স্বাস্থ্য, শিক্ষায় দ্বৈত কর পরিহার চুক্তিতে বাংলাদেশ-মালদ্বীপ

  বাংলাদেশের কথা ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ সকাল ১০:৩১, শুক্রবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২১, ৯ পৌষ ১৪২৮
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইবরাহিম মোহাম্মদ সলিহ
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইবরাহিম মোহাম্মদ সলিহ

নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে দুই দেশের মধ্যে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, দ্বৈত কর পরিহার এবং যুব ও ক্রীড়া ক্ষেত্রে তিনটি চুক্তি স্বাক্ষরিত এবং একটি চুক্তি নবায়ন করা হয়েছে। গতকাল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইবরাহিম মোহাম্মদ সলিহর মধ্যে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা শেষে উভয় নেতার উপস্থিতিতে প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ে এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও মালদ্বীপের স্বাস্থ্যমন্ত্রী আহমেদ নাসিম দক্ষ স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগের ওপর সমঝোতা স্মারকে সই করেন। এছাড়া বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন ও মালদ্বীপের যুব, ক্রীড়া ও কমিউনিটি ক্ষমতায়নমন্ত্রী আহমেদ মাহলুফ বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের মধ্যে যুব ও ক্রীড়া উন্নয়নে সহযোগিতার ওপর নিজ নিজ দেশের পক্ষে একটি সমঝোতা স্মারকে সই করেন।

বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম ও কমিশনার-জেনারেল অব ট্যাক্সেশন অব মালদ্বীপ ইনল্যান্ড রেভিনিউ অথরিটি (এমআইআরএ) ফাতুহুল্লাহ জামিল মালদ্বীপ ও বাংলাদেশের মধ্যে আয়করের ক্ষেত্রে দ্বৈত কর বাতিল এবং কর এড়ানো রোধে নিজ নিজ দেশের পক্ষে একটি চুক্তিতে সই করেন।

এছাড়াও বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্যসেবা ও চিকিৎসাবিজ্ঞানের বিভিন্ন ক্ষেত্রের ওপর নিজ নিজ দেশের পক্ষে একটি সমঝোতা স্মারক নবায়ন করেন। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও মালদ্বীপের স্বাস্থ্যমন্ত্রী আহমেদ নাসিম নবায়নকৃত সমঝোতা স্মারক বিনিময় করেন।

অনুষ্ঠানে দক্ষিণ এশিয়ার দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বের প্রতীক হিসেবে মালদ্বীপকে ১৩টি সামরিক যান উপহার দেয় বাংলাদেশ। বাংলাদেশের পক্ষে চিফ অব আর্মি স্টাফ জেনারেল এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ মালদ্বীপের চিফ অব ডিফেন্স ফোর্স মেজর জেনারেল আব্দুল্লাহ শামালের কাছে সামরিক নৌযানের চাবি প্রতীকী হস্তান্তর করেন।

স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের পর বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী ও মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট যৌথ ব্রিফিংকালে পৃথক বক্তব্য প্রদান করেন। ব্রিফিংকালে দুই নেতা বলেন, দুদেশের মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও যোগাযোগ বৃদ্ধিতে তাদের মধ্যে ফলপ্রসূ দ্বিপক্ষীয় আলোচনা হয়েছে। যৌথ ব্রিফিংকালে বৈঠকের ফলাফল সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, আমি আপনাদের জানাতে পেরে খুব খুশি যে আমাদের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সার্বিক ক্ষেত্রে একটি অত্যন্ত ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। আমাদের পূর্ববর্তী সিদ্ধান্তের ওপর পর্যালোচনা করেই আমরা অগ্রসর হয়েছি এবং একটি সন্তোষজনক ফলাফল পেয়েছি।

তিনি বলেন, সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলাসহ বহুমুখী ফোরামে সহযোগিতার ব্যাপারেও তাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।

যৌথ ব্রিফিংকালে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইবরাহিম মোহাম্মদ সলিহ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে উল্লেখ করে বলেন, বাণিজ্য ও বিনিয়োগে আমাদের যোগাযোগ জোরদারের বিষয়টি তুলে ধরেছি।

অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রগুলোতে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আমার মধ্যে এবার আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়েছে এবং এ সময় আমরা গত মার্চে আমাদের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের অগ্রগতি পর্যালোচনা করেছি।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ে পৌঁছলে প্রেসিডেন্ট ইবরাহিম মোহাম্মদ সলিহ তাকে লালগালিচা সংবর্ধনা দেন। এ সময় শেখ হাসিনাকে গার্ড অব অনার প্রদান ও গান স্যালুট দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানানো হয়। প্রধানমন্ত্রী উভয় দেশের লাইন অব প্রেজেন্টেশনও পরিদর্শন করেন। শেখ হাসিনা প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ে রক্ষিত দর্শনার্থী বইয়ে স্বাক্ষর করেন এবং সেখানে ফটো সেশনে অংশ নেন।

গত বুধবার স্থানীয় সময় বিকালে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ভিভিআইপি বিশেষ ফ্লাইটে প্রথমবারের মতো ছয়দিনের দ্বিপক্ষীয় সফরে মালদ্বীপের রাজধানী মালে পৌঁছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বিষয়ঃ বাংলাদেশ

Share This Article