২৫ কোম্পানির ১৬৫ বাসের রুট পারমিট বাতিলের সুপারিশে সমর্থন বাস মালিক সমিতি

  বাংলাদেশের কথা ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ সকাল ০৯:৫৬, রবিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২১, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪২৮

যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের দায়ে অন্তত তিনবার জরিমানা হয়েছে—এমন বাসের রুট পারমিট বাতিলের সুপারিশের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে বাস মালিক সমিতি।

যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের দায়ে অন্তত তিনবার জরিমানা হয়েছে—এমন বাসের রুট পারমিট বাতিলের সুপারিশের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে বাস মালিক সমিতি। তবে যাত্রী কল্যাণ সমিতি সরকারি এই পদক্ষেপে সন্তুষ্ট নয়। তাদের দাবি, লোক-দেখানো অভিযান চালিয়ে ‘ক্যান্সারের ক্ষত মলমে সারতে’ চাচ্ছে। সব বাসই বেশি ভাড়া নেয়। কয়েকটিকে ধরে লাভ হবে না।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চলাকালে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের দায়ে ঢাকা মহানগরে ২৫ পরিবহন কম্পানির অধীনে চলাচল করা ১৬৫টি বাসকে অন্তত তিনবার জরিমানা করা হয়েছে। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) এসব বাসের রুট পারমিট বাতিল করার পথে রয়েছে। আগামী ২০ ডিসেম্বরের পর আঞ্চলিক পরিবহন কমিটির (আরটিসি) বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। চলতি মাসের শেষের দিকে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে আরটিসি।

সম্প্রতি এসব বাসের বিরুদ্ধে রুট পারমিট বাতিলসহ আইনি ব্যবস্থা নিতে আরটিসিকে চিঠি দিয়েছে বিআরটিএ। অবশ্য আরটিসি কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা এখনো এসংক্রান্ত কোনো চিঠি পায়নি।

১৬৫ বাসের রুট পারমিট বাতিলের সুপারিশ প্রসঙ্গে ঢাকা পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্ল্যাহ কালের কণ্ঠকে বলেন, দোষ করলে শাস্তি পেতে হবে। যারা অপরাধ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে—এটিই স্বাভাবিক। তাঁদের দিক থেকে কোনো বাধা নেই।

রুট পারমিট বাতিলের সুপারিশকে লোক-দেখানো বলে দাবি করেন যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী। তিনি বলেন, এই ১৬৫ বাসের রুট পারমিট বাতিল কোনো সমাধান নয়। একটি কম্পানির পাঁচটি বাস অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে ধরা পড়েছে। বাকিরা বেশি ভাড়া নিয়েও ধরা পড়েনি। সুতরাং কয়েকটি বাসের রুট পারমিট বাতিল না করে দোষী বাসগুলোর কম্পানিকে কালো তালিকাভুক্ত করে বাতিল করা উচিত।

সরকার ডিজেলের দাম বাড়ানোর পর পরিবহন মালিকদের চাপে গত ৮ নভেম্বর থেকে বাসে কিলোমিটারপ্রতি ২৭ শতাংশ ও লঞ্চে ৩৫ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়। অতিরিক্ত ভাড়া আদায় হচ্ছে কি না, তা নজরদারিতে রাখতে ৮ নভেম্বর থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসানো হয়।

বিআরটিএর চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার কালের কণ্ঠকে বলেন, ১৬৫টি বাসের বিরুদ্ধে রুট পারমিট বাতিলসহ আইনি ব্যবস্থা নিতে আরটিসিকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আরটিসির নিজস্ব কমিটি রয়েছে। তারা আলোচনা করে আইনি ব্যবস্থা নেবে। কবে নাগাদ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হতে পারে—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এখন পুরো কাজ আরটিসির হাতে। তারা যত দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবে, সেটা কার্যকর হবে।

