ডায়াবেটিস রোগীর মধ্যে রোজা রাখা যাদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ

  বাংলাদেশের কথা ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ সকাল ১০:১৬, বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ, ২০২৩, ৯ চৈত্র ১৪২৯

ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা বিশ্বজুড়েই বাড়ছে। পরিসংখ্যান বলছে, বিশ্বে ১৫০ মিলিয়ন মুসলিম নর-নারী ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। রমজানে এদের মধ্যে অসংখ্যজনই রোজা রাখবেন। কারো কারো জন্য রোজা ঝুঁকি তৈরি না করলেও অনেকে পড়তে পারেন ঝুঁকিতে। 

রোজা রাখায় ডায়াবেটিস রোগীর জীবনের ঝুঁকি সৃষ্টি হওয়ার যাদের আশঙ্কা রয়েছে, তাদের রোজা না রাখাই উত্তম। এক্ষেত্রে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিতে হবে। দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকায় ডায়াবেটিস রোগীর বিপাকীয় কার্যক্রমে সমস্যা দেখা দিতে পারে। ফলে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ কমে অথবা বেড়ে যেতে পারে। কখনো কখনো কিটো-এসিডোসিস নামক এক জটিলতা তৈরি হতে পারে। এছাড়া গরম আবহাওয়ায় দীর্ঘ সময় পানি পান না করায় পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। এতে ডায়াবেটিস রোগীর রক্তের ভেতরে থ্রম্বোসিস তৈরির ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। তবে এসব জটিলতা নির্ভর করে অনেকগুলো বিষয়ের ওপর। রোগীর বয়স, ডায়াবেটিসের ধরন, ডায়াবেটিসের সময়কাল, অন্যান্য রোগব্যাধি, বিশেষ করে কিডনি রোগের উপস্থিতি, ডায়াবেটিসের জন্য ব্যবহৃত ওষুধ, ইনসুলিনের মাত্রা, শরীরচর্চার ধরন ও সময়কাল ইত্যাদি। এছাড়া রোগীর রক্তে চিনির মাত্রা কমে যাওয়ার প্রবণতা ও তা কমে গেলে উপলব্ধি করার ক্ষমতা থাকা বা না থাকার ওপর জীবনের ঝুঁকি নির্ভর করে।

যারা টাইপ-১ ডায়াবেটিসে ভুগছেন, তাদের ঝুঁকি টাইপ-২ ডায়াবেটিসের তুলনায় বেশি। টাইপ-১ ডায়াবেটিস মূলত ইনসুলিননির্ভর। কিন্তু টাইপ-২ ডায়াবেটিসের দীর্ঘকাল ইনসুলিন ছাড়াও চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালনা করা যায়। যারা ১০ বছরের বেশি সময় ধরে যে কোনো ধরনের ডায়াবেটিসে ভুগছেন, তাদের ঝুঁকি অন্যদের তুলনায় বেশি। যারা ইনসুলিন দিয়ে চিকিৎসা করছেন, তাদের রোজা রাখার ঝুঁকি যারা ইনসুলিন ছাড়া চিকিৎসা করছেন তাদের তুলনায় স্বাভাবিক কারণে বেশি। ইনসুলিনের আবার রকম ফের রয়েছে। যাদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে দিনে ৩-৪ বার ইনসুলিন নিতে হয়, তাদের ঝুঁকি অন্যদের তুলনায় বেশি। ইনসুলিনের অন্যতম একটি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলো রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা কমে যাওয়া। এ মাত্রা প্রতি মিলিলিটারে ৩.৯ মিলি মোলের নিচে নেমে গেলে তাকে বলে হাইপোগ্লাইসেমিয়া। এ অবস্থায় মাথাব্যথা, বুক ধড়ফড়, অতিরিক্ত ঘাম, মনোযোগে ব্যাঘাত, খিটখিটে মেজাজ ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দেয়। অবস্থা আরও গুরুতর হলে রোগী অজ্ঞান হতে পারেন। এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমে গেলেও যাদের এ ধরনের উপসর্গ উপলব্ধি করার ক্ষমতা কমে যায়, তারা ঝুঁকিগ্রস্থ ব্যক্তি। যারা হাইপোগ্লাইসিমিয়ায় বারবার আক্রান্ত হন, তারাও ঝুঁকিগ্রস্থ ব্যক্তি। রক্তে চিনির মাত্রা কমে যাওয়ায় যারা সম্প্রতি অজ্ঞান হয়ে গিয়েছেন বা হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছেন, রোজা রাখা তাদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। ডায়াবেটিসের পাশাপাশি যাদের কিডনি ফেইলিউর রয়েছে, তাদের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা খুব বেশি ওঠানামা করে। রোজা রাখা তাদের জন্য কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ।

বিগত তিনমাসে ডায়াবেটিসের নিয়ন্ত্রণ কতটা রয়েছে, তা নির্ণয়ে রক্তের একটি পরীক্ষা রয়েছে, যার নাম এইচবিএ-১ সি। এই মাত্রা ৬.৫-এর নিচে রাখা জরুরি। এর মাত্রা যদি শতকরা ৯ ভাগের বেশি থাকে, তবে তিনি ঝুঁকিগ্রস্ত ব্যক্তি। যারা কায়িক পরিশ্রমের ওপর নির্ভরশীল, তাদের জন্যও রোজা ঝুঁকিপূর্ণ। সেহরি থেকে ইফতার পর্যন্ত সময়সীমা ১৬ ঘণ্টার বেশি হলে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য রোজা রাখা ঝুঁকিপূর্ণ। গর্ভবতী ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে রোজা রাখা তার জন্য ঝুঁকির। তাই রমজানের রোজা রাখতে ডায়াবেটিস রোগীর এসব ঝুঁকি নির্ণয় করে নিতে হবে এবং ডায়াবেটিস রোগ সম্পর্কে অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তবেই রোজা রাখবেন।
 

বিষয়ঃ গবেষণা

Share This Article

শনিবার ১২ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায়

ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ: মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক অনুষ্ঠান বাতিল

চুয়াডাঙ্গায় মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড

তাপপ্রবাহ নিয়ে সুখবর দিলো আবহাওয়া অফিস

নিজের প্রচারের স্বার্থে অন্যকে ব্যবহার ব্যক্তিত্ব বিলিয়ে দেওয়া: অপু

থাইল্যান্ডের সঙ্গে ৫ নথি সই, চিকিৎসা খাতে বিনিয়োগ চান প্রধানমন্ত্রী

যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার প্রতিবেদন ঢাকার প্রত্যাখ্যান

চলতি বছরই থাইল্যান্ডের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির আশা প্রধানমন্ত্রীর

দেশের উন্নয়নে পাকিস্তান প্রশংসা করে, বিএনপি দেখে না: কাদের

মার্কিন চাপ নয়, যুদ্ধ পুরোপুরি বন্ধ হলেই জিম্মি মুক্তি দেবে হামাস