শেষ দিনের আলোয় প্রস্ফুটিত হওয়ার অপেক্ষায় বাংলাদেশে
![শেষ দিনের আলোয় প্রস্ফুটিত হওয়ার অপেক্ষায় বাংলাদেশে](/Uploads/Images/News/2022/5/Image-11010-20220518150517.jpeg)
চট্টগ্রাম টেস্টে কাটলো ঘটনাবহুল একটি দিন। আগের তিনদিনে যেখানে পড়েছিল মাত্র ১৩ উইকেট, সেখানে আজকের দিনে দুই দল মিলে ৮ উইকেট হারিয়ে বসেছে।
যার ফলে নিশ্চিত ড্রয়ের দিকে এগোতে থাকা ম্যাচেও মিলছে ফলাফলের আভাস। তবে সেটি অবশ্য জোর দিয়ে বলার সুযোগ নেই।
ম্যাচের চতুর্থ দিন শেষে শ্রীলঙ্কা দ্বিতীয় ইনিংসে ২ উইকেট হারিয়ে করেছে ৩৯ রান। এখনও বাংলাদেশের চেয়ে ২৯ রানে পিছিয়ে রয়েছে তারা। এর আগে বাংলাদেশ নিজেদের প্রথম ইনিংসে অলআউট হয়েছে ৪৬৫ রানে। যার সুবাদে প্রথম ইনিংসে মিলেছে ৬৮ রানের লিড।
বৃহস্পতিবার শেষ দিন তিনটি ফলই সম্ভব। তবে আপাতদৃষ্টিতে বাংলাদেশই এগিয়ে থাকছে জয়ের দিকে। দ্রুত লঙ্কানদের বাকি ৮ উইকেট তুলে নিতে পারলে পাওয়া যাবে ছোট লক্ষ্য। পরে সেটি তাড়া করতে পারলেই মিলবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্ট জয়ের স্বাদ। সবকিছুই নির্ভর করছে শেষ দিনে বাংলাদেশের বোলিংয়ের ওপর।
আগেরদিনই সেঞ্চুরি করেছিলেন তামিম ইকবাল। আজকের খেলায় মুশফিকুর রহিমও তিন অঙ্কে পৌঁছান। তবে সেঞ্চুরি ছোঁয়ার আগেই দেশের প্রথম টেস্ট ব্যাটার হিসেবে পাঁচ হাজার রানের ক্লাবে প্রবেশ করেন মুশফিক। তামিম অবশ্য পারেননি। মাত্র ১৯ রান দূরে থাকতে আউট হয়েছেন তিনি। লিটন দাস সেঞ্চুরি মিস করেছেন মাত্র ১২ রানের জন্য।
পরে দ্বিতীয় ইনিংসে খেলতে নেমে খানিক দুশ্চিন্তা নিয়েই দিন শেষ করেছে লঙ্কানরা। ৬৮ রানের পিছিয়ে থেকে শেষ বিকেলের ১৭.১ ওভারে দুই উইকেট হারিয়েছে তারা। তাইজুল ইসলামের সরাসরি থ্রোয়ে সাজঘরে ফিরেছেন ১৯ রান করা ওশাদা ফার্নান্দো। পরে নাইটওয়াচম্যান হিসেবে নামা লাসিথ এম্বুলদেনিয়াকেও ফেরান তাইজুল। অধিনায়ক দিমুথ করুনারাত্নে অপরাজিত রয়েছেন ১৮ রানে।
অথচ আজকের দিনের শুরুটা ছিল অনিশ্চয়তায় ভরা। রাত থেকেই থেমে থেমে বৃষ্টির কারণে মনে হচ্ছিল খেলার বেশিরভাগ সময়ই ভেসে যাবে। কিন্তু খেলা শুরুর আগেই থেমে যায় বৃষ্টি। তবে আউটফিল্ড ভেজা থাকায় খেলা শুরুর সময় সকাল দশটার বদলে ত্রিশ মিনিট পিছিয়ে দেওয়া হয়।
আগেরদিনে করে রাখা ৩ উইকেটে ৩১৮ রানের সঙ্গে আজকের প্রথম সেশনে আরও ৬৭ রান যোগ করেন মুশফিক ও লিটন। দিনের ১৬তম ওভারে আসিথা ফার্নান্দোর বলে ফাইন লেগ দিয়ে দুই রান করে পাঁচ হাজারের মাইলফলকে পৌঁছান মুশফিক। বাংলাদেশের প্রথম ও বিশ্বের ৯৯তম ব্যাটার হিসেবে এ কীর্তি গড়েন তিনি।
মনে হচ্ছিল, তামিমের পর মুশফিক-লিটন দুজনই করবেন সেঞ্চুরি। কিন্তু দ্বিতীয় সেশনের প্রথম বলেই অফস্ট্যাম্পের অনেক বাইরের বল তাড়া করতে গিয়ে লিটন কট বিহাইন্ড হন। তার ব্যাট থেকে আসে ৮৮ রান। ঠিক পরের বলে বোল্ড হয়ে যান ১৩৩ রান নিয়ে আবার ব্যাট করতে নামা তামিম।
এরপর উইকেটে এসেই চালিয়ে খেলতে থাকেন সাকিব আল হাসান। তবে তিনি বেশিক্ষণ খেলতে পারেননি। রানরেট খানিক বাড়িয়ে দলীয় সংগ্রহ চারশ পার করিয়ে ফিরে যান সাজঘরে। আউট হওয়ার আগে তিন চারের মারে ৪৪ বলে করেন ২৬ রান। পরে নাইম হাসানকে নিয়ে সেঞ্চুরি পূরণ করেন মুশফিক।
ক্যারিয়ারের ধীরতম সেঞ্চুরিতে পৌঁছাতে তার লেগে যায় ২৭০ বল। যেখানে ছিল মাত্র চারটি চারের মার। তবে সেঞ্চুরির পরপরই লেগস্ট্যাম্পের বলে সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হন মুশফিক। তার ব্যাট থেকে আসে ২৮২ বলে ১০৫ রানের ইনিংস। প্রায় সাড়ে সাত ঘণ্টার ইনিংসে চারটি চার মারেন তিনি।
শেষ দিকে তাইজুল ইসলাম ২০ রানের কার্যকরী ইনিংস খেলেন। শরিফুল ইসলাম হাতে ব্যথা পাওয়ার ফলে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে ৪৬৫ রানে শেষ হয় বাংলাদেশের ইনিংস। শ্রীলঙ্কার পক্ষে কনকাশন সাব হিসেবে নামা কাসুন রাজিথা ৪ ও আরেক পেসার আসিথা ফার্নান্দো নেন ৩ উইকেট।