যে অভিনেতাকে কালো পোশাক পড়তে নিষেধ করা হয়েছিলো
![যে অভিনেতাকে কালো পোশাক পড়তে নিষেধ করা হয়েছিলো দেব আনন্দ](/Uploads/Images/News/2021/12/Image-368-20211203113329.jpeg)
বিনোদন ডেস্ক:
ভারতের রূপালি পর্দার চিরসবুজ নায়ক বলা হয় বলিউড কিংবদন্তি দেব আনন্দকে। অদ্ভুত এক সমস্যায় পড়েছিলেন তিনিও। কালো রঙের পোশাক পরতে তার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন আদালত।
এর কারণে কালো পোশাকে নাকি অসম্ভব সুদর্শন লাগত এই বলিউড হিরোকে। বিষয়টি মোহিত করে তুলত তার নারীভক্তদের।
সে সময়ের বম্বের আদালত দেব আনন্দকে কড়া নির্দেশ দেন, আর যা-ই পরুন তিনি যেন কালো পোশাক পরে রাস্তায় না নামেন। আর সেই ঘটনার পর থেকে এ ফিল্মস্টারকে ‘গ্রেগরি পেক অব ইন্ডিয়া’ বলা হয়।
বিষয়টিকে খ্যাতির বিড়ম্বনা বলেন অনেকে। দেব আনন্দের ছবি ‘কালাপানি’ মুক্তির পর অভিনেতার জনপ্রিয়তা এমনই তুঙ্গে পৌঁছেছিল যে, নায়কের ব্যক্তিগত জীবন যাপনেও হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হয়েছিলেন আইনের রক্ষকরা। এমন ঘটনা বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে নজিরবিহীন।
মেগাস্টার অমিতাভ বচ্চনও কল্পনা করতে পারবেন না । খ্যাতির বিড়ম্বনা সামাল দিতে পরিধান বদলাতে হয়নি অমিতাভ, রাজেশ খান্না বা এই সময়ের শাহরুখ-সালমানদের।
অথচ ফিলমি পরিবারের সন্তান না হয়েও এতো বড় তারকা হতে পেরেছিলেন দেব আনন্দ।
সিনেমায় আসার আগে তার নাম ছিল ধরমদেব পিশোরিমল আনন্দ। সে নাম সব সময়ই ছিল। কিন্তু দেব আনন্দের বিশাল ছায়ায় তা ঢেকে গেছে।
এ নায়কের বাবা ও বড় ভাই ছিলেন জাঁদরেল আইনজীবী। কলেজে পড়া অবস্থায় অশোক কুমারের একটি সিনেমা দেখে অভিনয়ের ভূত চাপে মাথায় তার।
গুরদাসপুর ছেড়ে মুম্বাই তথা তৎকালীন বম্বেতে পা রাখেন দেব। শুরু হয় লড়াই। পরিচালকের দরজায় গিয়ে কড়া নাড়া। ছবিতে কাজের সুযোগ চাওয়া।
মুম্বাইয়ে টিকে থাকতে উপার্জনের জন্য মিলিটারি পোস্টাল সার্ভিসে মাসে ৪৫ টাকা বেতনের চাকরি নেন। পাশাপাশি একটি থিয়েটারের দলেও নাম লেখান। আর ওই থিয়েটারই তার ভাগ্য খুলে দেয়।
সেখানে দেবের অভিনয় দেখে মুগ্ধ হন পরিচালক বাবু রাও পাই। যদিও দেব আনন্দের অভিনয়ের থেকে বেশি তার হাসি দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন বাবু রাও।
তিনি বলেছিলেন, ওই হাসি দেখতেই দর্শক হলে আসবে। মাসে ৪০০ টাকার চুক্তিতে তাকে তিন বছরের জন্য চুক্তিবদ্ধ করেন বাবু রাও। প্রথম ছবির কাজও শুরু করেন— ‘হাম এক হ্যায়’।
এরপর সিনেপ্রেমীদের উপহার দিতে থাকেন একের পর এক হিট ছবি। অভিনেত্রী সুরাইয়ার সঙ্গে জুটি বেঁধে করেন ‘বিদ্যা’, ‘আফসর’, ‘জিৎ’ ও ‘নীলি’ ছবি। সবই সুপারহিট হয়।
১৯৭০-এ দেব আনন্দের বয়স যখন প্রায় ৫০ তখনও তার ছবি ‘জনি মেরা নাম’ সুপারহিট। তার আগের কয়েক বছরে ‘জুয়েল থিফ’, ‘গাইড’-এর মতো ছবিও হিট করেছ। পরের বছর ১৯৭১-এ সুপারহিট হয় ‘হরে কৃষ্ণ হরে রাম’ ছবিটি।
ভারতীয় সিনেমায় রোম্যান্টিক নায়কের ক্ষেত্রে দেব আনন্দ নিজেই একটি প্রতিষ্ঠান। সবমিলিয়ে ১১৫টি ছবিতে অভিনয় করেছেন দেব আনন্দ। যেখানে দিলীপ কুমার অভিনয় করেছেন ৪৮টিতে।
চিরসবুজ দেব আনন্দ ৮৮ বছর বয়সে ২০১১ সালের ৩ ডিসেম্বর না ফেরার দেশে পাড়ি জমান।