আনন্দধারা ছড়িয়ে গেল সবখানে

  বাংলাদেশের কথা ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ সকাল ০৯:২৮, বৃহস্পতিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৭ আশ্বিন ১৪২৯

সারা রাত ঘুম নেই সাবিনা-আঁখি-মারিয়া-কৃষ্ণাদের। কাঠমান্ডু থেকে ঢাকা কতদূর সেটা গুগল ম্যাপে হয়তো কয়েকবার দেখেও ফেলেছেন! সকালে বিমানে চেপে স্বস্তি নেই যেন। সাবিনা ফেসবুকে লিখেছেন- কামিং হোম!

 

বিমানের জানালা দিয়ে মেয়েরা বাইরে তাকিয়ে। অতীত ফিরে আসে ঘুরেফিরেই। কোথায় ছিলেন তারা। আজ পুরো দেশের ফুটবলপ্রেমীরা তাদের অপেক্ষায়। যে কোনো আসর শেষ করে আসার পর বিমানবন্দরে তেমন লোকসমাগম হতো না। আর এবার পুরো দেশবাসী বরণ করে নিতে প্রস্তুত। সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ জয় তো চাট্টিখানি কথা নয়! স্বাগতিক নেপালকে তাদের মাঠে হারিয়ে শিরোপা জেতে বাংলাদেশের স্বর্ণকন্যারা।

বিমানের চাকা বাংলাদেশের মাটি স্পর্শ করে দুপুর ১টা ৪২ মিনিটে। সাবিনারা স্বপ্ন জয় করে দেশে ফিরলেন। এরপর সানজিদার স্বপ্নও পূরণ হয়েছে। ‘চ্যাম্পিয়নস’ লেখা ডাবল ডেকার বাসে করে পুরো শহরের মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে তারা ফেরে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন ভবনে। সেখানে সংবাদমাধ্যমের নানা কথার জবাব দিয়েছেন তারা।

সকাল থেকেই চাপা উত্তেজনা। দুপুর গড়াতেই সব পথ যেন মিলে গেল বিমানবন্দরের সে পথে। বিশাল বাস ভিআইপি টার্মিনালের সামনে এনে রাখা হয়। ফুলের তোড়া নিয়ে হাজির সমর্থকরা। বিকেএসপির ছাত্রছাত্রীরাও হাজির ছিলেন। বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে অধীর আগ্রহে তাকিয়ে ছিলেন কখন মেয়েরা ফিরবেন।

বিমানবন্দরে অবতরণের পর গোটা দলকে কেক খাইয়ে ফুলের মালা পরিয়ে তাদের বরণ করেন ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল এমপি।

কেক কেটে অধিনায়ক সাবিনা, কোচ ছোটন, ওমেন উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণকে এ সময় কেক খাইয়ে দেন ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী। এর পর তাদের পরিয়ে দেওয়া হয় ফুলের মালা। ভিআইপি লাউঞ্জে সংবাদ সম্মেলন সম্ভব হয়নি মিডিয়াকর্মীদের চাপে। পরে বাইরে কথা বলার ব্যবস্থা করা হয়। সেখানে সাবিনা বলেন, ‘এই অর্জন পুরো দেশের মানুষের।’

বিমানবন্দর থেকে বাসে চেপে বসেন ফুটবলাররা। ধীরগতিতে চলতে থাকে। শত শত মোটরসাইকেল, মাইক্রো, গাড়ি ছিল বাসটিকে ঘিরে। বিশেষ ব্যান্ডপার্টির ব্যবস্থা করা হয়েছিল। দেশাত্মবোধক গান চলতে থাকে। ‘জয় বাংলা, বাংলার জয়’ গানের সাথে সুর মেলালেন নারী ফুটবলাররা। সাবিনা শিরোপা উঁচিয়ে ধরেন বাসে। এর পর সবার হাতেই যায়। বাসে চেপে বসেন জাহিদ হাসান রাসেলও। চ্যাম্পিয়নদের সাথে এই আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন তিনি।

পুরো শহর তখন অপেক্ষায়। বিমানবন্দর থেকে বাসটি বের হয়ে খিলক্ষেত, কাকলি, জাহাঙ্গীরগেট, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়, বিজয়সরণি, তেঁজগাও, ভিআইপি রোড, কাকরাইল, পল্টন, মতিঝিল শাপলা চত্বর হয়ে ফুটবল ফেডারেশন যায়। এ সময় রাস্তার দুপাশে দাঁড়িয়ে ছিল সাধারণ মানুষ। মেয়েদের এমন অর্জনে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। এমন ফেরা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। আরও এমন উৎসবের উপলক্ষ ফিরে আসুক বাংলাদেশে।

Share This Article