গ্রীষ্মে বাড়তি চাহিদা মোকাবেলায় প্রস্তুত বিদ্যুত কেন্দ্রগুলো!
গেলো বছরের গ্রীষ্মে বিদ্যুত কেন্দ্রের জ্বালানী সংকটের কারণে তীব্র লোডশেডিংয়ের কবলে পড়ে দেশের মানুষ। তবে এবার গ্রীষ্মের তাপদাহ, রোজা ও কৃষি সেচের বাড়তি চাহিদা মোকাবেলায় প্রস্তুত বিদ্যুত কেন্দ্রগুলো। পাওয়া গেছে জ্বালানী সরবরাহের নিশ্চয়তা। তাই এবার রোজার মাস ও গ্রীষ্মে বিদ্যুতের বড় ধরনের ঘাটতি হবে না বলে জানিয়েছেন পাওয়ার সেলের মহা পরিচালক মোহাম্মাদ হোসাইন।
পাওয়ার সেলের মহা পরিচালক মোহাম্মাদ হোসাইন বলেন, গ্রীষ্মের তাপদাহ, রোজা ও কৃষি সেচের জন্য এবার মহাপরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। গ্যাস ও ফার্নেস তেলের বিদ্যুত কেন্দ্রগুলো শীতকালীন রক্ষনাবেক্ষন শেষে এখন প্রস্তুত। একই সাথে কয়লা ভিত্তিক দুটি নতুন বড় বিদ্যুত কেন্দ্র চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। যোগ হবে আদানী পাওয়ার থেকে আমদানি করা বিদ্যুত।
গ্রীষ্মে বিদ্যুতের চাহিদা ১৬ হাজার মেগাওয়াট ধরে প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। গ্যাস থেকে ১৩ শত এমএমসিএফডি, কয়লা থেকে আড়াই হাজার থেকে-তিন হাজার মেগাওয়াট বাকিটা লিকুইড এবং ফার্নেস তেল থেকে পাওয়া যাবে। তবে ডিজেলে আমাদের হাত দেওয়ার কোনো প্রয়োজন হবে না। এরমধ্যে আদানি এবং এস আলম থেকে বিদ্যুত আসলে সেটা বাড়তি পাওনা হবে বলেও জানান মহা পরিচালক।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এখন প্রতিদিন ৪৫০ থেকে ৪৮০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজিকে গ্যাসে রূপান্তর করে সরবরাহ করা হচ্ছে। এই সরবরাহ যদি প্রতিদিন আরও ৪০০ মিলিয়ন ঘনফুট বৃদ্ধি করা যায় সেক্ষেত্রে বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাস সরবরাহ অন্তত ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট বৃদ্ধি করা সম্ভব। প্রতি ১০০ মেগাওয়াট কমবাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্রর ২৪ ঘণ্টার জন্য ২০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের প্রয়োজন হয়। সেই হিসিবে ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট অতিরিক্ত গ্যাস সরবরাহ করলে প্রতিদিন আরও ১৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব। এর বাইরে কয়লা চালিত দুটি কেন্দ্র থেকে (পায়রা এবং রামপাল) ১৭৪৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। এরমধ্যে পায়রা থেকে ১২৪৪ মেগাওয়াট আর রামপাল থেকে কমপক্ষে ৫০০ মেগাওয়াট করে বিদ্যুৎ পাওয়া সম্ভব। এছাড়াও মার্চ থেকে আদানির বিদ্যুৎ আসার কথা। কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট থেকে ৭৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে।
এদিকে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি নিয়ে বাংলাদেশের সাথে যে জটিলতা ছিলো তার সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ভারতের আদানি পাওয়ার। তারা বলেছে, বাংলাদেশে বর্তমানে অন্যান্য কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে যে দামে কয়লা আমদানি করা হয়, আদানিও একই দামে আমদানি করবে। অর্থাৎ রামপাল ও পায়রার মতো একই দামে বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে আদানি। ২৩ ফেব্রুয়ারি আদানি পাওয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) কর্মকর্তা এবং বিদ্যুৎ–সচিব হাবিবুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ সিদ্ধান্ত জানান।