অতিথি পাখির আগমন মুখর টাঙ্গুয়ার হাওর

  বাংলাদেশের কথা ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ সকাল ০৮:৩৭, শনিবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০২১, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪২৮
ফাইল  ফটো
ফাইল ফটো

সুনামগঞ্জ সংবাদদাতা:
অতিথি পাখির কোলাহলে মুখর হয়ে উঠছে তাহিরপুরের টাঙ্গুয়ার হাওর। এসব অতিথি পাখি দেখতে পাখিপ্রেমীরা দেশের রাজধানীসহ  বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রতিদিনই ভিড় করছেন  টাঙ্গুয়ার হাওরে। অতিথি পাখিরা কখনও জলকেলি, কখনও খাদ্যের সন্ধানে এক বিল থেকে অন্য বিলে, এক হাওর থেকে আরেক হাওরে গলায় স্বর তুলে ঝাঁকে ঝাঁকে আকাশে উড়ছে।

পরিযায়ীর সঙ্গে দেশি পাখিদের মিলন-অভিসার ও কিচিরমিচির শব্দে মুখরিত গোটা হাওর এলাকা। তুষারপাত ও শৈত্যপ্রবাহ থেকে নিজেদের রক্ষায় শীতপ্রধান দেশগুলো থেকে ফিবছর উড়ে উড়ে বহু দেশ ঘুরে ঘুরে বাংলাদেশে আসে পাখিরা। দল বেঁধে ঝাঁকে ঝাঁকে ওরা আসে অতিথি হয়ে। শীত কমে গেলে আবার ফিরে যায় আপন ঠিকানায়। এবারও শীতের শুরুতেই মৌলভীহাঁস, বালিহাঁস, লেঞ্জা, চোখাচোখি, বেগুনি কালেম প্রভৃতি পরিযায়ী বিহঙ্গকুলের আগমন ঘটেছে টাংগুয়ার হাওরে। এর সঙ্গে পর্যটক, প্রকৃতি ও পাখিপ্রেমীদের আগমনে উজ্জীবিত হাওর এলাকা।

সরজমিনে টাংগুয়ার হাওর ঘুরে ও পাড়ের স্থানীয় সচেতন বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, টাংগুয়ার হাওর ১০০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। তুষারপাত ও শৈত্যপ্রবাহ থেকে একটু উষ্ণতার জন্য প্রতিবছর এ মৌসুমে শীতপ্রধান দেশ-মহাদেশ সুদূর এন্টার্কটিকা, সাইবেরিয়া, মঙ্গোলিয়া, ইংল্যান্ডের হ্যাম্পশায়ার, ফিলিপিন্স, অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়া, ফিনল্যান্ড থেকে বিভিন্ন প্রজাতির অতিথি পাখি আসে এ হাওরে। ক্লান্তিতে প্রথমে কিছুটা ঝিমিয়ে পড়লেও দেশীয় পাখিদের সঙ্গে মিশে ও প্রচুর খাবার সমৃদ্ধ হাওরে বিচরণ করে তারা উদ্যোম ফিরে পায়। খাবারের সন্ধানে পাখিদের এক হাওর থেকে অন্য হাওরে স্বর তুলে উড়ে বেড়ানো, মাছ শিকার, শামুক খাওয়া, জলকেলি আর কিচিরমিচির কলতানে হাওর পাড়ের মানুষের ঘুম ভাঙ্গে। আর প্রকৃতির এ মনোরম দৃশ্য দেখে মুগ্ধ আগত পর্যটক, প্রকৃতি ও পাখিপ্রেমীরা। এখানে এসে কেউ সেলফি তুলছেন, আবার কেউ প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করছেন।

ঢাকা থেকে টাংগুয়ার হাওরে বেড়াতে আসা সাব্বির রহমান জানান, শীতকালে অতিথি পাখি আর হাওরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অসাধারণ। খুব ভালো লেগেছে। তবে টাংগুয়ার হাওরে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন কার্যকর, জীববৈচিত্র্য রক্ষা জরুরি। মাছ, পাখি সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ ও পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে টাংগুয়ার হাওর কেন্দ্র করে একটি পর্যটন কেন্দ্র স্থাপন ও যুগোপযোগী কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানাই।

তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল জানান, হাওরে পাখি শিকারিদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রায়হান কবির জানান, টাংগুয়ার হাওরে অবৈধভাবে মাছ ও পাখি শিকারিদের বিরুদ্ধে দ্রুত অভিযান চালিয়ে তাদের প্রতিহত করা হবে। কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। হাওরে বেড়াতে আসা পর্যটকদের থাকা ও খাওয়ার যুগোপযোগী পরিবেশ নেই। তাই টাংগুয়ার হাওর পাড়ে পর্যটন কেন্দ্র স্থাপনের জন্য একটি আবেদন উচ্চ পর্যায়ে পাঠানো হয়েছে।

বিষয়ঃ বাংলাদেশ

Share This Article