নীতিমালা অনুযায়ী, সর্বোচ্চ দুই জেলার মধ্যে চলাচল করে এমন স্টেজ ক্যারেজ, কন্ট্রাক্ট ক্যারেজ এবং যেকোনো রুটে চলাচলকারী সাধারণ পরিবহন/ ব্যক্তিগত মোটরযানের (মালবাহী ট্রাক, ভ্যান, ট্যাংক লনি ইত্যাদি) রুট পারমিট সংশ্লিষ্ট এলাকার আঞ্চলিক পরিবহন কমিটি (আরটিসি) দিয়ে থেকে। তবে রুট পারমিটের আবেদন বিআরটিএর সংশ্লিষ্ট সার্কেল অফিসের মাধ্যমে করতে হয়। যেহেতু রুট পারমিট আরটিসি দিয়ে থাকে, তাই পারমিট বাতিলের ক্ষমতাও তাদের হাতে।

পদাধিকারবলে আরটিসির প্রধান ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার (ডিএমপি) মো. শফিকুল ইসলাম। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বাসের রুট পারমিট বাতিলসহ আইনি ব্যবস্থার কোনো সুপারিশের চিঠি আমি এখনো পাইনি। চিঠি পেলে কমিটি বৈঠকে বসে সিদ্ধান্ত নেবে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রুট পারমিট বাতিলের সুপারিশের তালিকায় থাকা একটি বাস কম্পানির কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের কম্পানিতে ১৫০টির মতো বাস আছে। কিন্তু কম্পানির বাসের মালিক অনেকে। এমন অনেকেই আছেন, যাঁদের এক-দুটি বাস কম্পানির অধীনে চলে। ফলে দু-একজনের শাস্তি সবাই পেতে পারে না।’

রুট পারমিট বাতিলের সুপারিশ নিয়ে মালিকরা সমিতির সঙ্গে আলোচনা করেছেন কি না, এমন প্রশ্নে বাস মালিক সমিতির নেতা এনায়েত উল্ল্যাহ বলেন, ‘বাস মালিকদের সঙ্গে আমাদের কোনো আলোচনা হয়নি। এ নিয়ে আমাদের কিছু করার নেই। যাদের বাস পাঁচ-সাতবার অপরাধ করে ধরা পড়ছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রতিটি বাসের আলাদা আলাদা রুট পারমিট। ফলে যে বাসের শাস্তি, সে বাসই পাবে।’

শাস্তি হিসেবে বিআরটিএর দিক থেকে এবারই প্রথম রুট পারমিট বাতিলের সুপারিশ করা হয়। বিআরটিএ বলছে, যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে সবচেয়ে বেশি নিয়ম ভেঙেছে বসুমতি ১৬ বার, রাইদা ১৩ বার, পরিস্থান ১১ বার। এ ছাড়া এমএম লাভলী ও অনাবিল কম্পানি ১০ বার করে, আলিফ ৯ বার, লাব্বাইক আটবার, তুরাগ, বলাকা ও স্বাধীন সাতবার করে, প্রজাপতি, রজনীগন্ধা ও শিকড় ছয়বার করে, আকাশ, আজমেরী, মনজিল, প্রভাতি ও বনশ্রী পাঁচবার করে, আসমানী, প্রচেষ্টা, ভিক্টর, মিডলাইন, ডি লিংক, রাজধানী, গুলিস্তান-গাজীপুর পরিবহন, ভিআইপি বাস তিনবার করে নির্দেশনা লঙ্ঘন করেছে।

সূত্র : কালের কন্ঠ

Share This Article


‘রাতেই বাসা-বাড়িতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট চালু হতে পারে’

‘রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণাকারীদের আইনের আওতায় আনা হবে’

চার দফা না মানলে আট দফা নিয়ে কথা বলার সুযোগ নেই

প্রাথমিক বিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা

ইউনূসের বিবৃতি রাষ্ট্রবিরোধী

তালিকা হচ্ছে গা-ঢাকা দেওয়া আওয়ামী লীগ নেতাদের

আত্মগোপনে বিএনপি নেতা-কর্মীরা

কোটা পদ্ধতির যৌক্তিক সংস্কার আনা এখন সময়ের দাবি: আরেফিন সিদ্দিক

আন্দোলনকারীদের থেকে ইতিবাচক বার্তা পেয়েছি: তথ্য প্রতিমন্ত্রী

নিরাপত্তার স্বার্থে শিক্ষার্থীদের নিজগৃহে অবস্থানের অনুরোধ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের

‘কোটা সংস্কার নিয়ে প্রয়োজনে সংসদে আইন পাস হতে পারে’

মহাসড়ক অবরোধ করে রাবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