বিদ্রোহী ভেবে ১৩ গ্রামবাসীকে হত্যা করল ভারতীয় সেনারা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য নাগাল্যান্ডে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে অন্তত ১৩ জন বেসামরিক গ্রামবাসীর প্রাণহানি ঘটেছে। এতে আহত হয়েছেন আরও কিছু লোক।
নৃশংস এ ঘটনায় ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর এক সদস্যও প্রাণ হারিয়েছেন। সন্ত্রাসবাদ বিরোধী অভিযানের নামে ‘ভুল করে’ বিদ্রোহী ভেবে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী গ্রামবাসীদের ওপর গুলি চালালে হতাহতের ঘটনাটি ঘটে।
রবিবার (৫ ডিসেম্বর) প্রতিবেদন প্রকাশের মাধ্যমে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া ও এনডিটিভি তথ্যটি জানিয়েছে। বিদ্রোহী ভেবে ‘ভুল করে’ নিরাপত্তা বাহিনীর চালানো গুলিতে ওই গ্রামবাসীরা নিহত হন বলে দাবি করা হয়েছে।
মিডিয়াগুলো বলছে, নাগাল্যান্ডের মন জেলায় ওটিং গ্রামে বিদ্রোহ বিরোধী অভিযান চালানোর সময় ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী স্থানীয় গ্রামবাসীদের ওপর গোলাবর্ষণ করে। এতে ওই গ্রামের কমপক্ষে ১৩ বাসিন্দা প্রাণ হারান।
প্রশাসনের দাবি, এই ঘটনায় নিরাপত্তা বাহিনীর এক জওয়ানের মৃত্যু হয়। গ্রামটি মিয়ানমার সীমান্তে অবস্থিত। নাগাল্যান্ডের মন জেলার সঙ্গে মিয়ানমারের বিশাল সীমান্ত রয়েছে।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধে নাগাল্যান্ডের তিরু-ওটিং রোডে অভিযান চালায় নিরাপত্তা বাহিনী। সে সময় স্থানীয় গ্রামবাসীদের প্রতিরোধের মুখে পড়ে নিরাপত্তা বাহিনী। ঘটনার এক পর্যায়ে নিরাপত্তা বাহিনী গুলিবর্ষণ শুরু করে। এরপর সেই গুলিতে গ্রামবাসীরা নিহত হলে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পায়।
পুলিশের দাবি, আত্মরক্ষার জন্য নিরাপত্তা বাহিনীকে গুলিবর্ষণ করতে হয়েছে। পরবর্তীকালে নিরাপত্তা বাহিনীর বেশ কয়েকটি গাড়ি পুড়িয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা।
এ দিকে বিদ্রোহ বিরোধী অভিযান চালানোর সময় নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে গ্রামবাসীদের প্রাণহানির ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেছেন নাগাল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী নেইফিউ রিও। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় ঘটনাটিকে ভীষণই ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলে তিনি আখ্যায়িত করেছেন।
এছাড়া নিহত সকলের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে ঘটনাটির তদন্তে উচ্চ পর্যায়ের বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী নেইফিউ রিও। একই সঙ্গে এ ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন দেশটির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও।
এ দিকে বিবৃতির মাধ্যমে ভারতীয় সেনাবাহিনী বলছে, নাগাল্যান্ডের ঘটনার উচ্চপর্যায়ের তদন্ত হবে। দোষীদের আইন অনুযায়ী শাস্তি দেওয়া হবে।