পাখিদের কলকাকলিতে মুখর বাফলা জলাশয়

নীলফামারী প্রতিনিধি:
শীতের অতিথি পরিযায়ীরা এবার নীলফামারীর বিভিন্ন জলাশয়ে আশ্রয় নিয়েছে। মঙ্গলবার দেখা যায় বাফলা নামক জলাশয়ে পরিযায়ীদের সব থেকে বেশি আনাগোনা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ জেলার কিশোরীগঞ্জ উপজেলার রনচ-ি ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রামের এই জলাশয়টি অতিথি পরিযায়ীদের যেন নিরাপদ আশ্রয় স্থলে পরিণত হয়েছে। ঝাঁকে ঝাঁকে পরিযায়ীদের আগমনে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষে সেখানে চৌকিদার নিয়োজিত করে পাখি শিকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে পরিযায়ী দেখতে সেখানে মানুষজন ভিড় করছে। পাখিদের কিচির মিচির ডাক যেন জলাশয়কে জলসা ঘরে পরিণত করেছে।
আশপাশের গ্রামের মানুষজন জানায় এখন ভোর হলেই পাখির কলরব কানে ভেসে আসে। বলতে গেলে রোজ ঘুম ভাঙ্গে এসব পাখির কিচির মিচির শব্দে। ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখি এসে পড়ছে বিলের জলাশয় ও হাফিজ উদ্দিন স্বপনের মৎস্য খামারে।
স্থানীয়রা জানায়, এ পাখিগুলো শীত প্রধান দেশে টিকতে না পারায় প্রতিবছর শীতের আগমনে এখানে আসে বাসা বাঁধে এবং ছানা ফুটিয়ে বড় করে তারপর বসন্তে উত্তরে উড়াল দেয়। অতিথি পাখির পাশাপাশি পানকৌড়ি, চাপাখি, টুনটুনি, দোয়েল, শালিক, রাতচরা, কানা বক, সাদা বক, ধূসর বক, মাছরাঙ্গাসহ নাম না জানা অনেক প্রজাতির পাখির পসরাও বসে নিত্যদিন।
জানা যায়, সরকারী এই বিশাল জলায়তন বাফলার বিলের একাংশ দখলমুক্ত ও খনন করে গড়ে তোলা হয়েছে মৎস্য অভয়াশ্রম। পাশেই ১০০ বিঘা এলাকাজুড়ে মৎস্য খামার। বিশেষ করে দেখা যায়, ওই খামারের মাছ রক্ষায় এর চার পাশ বাঁশের বেড়া (বানা) ও জাল দিয়ে, নিরাপদ বেষ্টনী গড়ে তোলা হয়েছে। খামারের এমন নিরাপদ বেষ্টনীকে নিরাপদ আবাসস্থল মনে করছে পরিযায়ীরা। তাই ওই খামারে পাখ-পাখালির এমন নিবিড় আত্মীয় ভাবাপন্ন আপন করা মায়াবী জালে আটকা পড়েছে শতশত পরিযায়ী।
মৎস্য খামারের মালিক হাফিজ উদ্দিন স্বপন জানান, আমি নিজে এবাং বাফলা গ্রামের মানুষ প্রকৃতিপ্রেমী, পাখিপ্রেমী। এ কারণেই পাখির অভয়ারণ্য এ বাফলার বিল। তিনি আরও জানান, খামারসহ বিলে পাখির নিরাপত্তা রক্ষায় সচেনতামূলক কার্যক্রমের পাশাপাশি পাখিদের যেন কেউ ক্ষতি না করে সেজন্য খামার তত্ত্বাবধায়ক সার্বিকভাবে দায়িত্ব পালন করছি। তবে এই এলাকাকে সরকারীভাবে পাখির অভয়ারণ্য ঘোষণা করা হলে শীত মৌসুমে পাখিদের ভিড় আরও বাড়বে।
রণচণ্ডি ইউপি চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান জানান, একসঙ্গে এত পাখির আনাগোনা এর আগে দেখিনি। দলে দলে শীতের এই পাখিগুলো এখানে ছুটে আসছে। বিশেষ করে এ বিলে অতিথি পাখি শিকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সেখানে চৌকিদার দিয়ে পাহারা বসানো হয়েছে। এখানে সরকারী পৃষ্টপোষকতার প্রয়োজন। কারণ পরিযায়ী অতিথি পাখি দেখতে এখানে বিভিন্ন এলাকার মানুষজন ছুটে আসছে।