বিএনপিকে কর্নেল অলির এলডিপির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলল একাংশ
![বিএনপিকে কর্নেল অলির এলডিপির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলল একাংশ ফাইল ফটো](/Uploads/Images/News/2022/4/Image-10215-20220428041748.jpeg)
লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপির একাংশের মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেছেন, বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটে থেকে ধৃষ্টতাপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছেন রেদোয়ান আহমেদ (অলি আহমদ নেতৃত্বাধীন এলডিপির মহাসচিব)। এতে করে দলটির দেউলিয়াত্ব প্রকাশ হয়েছে।
‘২০১৪ ও ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে যে আতাতের চেষ্টা ছিল- তা রেদোয়ান আহমেদের বক্তব্যে প্রমাণিত হয়েছে। দেনা-পাওনার না মিলার কারণে এবং অলি আহমদের অতি চাহিদার কারণে এলডিপি তখন আওয়ামী সরকারে যেতে পারেনি বলে বাজারে গুজব আছে। বিএনপির উচিত হবে অনতিবিলম্বে অলি আহমদের এলডিপির বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া।’
বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে একাংশের মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম এসব কথা বলেন। গতকাল (মঙ্গলবার) অলি আহমদ নেতৃত্বাধীন এলডিপির মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদের দেওয়া বক্তব্যের সমালোচনা করে এ বিবৃতি দেন শাহাদাত।
‘বিএনপির কিছু নেতা একদিকে জাতীয় ঐক্যের ডাক দিচ্ছেন, অন্যদিকে কেউ কেউ ঐক্য বিনষ্টের জন্য বিভিন্ন সভা-সমাবেশে আপত্তিকর বক্তব্য দিচ্ছেন। এটা ঐক্য বিনষ্টের প্রয়াস’- রেদোয়ান আহমেদের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, ‘জনগণ যখন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য ঐক্যবদ্ধ, তখন নির্বাচনের আগে জাতীয় সরকার গঠনের প্রস্তাব একটি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র ও জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা মাত্র।’
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ‘ইতোমধ্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও দেশনায়ক তারেক রহমানের পক্ষ থেকে নির্বাচনের পর জাতীয় সরকার গঠনের প্রস্তাবের পরও যারা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত রেখে নির্বাচনের আগে জাতীয় সরকার গঠনের পক্ষে কথা বলছে, নিঃসন্দেহে তারা জাতীয় ঐক্যের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। প্রকৃতপক্ষে দেশি-বিদেশি কুচক্রীমহলের ইন্ধনে এই প্রস্তাবকে তারা মুখে তুলে রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বকেই প্রকাশ করেছে।’
শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, ‘এলডিপির জন্মের সময় থেকে যারা-যারা যুক্ত ছিলেন, যাদের উদ্যোগে এই দলটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, আজ সবাই অলি আহমদের আত্মঅহংকার, মিথ্যাচার ও স্বৈরাচারী মনোভাবের জন্য এলডিপি ছেড়ে চলে গেছেন। জন্মের সময়কার কেউ আর অলি আহামদের সঙ্গে নেই। পরিস্থিতি এমন যে, অলি আহমদের এলডিপি একটি কাগজে বাঘ। আর তার অংশের মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ অবশ্যই বিতর্কের ঊর্ধ্বে নন। তিনি মন্ত্রী হিসেবে দুর্নীতিসহ নানা কিছুতে বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন। যিনি বিএনপির কল্যাণে এমপি হয়েছেন, যিনি বিএনপির কল্যাণে মন্ত্রী হয়েছেন, আজ তার মুখেই বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে বক্তব্য শোনা যায়। অবশ্যই অবাক অনাহুত হবে, যে এরচেয়ে দ্বিচারিক রাজনৈতিক সত্ত্বা দেশের রাজনীতিতে আর কি হতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই তো কিছুদিন আগে রেদোয়ান আহমেদ বিএনপিতে যোগদানের জন্য দ্বারে দ্বারে ধরনা দিয়েছেন। আজকে তাদের মুখেই শেখ হাসিনার অধীনে জাতীয় সরকার গঠনের কথা শোনা যায়। এটা কোনো নিজস্ব মত হতে পারে না। এটা দেশের মানুষের সঙ্গে পরিহাস, প্রতারণা বৈকি কিছু নয়। যার অধীনে ২০১৪ সালে বিনা ভোটের নির্বাচন ও ২০১৮ সালে আগে রাতে নির্বাচন হয়ে যায়, তাকে সামনে রেখে তার অধীনে বা তার দলকে রেখে জাতীয় সরকার গঠনের কথা যারা বলে, তারা নিঃসন্দেহে জাতীয়তাবাদী শক্তির ভেতরে চক্রান্তকারী।’
সেলিম বলেন, ‘এই চক্রান্তকারীদের জোটে রেখে আগামী দিনে কোনো রাজনৈতিক স্বার্থই হাসিল করা সহজ হবে না। বিএনপির প্রতি তিনি অনবিলম্বে অলি আহমদের এলডিপিকে জবাবদিহিতা করার দাবি জানান।
উল্লেখ্য, এলডিপির দুই অংশই বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটে রয়েছে। কর্নেল (অব.) ড. অলি আহমদের নেতৃত্বাধীন এলডিপির মহাসচিব হলেন ড. রেদোয়ান আহমেদ। আর এলডিপির আরেক অংশের সভাপতি আবদুল করিম আব্বাসী ও মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম।