নতুন দুর্যোগ সিংকহোল

মুহূর্তেই বিলীন হতে পারে ঢাকা!

  বাংলাদেশের কথা ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ সন্ধ্যা ০৭:১০, বৃহস্পতিবার, ২ ডিসেম্বর, ২০২১, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪২৮
তুরস্কের একটি সিংকহোল। এমন শত শত গর্ত এখন তুরস্ক জুড়ে
তুরস্কের একটি সিংকহোল। এমন শত শত গর্ত এখন তুরস্ক জুড়ে

ধরুন আপনি রাস্তায় হাটছেন বা গাড়ি চালাচ্ছেন,  হঠাৎ করেই রাস্তা ১৫/২০ ফুট দেবে গেল। অথবা আপনার পুরো একটি ভবন বা অফিস চলে গেল ভূ গর্ভে। এক মুহূর্তেই কি আপনি নিঃস্ব হয়ে যাবেন না?

 

এবার ধরুন,  এ গর্তগুলোর আকার বিশাল বড় । ১০০ ফিট থেকে শুরু করে কয়েক কিলোমিটার লম্বা। গভীরতা হতে পারে ৩ তলা বা ৫ তলা ভবনের সমান। তাহলে ক্ষতির পরিমাণ কতটা বাড়বে! আমাদের প্রিয় এই শহরকে থমকে দিতে এমন দু তিনটা গর্ত বা  সিংকহোলই যথেষ্ট। সম্প্রতি এমন আশঙ্কার কথাই প্রকাশ করছেন ভুতত্ববিদরা।

ইউটিউব ঘাটলে এমন সিংকহোলের ভিডিও আপনি হর হামেশাই দেখতে পাবেন, যেখানে বহু বাড়ি-গাড়ি রাস্তাসহ হঠাৎ করেই মাটিতে দেবে যাচ্ছে।

ইতিমধ্যেই এই দুর্যোগটি বাংলাদেশেও হানা দিয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জে, দিনাজপুরসহ বেশ কিছু জেলায় এই দেবে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে । আতঙ্কে রয়েছেন সেসব এলাকার মানুষ।

তবে ভূতত্ত্ববিদরা বলছেন দুর্যোগটি হানা দিয়েছে বললে ভুল হবে, বারং মানুষই এই দুর্যোগকে ডেকে এনেছে। 
শুধু বাংলাদেশ নয়, তুরস্ক, ইরান, ইসরায়েল ও ভারত সহ বহু দেশে এসব সিংকহোল সৃষ্টি হচ্ছে। ইউরোপ আমেরিকাতেও  হচ্ছে  সিংকহোল। তুরস্কে এই সিংকহোলের সংখ্যা ৬০০ ছাড়িয়ে গেছে। দৈত্যাকার গর্ত গুলো গিলে খাচ্ছে তুরস্কের কৃষি জমি। দেশটির আয়তন বড় বলে বেশিরভাগ গর্তই সৃষ্টি হচ্ছে মরুভূমিতে।

দৈত্যাকার গর্ত গুলো তৈরি হয় কেন?

মূলত সেচ বা অন্যান্য কাজে  ভূ-গর্ভের পানি উত্তোলনের ফলে মাটির গভীরে শূণ্যতার সৃষ্টি হয় এবং মাটি ধসে বড় গর্ত সৃষ্টি হয়। তাই সিংকহোলকে বলা হচ্ছে মানুষের সৃষ্টি দুর্যোগ। সেচের জন্য ভূ-গর্ভস্থ পানি ব্যবহারই এর প্রধান কারণ। তাই সেচের জন্য বিকল্প  পানির ব্যবস্থা না করলে রোধ করা যাবে না এই দুর্যোগকে।  

তুরস্ককে গত ১০-১৫ বছর ধরে গমের আবাদের জন্য ভূগর্ভস্থ পানির উপরেই নির্ভর করতে হচ্ছে । খরা বৃদ্ধির কারণে  আগের চেয়ে কয়েক গুণ সেচ দিতে হচ্ছে। কোটি কোটি লিটার পানি উত্তোলনের ফলে পানির স্তর নিচে নেমে তৈরি হচ্ছে দানবাকার গর্তগুলো।

বাংলাদেশে শত শত নদী থাকলেও দেশের উত্তরাঞ্চলের অনেক এলাকা খরাপ্রবণ। সেসব এলাকার কৃষকরা ভূ-গর্ভস্থ পানির ওপরই নির্ভরশীল। এছাড়া  অজ্ঞতার কারণেও অনেকে অনুমোদনহীনভাবে ভূ-গর্ভের পানি উত্তোলন করে থাকেন, যেটি বাংলাদেশের বিপদের কারণ হতে পারে।  

বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক সিংকহোল মিসরের কায়রোতে; যা ১৩৩ মিটার গভীর আর ৮০ কিলোমিটার লম্বা এবং ১২০ কিলোমিটার প্রশস্ত। এমন একটা সিংকহোল  ৪/৫ টি ঢাকা শহরকে অনায়াসে গিলে খেতে পারে। আর আমরা প্রতিনিয়ত সেই গর্ত সৃষ্টির কাজটি করে চলেছি ধীরে ধীরে।

Share This Article