শেখ হাসিনার নতুন কূটনীতি: সাফল্য আসবে কি?

- শেখ হাসিনার নিউ ডিপ্লোমেসি
- সরাসরি আমেরিকার সমালোচনা
- প্রতিবেশি ভারত ও একাত্তরের বন্ধুদের সাথে সুসম্পর্ক
- চীনের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক ও মধ্যপ্রাচ্যমুখী কূটনীতি
গত এক যুগের বেশি সময় ধরে আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে নতুন মেরুকরণ তৈরি করেছে বাংলাদেশ। মৌলিক নীতির বাইরে গিয়ে নতুন এক কূটনৈতিক আবহ তৈরি করার চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। এই প্রচেষ্টা ক্রমশ দৃশ্যমান হচ্ছে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে।
চলুন দেখে নিই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিউ ডিপ্লোমেসির বৈশিষ্ট্যগুলো:
বিশ্বের ছড়ি ঘোরানো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি সমালোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, এমনকি বিবিসির সাথে সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হয়তো তাকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না। এজন্যই তারা স্যাংশন দিয়েছে। যে সমস্ত দেশ স্যাংশন জারি করে সেসব দেশের পণ্য না কেনার ঘোষণাও দেন তিনি।
যেকোনো পরিস্থিতির মধ্যে বৃহৎ প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক অব্যাহত রাখছে বাংলাদেশ। শেখ হাসিনার কূটনীতির একটা বড় দিক হলো ভারতের সাথে স্থিতিশীল রাখা।এই অবস্থান পরিবর্তন করতে তিনি আগ্রহী নন এবং এটা তাঁর কূটনৈতিক কৌশলের একটি শক্তি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর প্রধানমন্ত্রী রাশিয়ার সাথে সম্পর্ক ত্যাগ করেননি। বরং একাত্তরের বন্ধুর সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে গেছেন। এখনো রাশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক-অর্থনৈতিক সম্পর্ক অব্যাহত রয়েছে। মার্কিন চাপেও তিনি সেই সম্পর্ক নষ্ট করেননি।
একদিকে ভারতের সাথে রাজনৈতিক ও প্রতিবেশী সম্পর্ক অব্যাহত রেখে অন্যদিকে ভারতের শত্রু দেশ চীনের সঙ্গেও একটি অর্থনৈতিক সম্পর্ক অব্যাহত রাখার নীতি গ্রহণ করেছেন শেখ হাসিনা। চীন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রধান অংশীদার। বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ককে কোনো অবস্থাতেই তিনি ঝুঁকিতে ফেলেননি।
সাম্প্রতিক সময়ে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন শেখ হাসিনা। গত কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের একাধিক নেতা বাংলাদেশ সফরে এসেছেন, প্রধানমন্ত্রীও গেছেন। সামনের দিনগুলোতে তেল সংকট ও জনশক্তি রপ্তানিসহ অন্যান্য অর্থনৈতিক সম্পর্কগুলোকে প্রধানমন্ত্রী আরও শক্ত করতে চান। আর এ কারণেই তিনি মধ্যপ্রাচ্যমুখী কূটনীতি গ্রহণ করেছেন।
শেখ হাসিনার নিউ ডিপ্লোমেসির প্রশংসা করছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী সরাসরি অবস্থান নিয়ে শেখ হাসিনা বিশ্ব রাজনীতির ধারা পাল্টে দিচ্ছেন। বিশ্ব যখন নানা মেরুকরণে বিভক্ত হয়ে পড়েছে সে সময় শেখ হাসিনা কূটনৈতিক কৌশলের ক্ষেত্রে একটা ঝুঁকি নিয়েছেন, যা পচাঁত্তর পরবর্তী কোন সরকার করতে সাহস পাননি।