৩ ডিসেম্বর পাক-ভারত সরাসরি যুদ্ধ
রাশিয়ার ভূমিকায় কোণঠাসা হয় পাকিস্তান!

মাত্র ১৩ দিনে ৯০ টি সফল অভিযান চালায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনী
একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন ছিলো ৩ ডিসেম্বর। এদিন ভারতের বিমানঘাটিতে আক্রমনের মধ্য দিয়ে সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে পাকিস্তান। ৩ ডিসেম্বর বিকেলে ভারতের অমৃতসর, পাঠানকোর্ট, শ্রীনগর, অবনত্মীপুর, উত্তরালইসহ আগ্রার বিমান ঘাঁটিতে আক্রমণ করে পাকিস্তানের যুদ্ধবিমান, যা কিনা পরবর্তীতে যুদ্ধের মোড়ই ঘুরিয়ে দেয়।
এ হামলার পর তৎকালীন পরাশক্তি সোভিয়েত ইউনিয়ন জানায়, বাংলাদেশ সম্পূর্ণ স্বাধীন না হওয়া পর্যন্ত নিরাপত্তা পরিষদে যেকোনো যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভেটো দিবে তারা।
ভারতে সরাসরি আক্রমণের উদ্দেশ্য ছিলো, মুক্তিযুদ্ধকে পাক-ভারতের মধ্যেকার যুদ্ধ বলে প্রমাণ করা। এটি করা গেলে জাতিসংঘের অধীনে নিরাপত্তা বাহিনী প্রবেশ ও যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাস করানো যেত। এতে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিষয়টি চাপা পরে দুই দেশের যুদ্ধের বিষয়টিই মূখ্য হয়ে উঠতো।
শুধু পাকিস্তানের অভ্যন্তরিন বিষয় বলে আগের দু-দুবার নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছিলো রাশিয়া। বিষয়টি পাকিস্তানের জন্য ছিলো বিরক্তিকর।
এর আগে সেপ্টেম্বরের ২৮ তারিখেই ভারতীয় বিমান বাহিনীর সহায়তায় একটি অটার বিমান, একটি ড্যাকোটা বিমান ও একটি অ্যালুয়েট হেলিকপ্টার এবং ৫৭ জন বাঙালি বৈমানিক নিয়ে গঠিত হয়েছিলো বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ছোট একটি ইউনিট। নাম ছিলো ‘কিলো ফ্লাইট’।
এই হামলার জবাবে ৪ ডিসেম্বর থেকে ভারতীয় বিমান বাহিনী পাকিস্তানী সেনা ক্যাম্পগুলোতে বোমা হামলা শুরু করলে এতে অংশ নেয় কিলো ফ্লাইট এর বৈমানিকরা। আর এটিই ছিলো মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রথম আক্রমন। প্রথম অপারেশন চালাতে শুরু করে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী।
১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জন পর্যন্ত এই ‘কিলো ফ্লাইট’ ইউনিট ৯০ টি অভিযান এবং ৪০ টি যুদ্ধ মিশন পরিচালনা করে।