ত্বক সমস্যা সমাধানে যা করবেন

  বাংলাদেশের কথা ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ দুপুর ১২:২৮, শনিবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২১, ৩ পৌষ ১৪২৮

অধ্যাপক ডা. রাশেদ মোহাম্মদ খান:
মানুষের শরীরের সব থেকে বড় অঙ্গ ত্বক। বাইরে থেকে বিভিন্ন রোগের প্রাথমিক সব ঝড়ঝাঁপটা সামলাতে হয় এটিকে। শীতকালে এক দিকে শুকনো আবহাওয়া অন্য দিকে উল ও নানা সিন্থেটিক ফাইবার দিয়ে তৈরি পোশাকের সংস্পর্শে ত্বকের অসুখ-বিসুখের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এ সময় বাতাস কিছুটা শুকনো থাকে বলে ত্বক শুকিয়ে নানা সমস্যার ঝুঁকি বাড়ায় ও বাতাসে আর্দ্রতা কম থাকে বলে জীবাণু একজন থেকে অন্যজনের শরীরে সহজে ছড়িয়ে পড়ে। ত্বকের বিভিন্ন রোগের সমস্যা, সমাধান ও ত্বকের যত্ন নিয়ে লিখেছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চর্ম ও যৌন রোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. রাশেদ মোহাম্মদ খান

শীতকাল চলছে। এসময় আমাদের শরীরের ত্বক শুকিয়ে নানাবিধ সমস্যার সৃষ্টি হয়। যাদের অ্যালার্জি ও অ্যাটোপিক ডার্মাটাইটিসের প্রবণতা আছে, তাদের শীতে এ সমস্যা বেড়ে যায়। এ ছাড়া লাইকেনপ্ল্যানাস, সোরিয়াসিসসহ ত্বকের কিছু ক্রনিক সমস্যাও বাড়ে।

শীতের পোশাক-প্রসাধনী থেকে ত্বকের রোগ

কৃত্রিম তন্তু, উলসহ নানা উপাদানের মিলমিশে তৈরি গরম কাপড়ের পোশাকে ব্যবহৃত নানা রঙের রাসায়নিকের সংস্পর্শে এবং পোশাকের ফিনিশিংয়ের গোলমালেও ত্বকের সমস্যা তৈরি হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।

কী কী উপসর্গ দেখলে সতর্ক হবেন

গরমের পোশাক বা রং-চঙে পোশাক পরার পর প্রথমে ত্বক চুলকাতে শুরু করে। লাল লাল ফুসকুড়ি বা র‌্যাশ বের হয়। চুলকাতে গিয়ে নখের আঁচড়ে সংক্রমণ হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। শীতকালে গোসলের পর ও রাতে ঘুমানোর আগে নারিকেল তেল বা ভালো কোনো ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে ত্বক নরম রাখা দরকার।

ইচ্ছামতো ওষুধ গ্রহণে আরও বিপদ

ত্বকের অসুখ অনেক সময় বাড়াবাড়ির পর্যায়ে চলে যায়। এর প্রধান কারণ নিজেদের ইচ্ছামতো ওভার দ্য কাউন্টার স্টেরয়েড জাতীয় মলম কিনে লাগানো। তাই ত্বকের এ ধরনের সমস্যা হলে এটা-ওটা না লাগিয়ে প্রথমে বোঝার চেষ্টা করুন, কোন জিনিস থেকে ত্বকের প্রদাহ হচ্ছে। খেয়াল রাখুন, সরাসরি যেন সেই পোশাক ত্বকের সংস্পর্শে না আসে। নারিকেল তেল ও ক্যালামিনল জাতীয় লোশন লাগিয়ে সুতির পোশাকের ওপর গরম জামা-কাপড় পরুন। এতেও সমস্যার সমাধান না হলে অবশ্যই ডাক্তার দেখান।

হাত পা ও শরীরের চামড়া ফেটে যাওয়া

শীত এলেই হাত-পা ও শরীরের চামড়া ফাটতে থাকে। এরকম দেখা দিলে ত্বক আর্দ্র রাখার চেষ্টা করা জরুরি। দিনে দুই-তিন বার করে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের চেষ্টা করুন। রোদ অনেক সময়ে বেশি ক্ষতি করে। বাইরে বেরোনোর আগে কোনো ভাবেই সানস্ক্রিন লোশন ব্যবহার করতে ভুলবেন না। গরমকালের মতো নিয়মিত পানি পান করতে হবে। পা ফাটার সমস্যা থাকলে, শীতের শুরু থেকেই মোজা পরুন।

