জাতিসংঘের নিন্দায় তালেবান ও মিয়ানমারের জান্তা

আফগানিস্তান ও মিয়ানমারের নতুন দূতেরা আপাতত জাতিসংঘে প্রতিনিধিত্ব করতে পারছেন না। এই দুই দেশের হয়ে কে প্রতিনিধিত্ব করবেন—এমন সিদ্ধান্ত নিতে বুধবার বৈঠকে বসেছিল জাতিসংঘের ক্রেডেনশিয়াল কমিটি। সেই বৈঠক থেকে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মিয়ানমারের জান্তা এবং আফগানিস্তানের তালেবান কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবার জাতিসংঘে তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের আসন অস্বীকার করার জন্য জাতিসংঘের নিন্দা করেছে।
মিয়ানমার জান্তার মুখপাত্র জাও মিন তুন এএফপিকে বলেন, ‘এই সিদ্ধান্ত আমাদের দেশের মাটি ও অস্তিত্বের বাস্তবতাকে প্রতিফলিত করে না। আমরা কূটনৈতিক পদ্ধতি এবং আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় আইন অনুসারে প্রতিনিধিত্বের অধিকারের দাবি জানিয়ে যাব।’
গত সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘে আফগানিস্তানের তালেবান নেতৃত্বাধীন সরকারের মনোনীত প্রতিনিধি নির্বাচিত হন সংগঠনটির দোহাভিত্তিক মুখপাত্র সুহাইল শাহিন।
আশরাফ গনি সরকারের নিযুক্ত মন্ত্রিসভার সদস্য গুলাম ইসকজাইয়ের স্থলাভিষিক্ত করতে অনুরোধ করা হয় শাহিনকে। গতকাল টুইটারে শাহিন বলেন, জাতিসংঘ আফগানিস্তানের জনগণকে তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, বৈঠক শেষে ওই কমিটির প্যানেল চেয়ার ও জাতিসংঘে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত আনা কারিন অ্যানেস্ট্রম বলেন, আপাতত আফগানিস্তানের তালেবান ও মিয়ানমারের সামরিক জান্তার প্রতিনিধিদের জাতিসংঘে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। তবে জাতিসংঘে আগের সরকারের রাষ্ট্রদূতেরাই আফগানিস্তান ও মিয়ানমারের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করবেন কি না—এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি আনা কারিন।
চলতি বছর নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে আফগানিস্তানে ক্ষমতায় বসে তালেবান ও মিয়ানমারে ক্ষমতায় বসে জান্তা। এরপর এই দুই সরকারের পক্ষ থেকে নতুন প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হয় এবং আগের সরকারের প্রতিনিধির নিয়োগ বাতিল করা হয়।
জাতিসংঘ নতুন প্রতিনিধিদের স্বীকৃতি দিলে তালেবান ও জান্তা আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে এক ধাপ এগিয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে তা হতে দিল না জাতিসংঘ। যদিও ক্ষমতায় আসার পর থেকেই তালেবান ও মিয়ানমারের জান্তা সরকার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
জাতিসংঘের ক্রেডেনশিয়াল কমিটির সদস্যদেশের সংখ্যা ৯। এর মধ্যে রাশিয়া, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রও রয়েছে। বর্তমানে এই কমিটির নেতৃত্ব দিচ্ছে সুইডেন। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে এই বৈঠক বসেছিল। যেখানে জাতিসংঘের বর্তমান ৭৬তম অধিবেশনে ১৯৩ সদস্যরাষ্ট্রের সদস্যপদ নিয়ে আলোচনা করা হয়।