পার্টি চেয়ারম্যান ও মন্ত্রীর কাণ্ডে চাপের মুখে ঋষি সুনাক
ব্রিটেনের কনজারভেটিভ পার্টির চেয়ারম্যান নাদিম জাহাভি এইচএম রেভিনিউ অ্যান্ড কাস্টমস (এইচএমআরসি) এর সঙ্গে তার ট্যাক্স বিরোধসংক্রান্ত বিতর্কের কারণে পদত্যাগ করার জন্য তার দলের সহকর্মীদের ক্রমবর্ধমান চাপের সম্মুখীন হচ্ছেন। বিষয়টি নিয়ে বুধবার পার্লামেন্টে বিরোধীদের ব্যাপক তোপের মুখে পড়েন সুনাক।
এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী বাধ্য হন পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে বিরোধীদের আক্রমণের জবাব দিতে এবং আত্মপক্ষ সমর্থন করতে। অন্যদিকে, তার মন্ত্রিসভার জলবায়ুবিষয়ক মন্ত্রীর ডোনেশন কেলেঙ্কারির কারণেও বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছেন সুনাক। বিরোধী পক্ষ বলছে, অভিযোগ ওঠার পরপরই সুনাকের উচিত পদত্যাগ করা।
বুধবার ব্রিটিশ পার্লামেন্টে লেবার নেতা কিয়ার স্টারমাক উঠে দাঁড়িয়েই কঠোর ভাষায় সুনাকের সরকারকে আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, একের পর এক কেলেঙ্কারি সহ্য করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। এতে ব্রিটেনের গণতন্ত্রকে অসম্মান করা হচ্ছে। তিনি পার্টি চেয়ারম্যানের কেলেঙ্কারি সত্ত্বেও তাকে বরখাস্ত করছেন না। এতে প্রমাণিত হয় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সুনাক ‘হতাশাজনকভাবে দুর্বল’। এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী সুনাক বলেন, বিরোধী পক্ষ অন্যায়ভাবে সরকারের সমালোচনা করছে। তিনি তার একজন উপদেষ্টাকে জাহাভির ট্যাক্স বিষয়ক কেলেঙ্কারি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন বলে জানান।
তবে তিনি এটাও বলেন, যে জাহাভি ট্যাক্স বিষয়ক বিতর্কে জড়িয়েছিলেন তিনি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে। তাই তাকে এখানে দোষারোপ করা অন্যায়। তবে জাহাভি বলেছেন যে এইচএমআরসির সঙ্গে তিনি ট্যাক্স বিষয়ক বিরোধ নিষ্পত্তি করেছেন। তিনি প্রতিষ্ঠানটিকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছেন যে তার বিরুদ্ধে ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়ার যে অভিযোগ উঠেছে সেটি আসলে অনিচ্ছাকৃত। এটি যে ইচ্ছাকৃতভাবে হয়নি সেটি ট্যাক্স কর্তৃপক্ষ মেনে নিয়েছে। এ সম্পর্কিত কাগজপত্র তিনি জাতির সামনে তুলে ধরতে প্রস্তুত বলে উল্লেখ করেছেন।
এদিকে, ঋষি সুনাক বলেছেন, জাহাভির বিষয়টি নিয়ে এমন সব প্রশ্ন রয়েছে যেগুলোর জবাব প্রয়োজন। এ কারণে তিনি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। জাহাভি অর্থমন্ত্রী থাকার সময় অপরিশোধিত করের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জরিমানা দিয়েছেন এ তথ্য প্রকাশের পর দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা নিয়ে প্রশ্ন তোলে সমালোচকরা। ঋষি সুনাক বলছেন, সততা এবং জবাবদিহিতা আমার কাছে সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ। জাহাভির বিষয়টি সঠিক তদন্ত হবে।
মন্ত্রীকে নিয়ে বিপাকে : অপরদিকে, ঋষি সুনাকের মন্ত্রিসভার জলবায়ু বিষয়ক মন্ত্রী গ্রাহাম স্টুয়ার্ট একটি প্রচারাভিযানে অনুদান পেয়েছেন, এমন বিষয় সামনে আসার পর আবার চাপে পড়েছেন সুনাক। স্টুয়ার্ট একজন এভিয়েশন কনসালট্যান্ট এবং রিক্রুটারের কাছ থেকেও অনুদান পেয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে স্টুয়ার্ট দাবি করেছেন, তিনি বেআইনিভাবে কিছু করেননি। তিনি পার্লামেন্টে পুরো বিষয়টি ব্যাখ্যা দিবেন বলে মন্তব্য করেছেন।