গোসলের সময়ে সতর্কতা

অ্যান্টিসেপটিক দিয়ে গোসলের প্রথা ভুল। সাধারণ সাবান মেখে ভালো করে গোসল করলেই হবে। ত্বকে কমেনসল ব্যাকটেরিয়া বা ফাঙ্গাস থাকে। বাইরের ব্যাকটেরিয়া, ফাঙ্গাসকে চট করে ত্বকে ঢুকতে বাধা দেয়। অ্যান্টিসেপটিকে গোসল করলে ত্বকের প্রতিরক্ষা ধুয়ে মুছে যায়। এ দিকে এসব অ্যান্টিসেপটিকের এত ক্ষমতা নেই যে, এরা বাইরের জীবাণুকে আটকে রাখবে। কাজেই সাধারণ সাবান মেখেই গোসল করুন। ত্বক নিরাপদ থাকবে।

গ্রামে থাকলে বা ঘুরতে গেলে পুকুরে গোসল করা থেকে বিরত থাকুন। এতে ব্যাকটেরিয়া, ফাঙ্গাসের উৎপাত বাড়ে। গভীর নলকূপের পানি ব্যবহার করলে সুস্থ থাকবেন। ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাসকে গোড়ায় বিনাশ করাই ভালো। না হলে এ সংক্রমণ থেকে রোগ অনেক গভীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। তখন চিকিৎসাও অনেক জটিল হয়ে যাবে।

পা ফাটা যখন উদ্বেগের কারণ

পায়ের পাতা ফেটে যাওয়ায় অনেকেই কষ্ট পান। এমনিতেই শীতে কমবেশি চামড়া ফাটে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় পা ফাটা এতটাই মারাত্মক যে, ফাটল তৈরি হয়েছে। হাত-পায়ের চামড়া ফেটে গিয়ে রক্ত বেরোনোর ঘটনাও কিন্তু অস্বাভাবিক নয়। এটি মূলত হেরিডিটারি পামোপ্লান্টার কেরাটোডার্মা নামের এক ধরনের জিনবাহিত রোগ। এ ক্ষেত্রে রোগীর ত্বক প্রচণ্ড পুরু হয়। এতটাই পুরু, যা স্বাভাবিক বলে গণ্য হয় না। এ ক্ষেত্রে রোগীর চামড়া স্বাভাবিকের চেয়ে ৪০ শতাংশ বেশি মোটা হয়। এ ধরনের রোগীদের হাত-পা খুব বেশি ফাটে। এর কোনো দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা হয় না। সম্প্রতি রেটিনয়েডস জাতীয় কিছু ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসার জন্য ফিজিওথেরাপির সাহায্য নেওয়া হয়। এ সমস্যা নিয়ে চলতে চলতে রোগী নিজস্ব মেকানিজম তৈরি করে নেন। সেই ভাবেই তারা রোজকার কাজকর্ম চালিয়ে যান।

সোরিয়াসিস

এটি কিন্তু পুরোপুরি জিনবাহিত নয়। এ রোগটিকে বলা হয়, জেনেটিক্যালি মিডিয়েটেড ডিজিজ। হাত-পায়ে লাল চাকা চাকা দাগ হয়ে যাওয়া, চুলকানি, ছাল ওঠা-এগুলো এ রোগের লক্ষণ। এ রোগের আরও একটি উপসর্গ, হাত-পা ফেটে যাওয়া। বিশেষত, পা ফেটে লম্বা লম্বা ফিশার তৈরি হয়, যেখান দিয়ে রক্তও বেরোতে পারে। শীতকালে এ ফাটা বেশি বাড়ে। জ্বালা-যন্ত্রণাও বাড়বে এ ধরনের সমস্যায়। এ রোগ সারতে সময় লাগে। খাওয়ার ওষুধ দেওয়া হয়। পাশাপাশি ফাটা জায়গায় লাগানোর জন্য অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল ক্রিম, ফুসিডিক অ্যাসিড ক্রিম দেওয়া হয়। পেট্রোলিয়াম জেলি বা ভালো মানের ময়শ্চারাইজারও এ সোরিয়াসিস নিরাময়ে ভালো কাজ দেয়।

