সুদানে অনাহারে প্রতি ঘণ্টায় দুই শিশুর মৃত্যু
![সুদানে অনাহারে প্রতি ঘণ্টায় দুই শিশুর মৃত্যু](/Uploads/Images/News/2024/2/Image-31437-20240212091317.webp)
দেশটির আধা সামরিক বাহিনী এবং সেনাবাহিনীর মধ্যে গৃহযুদ্ধ শুরুর দশ মাসের মাথায় তীব্র মানবিক সংকটের কবলে দেশটি। জাতিসংঘের অনুমান অনুযায়ী প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ মানুষ তীব্র ক্ষুধার মুখোমুখি হচ্ছেন।
গত বছরের এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া সংঘাত, সহিংসতায় তীব্র দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে আফ্রিকার দেশ সুদানে। দেশটিতে অপুষ্টি ও ক্ষুধার কারণে প্রতি ঘণ্টায় দুইজন করে শিশুর মৃত্যু হচ্ছে বলে জানিয়েছে দাতব্য সংস্থা ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস।
বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ও বিশেষজ্ঞদের বরাতে এ খবর জানিয়েছে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা।
দেশটির আধা সামরিক বাহিনী এবং সেনাবাহিনীর মধ্যে গৃহযুদ্ধ শুরুর দশ মাসের মাথায় তীব্র মানবিক সংকটের কবলে দেশটি। জাতিসংঘের অনুমান অনুযায়ী প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ মানুষ তীব্র ক্ষুধার মুখোমুখি হচ্ছেন। গত বছরের তুলনায় এই সংখ্যা দ্বিগুণ।
এছাড়া সারা দেশে সাম্প্রতিক সময়ে ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউট অর্থ আদান-প্রদানে বাধাপ্রাপ্ত করে সংকটকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। বিশেষ করে দেশের বড় একটি অংশ প্রবাসীদের পাঠানো অর্থের উপর নির্ভর করে।
আবারও হাসপাতালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রীআবারও হাসপাতালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী
৫ ফেব্রুয়ারী ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস জানায় যে উত্তর দারফুরের জমজম শরণার্থি শিবিরে অনাহারে ও খাবারের অভাবে প্রতি ঘন্টায় দুটি করে শিশু মারা যায়।
ফ্লেচার স্কুল অফ ল অ্যান্ড ডিপ্লোমেসির ওয়ার্ল্ড পিস ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক এবং দুর্ভিক্ষ বিষয়ক বিশেষজ্ঞ অ্যালেক্স ডি ওয়াল বলেন, ‘বর্তমানে যে পরিমাণ খাদ্য সংকট রয়েছে দেশটিতে সেটি যদি স্থায়ী হয় তাহলে আগামী বছরের মধ্যে কয়েক লাখ শিশু সেখানে মারা যাবে’।
দিন দিন খাদ্য সংকট বৃদ্ধির কারণে মানবিক বিপর্যয় এড়াতে বিভিন্ন সংস্থাগুলো সুদান এবং দেশটির শরণার্থীদের সাহায্যকারী দেশগুলিতে ৪০০ কোটি ডলার তহবিলের আহ্বান জানিয়েছে।
ডক্টরস উইদাউট বর্ডারসের মেডিকেল দলের নেতা ইমানুয়েল বারবেইন বলেন, বর্তমান যুদ্ধের শুরুতে নিরাপত্তাহীনতার কারণে জাতিসংঘের অনেক সংস্থা এবং ত্রাণ গোষ্ঠী এই অঞ্চলে সাহায্য বন্ধ করে দিয়েছে যার কারণে দারফুরের বেসামরিক নাগরিকরা তীব্র ক্ষুধার কবলে পড়েছে।‘
এছাড়া দক্ষিণ ও মধ্য দারফুরের সাম্প্রতিক সহিংসতা থেকে পালিয়ে আসা হাজার হাজার মানুষ জমজম, বারবাইনে আশ্রয় শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘পানিবাহিত রোগের কারণেও সারা দেশে অপুষ্টির চরম মাত্রার সৃষ্টি হচ্ছে। বিশেষ করে শিশুরা সপ্তাহের পর সপ্তাহ ধরে ডায়রিয়ায় ও পানিবাহিত রোগে ভুগছে।‘
২০০৩ সালে দারফুরের প্রথম বড় গৃহযুদ্ধের সময় জমজম শরণার্থি শিবিরটি স্থাপিত হয়। বর্তমান যুদ্ধের আগে থেকেই শিবিরটিতে প্রায় ৪ লাখ মানুষের বাসস্থান।
নেদারল্যান্ডসভিত্তিক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ক্লিনজেনডেল ইনস্টিটিউটে তথ্য মতে, সুদানে যুদ্ধের কারণে খাদ্যের প্রাপ্যতা এবং মানুষের কেনার ক্ষমতা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বিশেষ করে দেশটির আধা সামরিক বাহিনী সারাদেশ থেকে পরিকল্পিতভাবে সাহায্য গুদাম, ব্যাংক, গাড়ি, বাড়ি এবং গয়না লুট করেছে। এতে করে পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে।