প্রধানমন্ত্রীর সুনজরে বিকল্প বাজারে পোশাক শিল্পে অভাবনীয় সাফল্য!

  নিউজ ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ বিকাল ০৪:০২, শনিবার, ২ মার্চ, ২০২৪, ১৭ ফাল্গুন ১৪৩০

রফতানির দিক থেকে শীর্ষে রয়েছে জাপান-অস্ট্রেলিয়া আর দক্ষিণ কোরিয়া। তবে সাম্প্রতিক বছরে ডলারের অংকে সবচেয়ে বেশি আয় হয়েছে জাপান থেকে। দেড় দশক আগে মিলিয়ন আয় থাকলেও ২০২৩ সালে পৌঁছেছে বিলিয়ন ডলারের ঘরে।

দেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি পোশাক শিল্প। প্রতি বছরই রফতানি আয়ে সাফল্য এনে দেয় এ খাত। চলতি অর্থবছরেও ধরে রেখেছে সেই সফলতা। তবে এবার বাংলাদেশের তৈরি পোশাক সবচেয়ে বেশি রফতানি হয়েছে বিকল্প কিংবা অপ্রচলিত বাজারে। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে কিছুটা কমলেও ইতিবাচক ধারা ছিল ইউরোপের কয়েকটি দেশে। আর পোশাক শিল্পের এমন অর্জনের পেছনের নায়ক ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এমনটিই বলছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।

তথ্যমতে, একসময় পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার ছিল যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু বিশ্বজুড়ে চলমান অর্থনৈতিক সংকটে নিজেদের চাহিদা কমিয়ে দিতে থাকেন মার্কিনিরা। এমন পরিস্থিতিতে পোশাক শিল্প মালিকদের বিকল্প বাজার খোঁজার জোর তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন দেশ সফর বা আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যেয়ে তিনি নিজেও দ্বিপাক্ষিক বৈঠকগুলোতে বাংলাদেশের পোশাক রফতানি বিষয়ে গুরুত্বসহকারে কথা বলেছেন। ইতিমধ্যে যার ফল পেতে শুরু করেছে বাংলাদেশ। সৃষ্টি হয়েছে নতুন বাজারও।

এসব নতুন বাজারে ভর করেই আগের তুলনায় এ খাত থেকে রফতানি আয় বেড়েছে কয়েক গুণ। একদশক আগে আমেরিকার বাইরে পোশাক রফতানি মোট আয়ের ১৪ দশমিক ৭৯ শতাংশ থাকলেও ২০২৩ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১৮ দশমিক ৭২ শতাংশে। একই সঙ্গে সম্ভাব্য উৎপাদক হিসেবে বাংলাদেশকে পাশে রাখার কথা ভাবছে নতুন কিছু দেশও।

রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৩-২৪ জুলাই-জানুয়ারি সময়ে ইউরোপের বাজারে ১৩ দশমিক ৯২ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ২ শতাংশ বেশি। এছাড়া আমেরিকার বাজারে রফতানি কিছুটা কমতেই অপ্রচলিত বাজার হিসেবে পরিচিত নতুন কিছু দেশ থেকেও ইতিবাচক সাড়া মেলে।

এই তালিকায় রফতানির দিক থেকে শীর্ষে রয়েছে জাপান-অস্ট্রেলিয়া আর দক্ষিণ কোরিয়া। তবে সাম্প্রতিক বছরে ডলারের অংকে সবচেয়ে বেশি আয় হয়েছে জাপান থেকে। দেড় দশক আগে মিলিয়ন আয় থাকলেও ২০২৩ সালে পৌঁছেছে বিলিয়ন ডলারের ঘরে।

খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাধারণত যেকোনো উৎসবে পোশাকের বাজার জমজমাট থাকে। যেমন মুসলিম অধ্যুষিত দেশ থেকে ঈদকেন্দ্রিক অর্ডার আসে সবচেয়ে বেশি। আর ইউরোপ-আমেরিকার মতো দেশগুলোতে পোশাকের চাহিদা বাড়ে বড়দিন বা ২৫ ডিসেম্বর ঘিরে। সেই হিসাবে এখন ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাস চলায় চাহিদা কিছুটা কম। তবে মূল রফতানি আয়ের পরিসংখ্যানে এই ছন্দপতন তেমন প্রভাব ফেলবে না। কেননা এ খাতে প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি থাকায় দিনকে দিন নতুন নতুন বাজার পাচ্ছে বাংলাদেশ।

এ প্রসঙ্গে গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ-সিপিডির পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘বাংলাদেশের তৈরি পোশাক নিতে বিশ্বের অনেক দেশেরই আগ্রহ রয়েছে। এজন্য পণ্য তৈরিতে গার্মেন্টস মালিকদের বৈচিত্র্য আনতে হবে। আর এ বিষয়ে বেশ জোরের সঙ্গেই খাত সংশ্লিষ্টদের তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী। কেননা দেশভেদে মানুষের আকার-সংস্কৃতির ভিন্নতা রয়েছে। এসব কিছু করতে পারলে বিকল্প বাজার আরও বাড়বে।’

বিশ্লেষকরা বলছেন, পোশাক শিল্পের উন্নয়নে সব ধরনের সহযোগিতা দিচ্ছে সরকার। কর্মীদের সক্ষমতা বাড়াতে দেয়া হচ্ছে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ। এমনকি খাত সংশ্লিষ্টদের দিকনির্দেশনার পাশাপাশি বিশেষ নজর রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারও। আর এসব কারণেই বিশ্ব বাণিজ্যে দক্ষতার সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

বিষয়ঃ বাংলাদেশ

Share This Article