অ্যাকজিমা বা অ্যাটোপিক ডার্মাটাইটিস

সোরিয়াসিসের সঙ্গে এ রোগের ক্ষেত্রে পা ফাটার পার্থক্য অনেক সময়েই বোঝা যায় না। তখন আলাদা করে ত্বকের নমুনা নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়। একে বলা হয়, হিস্টোপ্যাথোলজি। সোরিয়াসিসের চেয়ে এ রোগ সারতে কিন্তু কম সময় লাগে। ওষুধের প্রয়োগও কম করতে হয়। ত্বকে লাগানোর ক্রিম দুটি ক্ষেত্রেই মূলত এক। তবে খাওয়ার ওষুধের মধ্যে অবশ্যই বিশেষ তফাৎ রয়েছে।

পিটরিয়াসিস রুবরা পাইলারিস (পিআরপি)

এটিও একটি জিনবাহিত রোগ। এ রোগ যাদের আছে, শীতকালে তাদের হাত-পা প্রচণ্ড শুষ্ক হয়ে যায়। এবং সোরিয়াসিসের মতোই পা ফেটে যায়। চিকিৎসার জন্য খাওয়ার ওষুধ এবং পায়ে লাগানোর ওষুধ দেওয়া হয়। যেসব ব্যক্তিদের এ ধরনের সমস্যাগুলো থাকে, তাদের সব সময়ে কিছু সাবধানতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। কারণ শীতে এ রোগের প্রকোপ বাড়ে। এ রোগে আক্রান্তদের শীত অল্প পড়লেই মোজা পরার অভ্যেস তৈরি করতে হবে। লবণ-পানিতে পা ভেজানো যেতে পারে। আধ বালতি ঈষদুষ্ণ পানি এক চিমটে লবণ দিয়ে সেই পানিতে পা আধ ঘণ্টা চুবিয়ে রাখা যায়, বেশ আরাম পাওয়া যায়। এটি অবশ্য যাদের পা ফাটার সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্যই নয়, পা ভালো রাখতে যে কেউ করতে পারেন। কারণ শীতকালে যাদের অল্প পা ফাটে বা পা না ফাটলেও শুষ্ক হয়ে যায়, তাদেরও পা ভালো রাখতে এটি খুব কার্যকর একটি ঘরোয়া উপায়। পিউমিস স্টোন দিয়ে নিয়মিত পা স্ক্রাব করা সবার জন্যই জরুরি। এতে পায়ে ময়লা জমে না। গোসলের আগে ভালো করে নারকেল তেল মাখলেও উপকার পাওয়া যায়। গোসলের পরে ভালো ময়শ্চারাইজার পায়ে লাগানো উচিত। যদি এর পরেও পা ফাটা না কমে, তখন স্টেরয়েড ক্রিম দিতে হবে। টানা এক বা দেড় মাস এ ক্রিম লাগালে অনেকটাই উপকৃত হবেন। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কখনো এ ধরনের ক্রিম ব্যবহার করা উচিত নয়।

শিশুদের ত্বকের সমস্যা

শীতে শিশুর ত্বকে এটোপিক ডার্মাটাইটিস নামক রোগ হয়। এতে ত্বকের আর্দ্রতা কমে গিয়ে ত্বক চুলকায় এবং অ্যাকজিমার মতো অবস্থার সৃষ্টি হয়। এক্ষেত্রে গোসলের পর শরীর মুখ মুছে ফেলার ৫ মিনিটের মধ্যে ক্রিম বা লোশন বা পেট্রোলিয়াম জেলি লাগাতে হয়। গোসলের পর ত্বকের পানি ধরে রাখার জন্য ময়েশ্চারাইজার কাজ করে। শিশুরা এ সময় পর্যাপ্ত পানি বা তরল যেন পান করে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। ত্বকের প্রাকৃতিক ব্যারিয়ার ধরে রাখার জন্য পানির বিকল্প নেই। এছাড়া শিশুদের শীতকালীন ফল, জুস এবং শাক-সবজিও খাওয়াতে হবে।

