হাসপাতালে বেড়েছে গরমের রোগী

  বাংলাদেশের কথা ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ সকাল ০৯:২০, সোমবার, ২২ এপ্রিল, ২০২৪, ৯ বৈশাখ ১৪৩০

কয়েকটি জেলায় তীব্র দাবদাহের পাশাপাশি সারাদেশে বেড়েছে গরমের তীব্রতা।  এতে মানুষের জীবনযাত্রা থমকে যাওয়ার পাশাপাশি বাড়ছে গরমজনিত বিভিন্ন রোগী। ডায়রিয়া, জ¦র, সর্দি-কাশি, নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্তদের ভিড় হাসপাতালে বাড়ছে। বরিশাল বিভাগে গড়ে প্রতিদিন ৯৪১ রোগী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন।

 এ ছাড়া যশোরে সাধারণ সময়ের চেয়ে হাসপাতালে তিনগুণ রোগী বেড়েছে। এদিকে তীব্র গরমে জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয়ের (জবি) মেডিক্যাল সেন্টারে ভিড় করছেন শিক্ষার্থীরা।

গতকাল রবিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিসংখ্যানবিদ এএসএম আহসান কবির জানান, বরিশাল বিভাগের চারটি জেলায় গত ২০ দিনে প্রায় ১৯ হাজার রোগী জেলা-উপজেলার সরকারি স্বাস্ব্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে চিকিৎসা নিয়েছেন। অর্থাৎ গড়ে ৯৪১ জন রোগী প্রতিদিন ডায়রিয়া আক্রান্ত হচ্ছেন।

জানা গেছে, বিভাগের যেসব জেলায় ডায়রিয়ার সংক্রমণ বেশি ওইসব জেলায় চিকিৎসা পেতেও দীর্ঘ ভোগান্তি পোহাতে হয় রোগীদের। এর মধ্যে বরগুনা জেলার বেশ কয়েকটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্যালাইন সংকট রয়েছে, পিরোজপুরে রোগীরা শয্যাসংকটে হাসপাতালে থেকে চিকিৎসা নিতে পারছেন না। ভোলার হাসপাতালেও শয্যাসংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে।

ভোলা সদরের বাসিন্দা ইকবাল বেপারী বলেন, হাসপাতালে বেডের অনেক সংকট। আমি দুদিন ছিলাম। বলতে গেলে বারান্দায় দাঁড়িয়ে থেকে চিকিৎসা নিয়েছি।

ভোলার সিভিল সার্জন ডা. কেএম শফিকুজ্জামান বলেন, বরিশাল বিভাগ মূলত নদীমাতৃক জনপদ। এ কারণে পানিবাহিত রোগের প্রার্দুভাব এই অঞ্চলে বেশি। প্রতি বছরই ভোলায় ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ে। এ ব্যাপারে আমাদের পূর্বপ্রস্তুতিও রয়েছে।

বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে বিভাগে এখন পর্যন্ত কারও মৃত্যুর সংবাদ নেই। রোগীদের দ্রুত চিকিৎসা দিতে আমাদের পূর্বপ্রস্তুতি রয়েছে।

এদিকে গতকাল বিকালে যশোরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিনের চেয়ে তাপমাত্রা ২ দশমিক ৬ ডিগ্রি কম হলেও গরমের তীব্রতা কমেনি। যশোর জেনারেল হাসপাতালে দেখা গেছে, স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় তিনগুণ বেশি রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন।

হাসপাতালটির ডায়রিয়া ওয়ার্ডের ইনচার্জ সিনিয়র স্টাফ নার্স চায়না খাতুন জানান, শনিবার সকাল ৮টা থেকে রবিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে রোগী ভর্তি হয়েছেন ২৪ জন। যা অন্য সময়ের তুলনায় ৩ গুণ বেশি। চায়না খাতুন বলেন, বেড স্বল্পতায় বারান্দার ফ্লোরে (মেঝ) রেখে রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন অর রশিদ জানান, চিকিৎসা কার্যক্রম চালানোর জন্য পর্যাপ্ত উপকরণ হাসপাতালে রয়েছে।

এদিকে গরম বাড়তে থাকায় গতকাল রবিবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) মেডিক্যাল সেন্টারে সেবা নিয়েছেন প্রায় ১০০ শিক্ষার্থী। এ ছাড়াও খাবার স্যালাইনের পাশাপাশি অন্যান্য ওষুধের জন্য মেডিক্যাল সেন্টারে গিয়েছেন প্রায় ৫০০ শিক্ষার্থী। গত সপ্তাহে প্রতিদিন এ ধরনের সেবা নেওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা দেড়শ থেকে দুইশর মধ্যে।

এদিকে তীব্র দাবদাহের কারণে জবিতে সব বিভাগের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। এক সপ্তাহ অনলাইনে ক্লাস করার সিদ্ধান্তও নিয়েছে বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন।

বিষয়ঃ বাংলাদেশ

Share This Article