গণপরিবহনে নতুন ব্যবস্থা কতটা কার্যকর হবে?

গণপরিবহনের ড্রাইভার-হেলপারদের প্রতিদিন হিসেব নিয়ে বসতে হয় আজকে কত টাকা আয় হলো। প্রতিদিন যা আয় হয় সেখান থেকে মালিকের টাকা, জ্বালানি, পথের চাঁদা ও আনুসাঙ্গিক খরচের পর যা অবশিষ্ট থাকে সেটা ড্রাইভার ও হেলপাররা যোগ্যতা অনুযায়ী ভাগ করে নেয়।
যেদিন বেশি যাত্রী পরিবহন করতে পারে সেদিন পকেটে কিছু বেশি টাকা আসে। আর এ কারণেই মূলত ড্রাইভাররা রাজপথে প্রতিযোগিতায় নামে।
বিগত কয়েক বছর ড্রাইভারদের প্রতিযোগিতায় প্রাণ হারিয়েছে বহু পথচারী, রাজপথে আন্দোলন হয়েছে। সরকার ও পরিবহণ মালিক শ্রমিকরা আলোচনায় বসেছে।
পরিবহণ বিশেষজ্ঞরা সবসময়ই বলে আসছেন ড্রাইভারদের প্রতিযোগিতা বন্ধ করতে হলে তাদের দৈনিক বেতন নির্ধারণ করতে হবে, যেন বাড়তি আয়ের জন্য তারা প্রতিযোগিতা না করে।
সরকার পক্ষের বহু চাপাচাপির পর তারা এতে সম্মত হয়েছে। তবে সেটি বাস্তবায়নের নামে অন্য একটি নিয়ম চালু করে বাস মালিকরা।
বলা হয় দৈনিক ট্রিপ যাদের বেশি হবে তারা বেশি টাকা পাবে। এতে সেই আগের প্রতিযোগিতাই রয়ে যায়। অব্যহত বেপরোয়া গাড়ি চালানো। দুর্ঘটনা হতেই থাকে।
এই সমস্যা থেকে উত্তোরণের জন্য ২৬ ডিসেম্বর বাসরুট রেশনালাইজেশনের আওতায় দেশে প্রথমবারের মতো রাজধানীর ঘাটার চর থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত এই ২১ কিলোমিটার পথে পাইলট প্রকল্প চালু করা হয়েছে।
এই রুটের গাড়িগুলোকে সব নিয়মকানুন মেনে চলতে হবে। রুটের প্রতিটি বাসের কাগজপত্র ঠিক থাকবে। ড্রাইভারের লাইসেন্স থাকবে। প্রতিটি হেলপারের নির্ধারিত পোশাক থাকবে। বাস নির্দিষ্ট স্থানে থামবে। এই রুটে প্রতি কিলোমিটারের ভাড়া হবে দুই টাকা ১৫ পয়সা আর সর্বনিম্ন ভাড়া হবে ১০ টাকা।
নগর বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাসরুট রেশনালাইজেশন পাইলট প্রকল্পে এমন নিয়ম করা হয়েছে যাতে ড্রাইভারদের প্রতিযোগিতা বন্ধ হয় ও যাত্রীদের ভোগান্তি দূর হয়। এটি সফলভাবে বাস্তবায়ন হলে এবং এটি ধীরে ধীরে পুরো প্রয়োগ করা হলে গণপরিবহনে জনগণের ভোগান্তি অনেকটাই কমে আসবে।