রুক্ষ চুল ও খুশকির ভয়

খুশকি হচ্ছে ত্বকের উপরিভাগের এক ধরনের ফাঙ্গাস বা ছত্রাক। এটি সাধারণত শুষ্ক ধরনের হয় তবে ভেজাও হতে পারে। মাথার তালু চুলকালে নখের মধ্যে কাদা কাদার মতো অংশই খুশকি। কিছু খুশকি মিক্সড অর্থাৎ ড্রাই ও ভেজার সংমিশ্রণ। ড্রাই খুশকি শুষ্ক আবহাওয়ার জন্য হয় ও ফাঙ্গাসের মতো জমে, তবে সোরিয়াসিস ও সেবোরিক ডার্মাটাইটিস নামক রোগেও শুষ্ক খুশকি হয়। এন্ড্রোজেনিক অ্যালোপেসিয়া বা যাদের বংশগতভাবে টাক পরে বা চুল পরে যায় তদের কাদার মতো খুশকি হয়। এ রোগীদের টেসটোসটেরন হরমোন থেকে তৈরি ড্রাই-হাইড্রো টেসটাসটেরন অতিরিক্ত পরিমাণ চুলের গোড়ায় বা মাথার তালুতে জমে যায়। ফলে চুলের গোড়া চিকন হয়ে প্রদাহ হয় এবং খুশকি তৈরি করে। খুশকির চিকিৎসা পদ্ধতিতে একেক জনের একেক রকম। কারও ক্ষেত্রে মুখে খাওয়া ওষুধ টারবিনাফিন, কিটোকোনাজল দেয়া হয়। কিটোকোনাজল শ্যাম্পু ব্যবহার করা যায়। সেলেনিরাম সালফাইড শ্যাম্পুও ব্যবহার করা হয়। যাদের মাথার ত্বকে প্রদাহ বেশি তাদের স্টেরয়েড শ্যাম্পু দেয়া হয়। অতি জরুরি হচ্ছে শীতে ক্লারিফাইং বা মিসেলাস শ্যাম্পু প্রত্যেকে সপ্তাহে একবার করলে চুলের গোড়ার অতিরিক্ত ময়লা দূর হয়ে যায়। এছাড়া চুলে ব্যবহার করুন হেয়ার সেরাম। প্রতিবার শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার লাগানোর পর চুল শুকনো করে হেয়ার সেরাম লাগিয়ে রাখুন। চুল শুকানোর ড্রায়ার, কার্লিং টুল, স্ট্রেটনার এগুলো যত এড়িয়ে চলবেন চুলের স্বাস্থ্য ততই ভালো থাকবে।

ফাঙ্গাসের সংক্রমণ ও প্রতিকার

ত্বকে ব্যাকটেরিয়া বা ফাঙ্গাল ইনফেকশন থেকে চর্মরোগ হয়। অনেক সময়েই বাইরের পরিবেশ থেকে বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া বা জীবাণু শরীরে ঢুকে পড়ে। তারা শরীরের ভেতরে নানা রোগ সৃষ্টি করে। আবার চামড়ার ওপরেও বাসা বাঁধতে পারে। ফোড়া, ফুসকুড়ি, ইমপটাইগো (মুখে, ঠোঁটের ওপরে চাক বেঁধে লাল র‌্যাশ বাচ্চাদের খুব হয়) হলো চেনা জীবাণু সংক্রমণ। চুল, নখে ফাঙ্গাস ইনফেকশন হতে দেখা যায়। খুব চেনা কিছু ফাঙ্গাস সংক্রমণ হলো দাদ, ছুলি, মুখের ভেতর থ্রাশ, বাচ্চার কোটেড টাং (জিভে সাদা সাদা ছত্রাকের পরত পড়ে)। ফাঙ্গাসের সংক্রমণ হলে আক্রান্ত অংশ খুব চুলকায়, সাদা সাদা ছোপ বা গোল, চাকা চাকা দাগ হয়। জীবাণু আক্রান্ত ত্বক লাল ও গরম হয়ে যায়। ব্যথাও হয়। এ ধরনের সংক্রমণ হলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি এবং প্রাথমিক পরিচ্ছন্নতার নিয়মগুলো মেনে চলতে হবে। যেমন নিয়মিত নখ কাটা ও নখ শেপে রাখা। রোজ পরিষ্কার ও শুকনো জামাকাপড়, অন্তর্বাস, মোজা, রুমাল ব্যবহার করা। শীত হোক বা গ্রীষ্ম, সাবান মেখে নিয়মিত গোসল করবেন। তারপর পরিষ্কার তোয়ালে দিয়ে শুকনো করে গা মুছে নিবেন। গ্লাইসেমিক ইনডেক্সে ওপরের দিকে থাকা খাবার খেলেই জীবাণু, ফাঙ্গাসের সংক্রমণের আশংকা বেড়ে যায়। তাই এ খাবারগুলো এড়িয়ে চলুন। পাস্তা, পিৎজা, মুরগি ভাজার মতো সুস্বাদু খাবার ব্লাড সুগারের মাত্রা বাড়ায়। তাতে সংক্রমণের সমস্যাও বাড়ে। তাই এসব খাবারের লোভ সংবরণ করুন।

বিষয়ঃ বাংলাদেশ

Share This Article