জুমাতুল বিদা আজ

  নিউজ ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ রাত ১২:০০, শুক্রবার, ৫ এপ্রিল, ২০২৪, ২২ চৈত্র ১৪৩১

‘জুমুআ’ আরবি শব্দের অর্থ শুক্রবার আর ‘বিদা’ অর্থ শেষ। জুমাতুল বিদা অর্থ শেষ শুক্রবার। মাহে রমজানের শেষ জুমার দিনটি আমাদের সমাজে জুম’আতুল বিদা নামে পরিচিত। যদিও পরিভাষাটি কোরআন বা হাদিসের প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষ কোনো বর্ণনায় পাওয়া যায় না। তারপরও মোবারক মাস রমজানের শেষ জুমার দিন হিসেবে এর গুরুত্ব কম নয়। রমজান আর জুমা একত্রে মিলিত হয়ে দিনটিকে করে তুলেছে সীমাহীন মহিমাময়।

রমজানের ২৫তম দিন আজ। বিদায়লগ্নে দাঁড়িয়ে বরকতময় রোজার পুণ্যময় আবহ। বিদায় মুহূর্তে আত্মজিজ্ঞাসা- আমরা কতটা পেরেছি রাব্বুল আলামিনের কাছ থেকে নিজেদের পাপ আর ত্রুটি মাফ করিয়ে নিতে? আজ শুক্রবার। দেখতে দেখতে মাহে রমজানের শেষ জুমা চলে এলো।

জুমাতুল বিদা কী এবং এর গুরুত্ব ও ফজিলত নিয়ে এখানে কিছু আলোকপাত করা হলো- ‘জুমুআ’ আরবি শব্দের অর্থ শুক্রবার আর ‘বিদা’ অর্থ শেষ। জুমাতুল বিদা অর্থ শেষ শুক্রবার। মাহে রমজানের শেষ জুমার দিনটি আমাদের সমাজে জুম’আতুল বিদা নামে পরিচিত। যদিও পরিভাষাটি কোরআন বা হাদিসের প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষ কোনো বর্ণনায় পাওয়া যায় না। তারপরও মোবারক মাস রমজানের শেষ জুমার দিন হিসেবে এর গুরুত্ব কম নয়। রমজান আর জুমা একত্রে মিলিত হয়ে দিনটিকে করে তুলেছে সীমাহীন মহিমাময়।

দুটি কারণে জুমাতুল বিদা অত্যন্ত মহিমাময়। ১. মাহে রমজানের কারণে- রমজান মাস সীমাহীন ফজিলতের মাস এবং এটি উম্মতে মোহাম্মদীর জন্য মহান আল্লাহর বিশেষ উপহারস্বরূপ। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত এক হাদিসে নবী (সা.) বলেছেন, নিশ্চয়ই তোমাদের রব বলেছেন, বনি আদমের প্রত্যেকটি নেক আমলের সওয়াব ১০ থেকে ৭০০ গুণ পর্যন্ত দেওয়া হয় শুধু রোজা ছাড়া। কেননা রোজা শুধুই আমার জন্য আর আমি নিজেই এর প্রতিদান দেব।

আর নিশ্চয়ই রোজাদারের মুখের গন্ধ আল্লাহর কাছে মেশক আম্বারের চেয়েও বেশি প্রিয়। তোমাদের কারো রোজা থাকা অবস্থায় যদি কেউ তার সঙ্গে জাহেলের মতো আচরণ করে, তাহলে সে বলে দেবে, আমি একজন রোজাদার। (বোখারি : ৫৯২৭; মুসলিম : ১১৫১, মুসান্নেফে ইবনে আবি শাইবা : ৮৮৯৪; মুসনাদে আহমাদ : ৯৭১৪)। আর জুমার দিনের মাহাত্ম্য সম্পর্কে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণিত এক হাদিসে নবী (সা.) বলেছেন, সূর্যোদয়ের মাধ্যমে যেদিনগুলো হয়, তার মধ্যে সর্বোত্তম দিন হলো জুমার দিন। এদিনে হজরত আদমকে (আ.) সৃষ্টি করা হয়েছিল এবং এদিনেই তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছিল এবং এদিনেই তাকে পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছিল। আর এদিনের মধ্যে এমন একটি সময় আছে, যখন কোনো মুসলমান নামাজরত অবস্থায় দোয়া করলে অবশ্যই তার দোয়া কবুল করা হয়। (সুনানে তিরমিজি : ৪৯১)। রমজান মাসে রোজা অবস্থায় জুমার দিনের নিশ্চিত দোয়া কবুলের শেষ সুযোগ হিসেবে জুম’আতুল বিদা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

জুমার দিনের কিছু সুন্নত আমল রয়েছে। যেমন ১. সাবান দিয়ে ভালো করে গোসল করতে হবে, ২. নতুন বা উত্তম পোশাক পরতে হবে, ৩. আতর তথা সুগন্ধি ব্যবহার করতে হবে, ৪. হেঁটে মসজিদে যেতে হবে, ৫. আগে আগে মসজিদে প্রবেশ করতে হবে, ৬. ইমামের কাছাকাছি জায়গায় বসতে হবে, ৭. ইমামের খোতবা মনোযোগ সহকারে শুনতে হবে, ৮. বেশি বেশি দরুদ শরিফ পাঠ করতে হবে, ৯. কাউকে কষ্ট দেওয়া যাবে না, কোনো অনর্থক কাজ করা যাবে না। হজরত আওস ইবনে আওস আস-সাকাফি (রা.) থেকে একটি হাদিস বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন, আমি নবীকে (সা.) বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি জুমার দিনে ভালো করে গোসল করবে এবং আগে আগে হেঁটে মসজিদে যাবে এবং ইমামের কাছাকাছি বসে খোতবা মনোযোগ সহকারে শুনবে আর কোনোরকম অনর্থক কাজ করবে না, তাকে তার প্রতিটি কদমের বিনিময়ে লাগাতার এক বছর নামাজ ও রোজার সওয়াব দান করা হবে। (ইবনে মাজা : ১০৮৭; আবু দাউদ : ৩৪৫; মুসনাদে আহমাদ : ১৬১৭৬)। মহান আল্লাহ আমাদের জুম’আতুল বিদার গুরুত্ব ও ফজিলত বোঝার তাওফিক দান করুন। আমিন।

Share This Article