চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রে গোলাগুলিতে নিহত প্রায় ১৪ হাজার
যুক্তরাষ্ট্রে চলতি বছরের ১ মে পর্যন্ত গোলাগুলিতে ১৩ হাজার ৯৫৯ জন নিহত হয়েছে। অর্থাৎ ২০২৩ সালে দেশটিতে গোলাগুলিতে দৈনিক গড়ে ১১৫ জন নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে কিশোর ৪৯১ জন। আর শিশু ৮৫ জন। দেশটির গান ভায়োলেন্স আর্কাইভের বরাতে সোমবার এবিসি নিউজের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। দেশটির সিংহভাগ গোলাগুলির খবর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে আসে না।
সর্বশেষ গোলাগুলি ঘটনা ঘটেছে রোববার (২১ মে) রাত ১টার। দেশটির মিসৌরি রাজ্যের কানসাস শহরের নাইটক্লাব ক্লাইম্যাক্স লাউঞ্জে ওই হত্যাকাণ্ড তিনজন নিহত হয়েছে।
স্থানীয় পুলিশ জানায়, রোববার রাত ১টা ৩০ মিনিটের দিকে আমরা একটা ফোন কল পাই। এতে ক্লাইম্যাক্স লাউঞ্জে গোলাগুলির কথা আমাদের জানানো হয়। সঙ্গে সঙ্গে আমাদের সদস্যরা ঘটনাস্থলে যান।
তারা ঘটনাস্থলে পাঁচজনকে গুলিবিদ্ধ দেখতে পান। গুলিবিদ্ধদের দুইজন ঘটনাস্থলেই মারা যায়। বাকি তিনজনকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে আরেক জনের মৃত্যু হয়। বাকি দুইজনের মধ্যে একজনের অবস্থা সংকটাপন্ন। আরেক জনের অবস্থা স্থিতিশীল।
সংবিধান অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে প্রাপ্ত বয়স্করা সঙ্গে সবসময় অস্ত্র রাখতে পারেন। তাই দেশটিতে গোলাগুলি একটি সাধারণ ঘটনায় পরিণত হয়েছে। তবে চলতি বছর তা রীতিমতো ‘মহামারি’ আকার ধারণ করেছে।
এবিসি নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত কয়েক বছরে আত্মহত্যা যুক্তরাষ্ট্রে ভয়াবহ আকার ধারণ করে ছিল। চলতি বছর গোলাগুলি সেটাকে হার মানিয়েছে। চলতি বছর দেশটিতে দৈনিক গড়ে ৬৬ জন আত্মহত্যা করেছে। অন্যদিকে গুলিতে নিহত হয়েছে তার প্রায় দ্বিগুণ, ১১৫ জন
চলতি বছর গোলাগুলির ঘটনা বাড়ায় অস্ত্র আইন কড়াকড়ি করার জন্য সরকারের ওপর যথারীতি নতুন করে চাপ বাড়ে।
বলা হয়ে থাকে, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ডেমোক্র্যাটিক পার্টি অস্ত্র আইন কড়াকড়ির পক্ষে। বাইডেনসহ দলটির শীর্ষ নেতাদের অস্ত্র আইন কড়াকড়ির পক্ষে প্রকাশ্যে কথা বলতেও শোনা গেছে।
অন্যদিকে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের রিপাবলিকান পার্টি অস্ত্র আইন কড়াকড়ির বিপক্ষে। তারা এ বিষয়ে প্রায় সময় চুপ থাকেন। বরং মাঝেমধ্যে তারা অস্ত্র সহজ করার পক্ষে কথা বলেন।
কিন্তু তৃতীয় মত হলো, সারা বিশ্বের মতো যুক্তরাষ্ট্রেও অস্ত্র ব্যবসা অত্যন্ত লাভজনক। যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র ব্যবসায়ীদের লবি অত্যন্ত শক্তিশালী। ডেমোক্র্যাটিক ও রিপাবলিকান উভয় পার্টির মধ্যে অস্ত্র ব্যবসায়ীদের বিশাল প্রভাব রয়েছে। তাই কোনো পার্টির শীর্ষ নেতারা চাইলেও সহজে অস্ত্র আইন কড়াকড়ি করা যাচ্ছে না।
এ অবস্থায় চাপ বাড়া সত্ত্বেও ব্যবসায়ীদের পাশ কেটে দেশটিতে অস্ত্র আইন সংস্কার করা যাচ্ছে না। সূত্র: সিবিএস নিউজ, এবিসি নিউজ