পাকিস্তানি লেখকের দৃষ্টিতে ভারত-পাকিস্তানের চেয়ে ধনী বাংলাদেশ!

মোহাম্মাদ এনামুল হক এনা: বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছরপূর্তি উপলক্ষে পাকিস্তানের দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল পত্রিকায় একটি কলাম লিখেছেন সাংবাদিক ও কলামিস্ট কুমেইল সুমরো। সম্প্রতি প্রকাশিত ওই কলামে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরে পাকিস্তানের সঙ্গে তুলনা করেছেন তিনি।
সুমরো লিখেন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ আখ্যা পাওয়া বাংলাদেশ ৫০ বছরের মধ্যে এসে বিভিন্ন সূচকে পাকিস্তানের চেয়েও এগিয়ে গেছে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের চেয়ে ৭০ শতাংশ ধনী ছিল পাকিস্তান। মাত্র ৫০ বছরের ব্যবধানে পাকিস্তানের চেয়ে ৪৫ শতাংশ ধনী দেশে রুপান্তরিত হয়েছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের ২০২১ সালে অর্থনীতির আকার ৩২২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারসহ মাথাপিছু আয় ২ হাজার ২২৭ ডলার। আর পাকিস্তানের মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৫৪৩ ডলার। মাথাপিছু আয়ের হিসাবে ভারতের চেয়েও ধনী বাংলাদেশ। ভারতের মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৯৪৭ ডলার।
২০১৮ সালে মানব উন্নয়ন সূচকে বাংলাদেশের পয়েন্ট ছিল দশমিক ৬০৮ অন্যদিকে পাকিস্তানের পয়েন্ট ছিল দশমিক ৫৬০। এদিক থেকেও পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ। আয় বৈষম্য কমানো দেশগুলোর মধ্যেও বাংলাদেশ অন্যতম। আর আয় বৈষম্যের কারণে পাকিস্তান ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কুমেইল সুমরো।
কুমেইল সুমরো লেখেন, ১৯৭২ সালে বিদেশি সাহায্যের ওপর যেখানে বাংলাদেশের ৮৮ শতাংশ নির্ভরতা ছিল, ২০১০ সালেই তা কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ২ শতাংশে। আর পাকিস্তানের অর্থনীতি এখনও অনেকাংশেই বিদেশি সাহায্যনির্ভর।
গত এক দশকে রপ্তানি খাতে বাংলাদেশের বার্ষিক বৃদ্ধির হার ছিল ৭ শতাংশ। আর এই খাতে ৮৪ শতাংশই এসেছে তৈরি পোশাক থেকে। এই তুলনায় পাকিস্তান ও ভারত বাংলাদেশের পেছনে। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নারীর অংশগ্রহণও নিরবচ্ছিন্নভাবে বাড়ছে। আর এ ক্ষেত্রে বিপরীত চিত্র দেখা যাচ্ছে ভারত ও পাকিস্তানে।
বাংলাদেশ সরকারি ঋণের পরিমাণ জিডিপির ৩০ থেকে ৪০ শতাংশের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে সক্ষম হয়েছে। বিপরীতে ভারত ও পাকিস্তান উভয় দেশেরই এর পরিমাণ জিডিপির প্রায় ৯০ শতাংশ। বাংলাদেশের এমন অভূতপূর্ব উত্থান পাকিস্তানের জন্য বড় একটি শিক্ষা। এ থেকেই তারা বুঝতে পারবে গত পাঁচ দশকে পাকিস্তান কী কী ভুল করেছে এমন মত দেন দেশটির এই বুদ্ধিজীবী।