীত সহকারে জাতীয় পতাকা আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তোলন করেন। এ সময় দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

এরপর দুপুরে দূতাবাসের মিলনায়তন রুমে দিবসটির কার্যক্রম শুরু হয়। শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রুহের মাগফেরাত এবং প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশ ও জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি ও উন্নতি কামনায় বিশেষ প্রার্থনা করা হয়। পরবর্তীতে রাষ্ট্রদূত দূতাবাসের কর্মকর্তাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর দিবসটি উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শোনানো হয়। পরবর্তীতে দিবসটি উপলক্ষ্যে একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।

দিবসটি উপলক্ষ্যে আয়োজিত বিশেষ আলোচনা সভায় রাষ্ট্রদূত সামিনা নাজ শুরুতেই সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করেন স্বাধীনতার মহান স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি, জাতির পিতা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। রাষ্ট্রদূত তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন বাঙ্গালী জাতির অবিসংবাদিত নেতা যার মহান নেতৃত্বে ১৯৪৮ -এর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৭১ -এর মুক্তিযুদ্ধ এবং সকল সংগ্রামে বাংলার মানুষ শোষণ, নির্যাতন, বঞ্চনা ও স্বাধীকার আদায়ে সোচ্চার হয়েছিল। রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন, বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতিকে দিয়েছেন একটি দেশ, পতাকা ও মানচিত্র। তার অসাধারণ নেতৃত্বের গুণে তিনি কেবল বাংলার অবিসংবাদিত নেতা হিসেবেই পরিগণিত হননি, নিজেকে তিনি তৎকালীন বিশ্বের একজন মহান নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। 

রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন, শিশুদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর ভালোবাসা ছিল অপরিসীম। প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশকে শিশুদের জন্য নিরাপদ আবাসভূমিতে পরিণত করার নতুন শপথ নিতেই বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনটিকে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এবং ১৯৯৬ সাল থেকে দিনটি জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। বঙ্গবন্ধু বিশ্বাস করতেন, আজকের শিশুই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। জাতিসংঘ শিশু সনদের ১৫ বছর আগে তিনি শিশু আইন প্রণয়ন করেন ১৯৭৪ সালে। রাষ্ট্রদূত আশাবাদ ব্যক্ত করেন বঙ্গবন্ধুর অসামান্য গৌরবময় কর্ম ও রাজনৈতিক জীবনের ইতিহাস থেকে প্রতিটি শিশু শিক্ষা গ্রহণ করবে এবং তাদের মাঝে চারিত্রিক দৃঢ়তার ভিত্তি গড়ে উঠবে। 

মান্যবর রাষ্ট্রদূত তার বক্তব্যে আরও উল্লেখ করেন, বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ -ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত সুখী, সমৃদ্ধ ও স্বাধীন বাংলাদেশ বিনির্মাণে দৃঢ় পদক্ষেপে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে অগ্রগতি ও উন্নয়নের পথে চালিত করছেন। গত ১৫ বছরে টেকসই উচ্চ প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশ বিশ্বের ৩৫ তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশে পরিনত হয়েছে। লন্ডন ভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর ইকোনমিক এন্ড ব্যাংকিং রিসার্চ এর তথ্য অনুযায়ী আগামী ২০৩৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের ২৫ তম বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন। বর্তমানে আমাদের মাথাপিচু আয় ২ হাজার ৮২৪ মার্কিন ডলার। গত ২০১০ সাল থেকে বাংলাদেশ বার্ষিক ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি বজায় রেখেছে। 

দিবসটি উপযাপন উপলক্ষে বাংলাদেশ দূতাবাস, কায়রো বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে। তারই ধারাবাহিকতায় মিসর প্রবাসী বাংলাদেশী শিশুদের অংশগ্রহণে বয়স ভিত্তিক চিত্রাঙ্কন এবং রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এ প্রতিযোগিতায় বেশ কয়েকজন ছোট শিশু-কিশোর অত্র দূতাবাসে তাদের চিত্রাঙ্কন ও রচনা জমা দেয়। মান্যবর রাষ্ট্রদূত প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মাঝে পুরষ্কার বিতরণ করেন। 

আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, মিসরের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত বাংলাদেশী শিক্ষকবৃন্দ, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থায় কর্মরত বাংলাদেশী কর্মকর্তাবৃন্দ, মিসরে প্রসিদ্ধ বাংলাদেশী ব্যবসায়ী, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশী শিক্ষার্থীবৃন্দ, পেশাজীবী, শ্রমজীবীসহ বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশী, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব এবং দূতাবাসের কর্মকর্তা, কর্মচারীগণ। অনুষ্ঠান শেষে উপস্থিত সকলকে রমজানের পবিত্রতা বজায় রেখে বাঙ্গালি ঐতিহ্যে ইফতার ডিনারের ব্যবস্থা করা হয়।

বিষয়ঃ বাংলাদেশ

Share This Article