ব্যাপকভাবে কমছে গাধার সংখ্যা: সমীক্ষা

  বাংলাদেশের কথা ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ সকাল ১১:৩৫, মঙ্গলবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২১, ৬ পৌষ ১৪২৮
ভারতে গাধার সংখ্যা কমছে
ভারতে গাধার সংখ্যা কমছে

ফিচার ডেস্ক: ভারতে গাধার সংখ্যা ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে। আন্তর্জাতিক অশ্বত্থ দাতব্য সংস্থা বুর্ক পরিচালিত একটি সমীক্ষায় এ তথ্য জানানো হয়েছে। ভারতে গাধার সংখ্যার সামগ্রিকভাবে  হ্রাস পেয়েছে। শুনতে অবাক লাগলেও কথাটা কিন্তু একেবারেই সত্যি।

সমীক্ষা পরিচালনাকারী শরৎ কে ভার্মা বলেন, ২০১২ ও ২০১৯ সালে পশুসম্পদ শুমারির মধ্যে ভারতে গাধার সংখ্যার সামগ্রিক হ্রাস ৬১.২৩% পেয়েছে। শুধুমাত্র অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানার কিছু অংশে অনেক গাধা হত্যা করাসহ অবৈধ গাধা বাণিজ্য চলছে। যা গাধার সংখ্যা হ্রাস করছে। 

সমীক্ষায় দেখা যায়, ২০১৯ সালে পশুসম্পদ শুমারির পরিসংখ্যানে গাধার জনসংখ্যা ৬১% হ্রাস পেয়েছে। এইভাবে গোপনে গাধার লুকানো ব্যবসা বেআইনি। ২০১২ সালের লাইভ স্টক ভারতের আদমশুমারি অনুসারে প্রায় ০.৩২ মিলিয়ন গাধার সংখ্যা ছিল। যা থেকে ২০১৯ সালে প্রাণিসম্পদ শুমারি হিসাবে মাত্র ০.১২ মিলিয়নে নীচে নেমে এসেছে। 

যেভাবে ভারতে গাধা হ্রাস পাচ্ছে:

মহারাষ্ট্র, অন্ধ্র প্রদেশ, রাজস্থান, বিহার, উত্তর প্রদেশ ও গুজরাতের অভ্যন্তরীণ এলাকা পরিদর্শন করেছে সমীক্ষা দল। যেখানে তাঁরা দেখেছেন ২০১২ ও ২০১৯ সালে প্রাণিসম্পদ শুমারির সময়ের ব্যবধানের মধ্যে গাধার সংখ্যার আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে।

তারা অনেক গাধার মালিক, পশু ব্যবসায়ী, গবাদি পশু মেলার সংগঠক এবং রাজ্য ও কেন্দ্রীয় পশুপালন কর্মকর্তাদের সাথে গাধার সংখ্যা হ্রাসের জন্য কি কি দায়ী সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। 

গাধার চামড়া দিয়ে যা রা হয়:

গাধার চামড়া অন্য অনেক দেশে পাচার করা হয়। বিশেষ করে চীনের তৈরি ইজিয়াও ওষুধ তৈরিতে গাধার মাংস ব্যবহৃত হয়।  

সমীক্ষা থেকে আরো জানা গেছে, মহারাষ্ট্রে ২০১২ সাল থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে গাধার সংখ্যা ৩৯.৬৯% হ্রাস পেয়েছে। 

গাধার ব্যবসায়ী কী বললেন:

স্থানীয় এক গাধা ব্যবসায়ী রাম বাবু যাদব বলেন, কয়েক বছর আগে চীনের এক ব্যক্তি প্রতি মাসে ২০০টি করে গাধা কেনার জন্য যোগাযোগ করতেন। তারা গাধার চামড়া চাইতেন। অন্ধ্র প্রদেশে গাধার সংখ্যা ৫৩.২২% কমেছে।

সমীক্ষায় দেখা যায়, অন্ধ্রপ্রদেশে, এলুরু, গুদিওয়াদা, মাছিলিপত্তনম, বাপটলা, চেরুকুপল্লী, মঙ্গলাগিরি, গুন্টুর এবং চিরাল এলাকায় গাধা  জবাই করা হচ্ছে। গাধার সংখ্যার প্রায় ৭১.৩১% হ্রাস পেয়েছে এসব এলাকায়। 

রাজস্থানে সবচেয়ে বড় গাধার মেলা অনুষ্ঠিত হয়। গুজরাতেও গাধার সংখ্যা ৭০.৯৪ % হ্রাস পেয়েছে। বিহারে হ্রাস পেয়েছে ৪৭.৩১% আর উত্তরপ্রদেশে এ সংখ্যা ৭১.৭২% হ্রাস পেয়েছে।

জানা যায়, জীবিত গাধা, গাধার চামড়া ও মাংসের অবৈধ রপ্তানি সহজলভ্য। যা সহজে বিক্রি হচ্ছে। গাধার সংখ্যা হ্রাসের অন্যান্য কারণগুলো হল উপযোগিতা হ্রাস, গাধা পালনকারী সম্প্রদায়গুলো এখন চাকরি বা অন্য ব্যবসা বেছে নিচ্ছেন। অন্ধ্রপ্রদেশে পুলিশ ইতিমধ্যে ৩৯ টি গাধা উদ্ধার করেছে। সেই সঙ্গে গ্রেপ্তার করেছে কিছু অসাধু ব্যক্তিকে। এসব কারণেই দিন দিন ভারতে গাধার সংখ্যা কমে গেছে।

গাধার সংখ্যা হ্রাসে চীনকে দায়ী:

শুধুমাত্র ভারতে নয় বিশ্বজুড়ে গাধার সংখ্যা হ্রাসের জন্য চীন প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে দায়ী বলে অভিযোগ ওঠেছে। কারণ গাধার চামড়া একটি ঐতিহ্যবাহী চীনা ওষুধ 'ইজিয়াও' তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। 

স্বাস্থ্যের ফ্যাড হিসাবে ইজিয়াও জীবনকে দীর্ঘায়িত করে ও অন্যান্য অসুস্থতা নিরাময়ে ব্যবহার করার জন্য এটি ব্যবহৃত হয়।  পাশাপাশি যৌন ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে বলে মনে করা হয়। 

বিষয়ঃ ভারত

Share This Article