দুই বছর পর ১১ জানুয়ারি ডিসি সম্মেলন শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক: অবশেষে দুই বছর পর ডিসি সম্মেলন হতে যাচ্ছে। আগামী ১১, ১২ ও ১৩ জানুয়ারি সম্মেলনের তারিখ চূড়ান্ত করা হয়েছে। ২০২০ সালে করোনার কারণে ডিসি সম্মেলন হয়নি। ২০২১ সালের শেষের দিকে ডিসি সম্মেলনের জন্য প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন হলেও শেষ মুহূর্তে তা স্থগিত করা হয়।
এ দফায়ও ডিসি সম্মেলন নিয়ে সংশয় ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর সবুজ সংকেত পাওয়ায় সম্মেলনের তারিখ চূড়ান্ত হয়েছে। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।
জানা গেছে, সপ্তাহ দুয়েক আগে ডিসি সম্মেলনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সারসংক্ষেপ পাঠায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। কিন্তু সম্মেলন অনুষ্ঠানের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে সিদ্ধান্ত আসছিল না।
গত সপ্তাহের শেষদিকে তারিখ চূড়ান্ত না করে সুবিধাজনক সময়ে ডিসি সম্মেলন অনুষ্ঠানের সম্মতি আসে। এতে ডিসি সম্মেলনের প্রস্তুতিতে কিছুটা ভাটা পড়ে। রোববার সরকারপ্রধানের তরফ থেকে ডিসি সম্মেলনের তারিখের বিষয়ে সম্মতি আসে। এরপর থেকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা তৎপর হয়ে ওঠেন। দুই বছর পর ডিসি সম্মেলন অনুষ্ঠানের খবর জেনে উৎফুল্ল ডিসিরাও।
তারা বলছেন, ডিসি সম্মেলনের সময় সরকার ও রাষ্ট্রের শীর্ষ ব্যক্তিদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলার সুযোগ হয়। মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের জন্য এটা বিরাট এক পাওয়া। তবে এ বিষয়ে হতাশাও আছে কারও কারও মধ্যে। কারণ এবারের সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী সরাসরি উপস্থিত না থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করবেন। এতে ডিসি সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানের যে জৌলুস তার অনেকটাই ম্লান হবে বলে মনে করেন কোনো কোনো ডিসি।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে ডিসি সম্মেলনের উদ্বোধন হয়ে থাকে সাধারণত এবং প্রধানমন্ত্রী সরাসরি অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। এতে কয়েকজন ডিসি মাঠ প্রশাসনের বর্তমান পরিস্থিতি ও ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনার ওপর নিজেদের মতামত তুলে ধরেন। পরবর্তী সময়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে কার্য-অধিবেশন শুরু হয়। এসব অধিবেশনে একক বা একাধিক মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে একটি করে কার্য-অধিবেশন হয়।
৫৬টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মন্ত্রী-সচিবসহ সব বিভাগীয় কমিশনাররা উপস্থিত থাকেন। এসব অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। এবার প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়ালি ডিসি সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করবেন। তাই অনুষ্ঠানটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত না হয়ে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে হবে। মিলনায়তনে সব ডিসি, জনপ্রশাসন সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত থাকবেন। এরপর কার্য-অধিবেশনগুলো মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে অনুষ্ঠিত হবে।
২০১৯ সালে প্রথমবারের মতো পাঁচ দিন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এরপর পর্যায়ক্রমে পাঁচ দিনব্যাপী সম্মেলন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা ছিল। তিন দিনের সম্মেলনে ২৫ থেকে ৩০টি বৈঠক হয়। অল্প সময়ে এত বৈঠক নিয়ে জেলা প্রশাসকদের আপত্তি ছিল। বিষয়টি আমলে নিয়ে সেবার পাঁচ দিনের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতের পাশাপাশি স্পিকার ও প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাতের রেওয়াজও যুক্ত করা হয়। এবার করোনার কারণে আবারও তিন দিনের ডিসি সম্মেলন হতে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী ছাড়া রাষ্ট্রপতি, স্পিকার ও প্রধান বিচারপতির সঙ্গে বৈঠকও ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (জেলা ও মাঠ প্রশাসন অধিশাখা) জিল্লুর রহমান চৌধুরী ছুটিতে থাকায় এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল সূত্র যুগান্তরকে জানান, প্রথমে সুবিধাজনক সময়ে সম্মেলনের প্রস্তুতি নিতে বললেও রোববার উচ্চ পর্যায় থেকে প্রস্তাবিত তারিখেই সম্মেলন অনুষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু করতে বলা হয়েছে।