চীন, ভারত ও আমেরিকা : কাকে বেশি প্রয়োজন বাংলাদেশের

  বাংলাদেশের কথা ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ বিকাল ০৩:৪২, মঙ্গলবার, ৩১ মে, ২০২২, ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৯

বিশ্বজুড়েই চলছে আধিপত্যের লড়াই। বিশ্বের বড় বড় শক্তিধর দেশগুলো একে অপরকে পরাস্ত করতে এগোচ্ছে নানান কৌশলে। আর প্রতিটি শক্তিশালী দেশই চাচ্ছে অপেক্ষাকৃত ছোট ও কম শক্তির দেশগুলো এই লড়াইয়ে তাদের সঙ্গী হোক।

এ লড়াইয়ের সঙ্গী হওয়ার যন্ত্রণা থেকে বাঁচতে ছোট দেশগুলোও নানান কৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে। সেই কৌশলাশ্রয়ী দেশগুলোর একটি হচ্ছে বাংলাদেশ। যাকে কাছে টানতে হাত বাড়িয়ে রেখেছে ভারত চীন আমেরিকা।  এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থান।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় প্রভাব বিস্তার করতে আমেরিকাকে পাশে পেয়েছে ভারত ৷  ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্কের জেরে আমেরিকাও চাইছে চীনবিরোধী অবস্থানে থাকুক বাংলাদেশ।

তবে বাংলাদেশের উন্নয়নের সবচেয়ে বড় সহযোগী চীন। চীন বাংলাদেশকে এ পর্যন্ত প্রায় ২৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিয়ে রেখেছে, যা প্রয়োজন মতো ব্যবহার করছে বাংলাদেশ। এছাড়া আরও ১৫ বিলিয়ন ডলার দেয়ার অঙ্গীকারও করেছে চীন। এ ক্ষেত্রে চীনবিরোধী অবস্থানে যাওয়া বাংলাদেশের পক্ষে সম্ভব না।  

অস্ট্রেলিয়া, ভারত, জাপান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি কৌশলগত জোট গড়ে উঠেছে যার নাম কোয়াড। কোয়াডের সদস্য হওয়ার জন্য বাংলাদেশকে যথেষ্ট চাপের মুখে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে চীন কোয়াডকে এশিয়ার ন্যাটো বলে উল্লেখ করেছে। এমনকী এখানে যুক্ত হওয়া বাংলাদেশের জন্য ভালো হবে না বলেও মনে করে দেশটি।  

এই প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন বলেন, এটা শুধু বাংলাদেশের সমস্যা না, মালয়েশিয়া, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলংকা ও নেপালও এই সংকটে আছে ৷ সেই অবস্থায় কোনো কোনো দেশ অনেক বেশি চীনমুখী হয়ে পড়ছে ৷ কোন কোন দেশ ভারত বা কোয়াডমুখি হচ্ছে ৷


তবে শেষ পযন্ত যদি কোন পক্ষ নিতে হয় তাহলে বাংলাদেশ কোন পক্ষ নেবে?

বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশ কোয়াডে যুক্ত না হলেও মার্কিন প্রভাব এড়িয়ে যাওয়ার উপায় নেই। বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের বড় ক্রেতা যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়াও অর্থনীতি ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বড় অংশীদার যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশের ওপর নানা রকম চাপ সৃাষ্টির ক্ষমতাও রয়েছে দেশটির।

কোয়াডের আরেক সদস্য ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক ঐতিহাসিক। ভারত বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রতিবেশি দেশ হওয়ায় অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সম্পর্ক ছাড়াও দুই দেশের জনগণের মধ্যে ভাষা ও সংস্কৃতিগত গভীর সম্পর্ক রয়েছে। এক্ষেত্রে কোন পক্ষকে একেবারে দূরে সরিয়ে অন্য পক্ষকে কাছে টানা সম্ভব না।

এ পরিস্থিতিকে বাংলাদেশের জন্য ‘উভয় সংকট’বলছেন কূটনীতি বিশ্লেষকরা ৷ তাদের দাবি, বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান উন্নয়নকে গতিশীল রাখা আর রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে চীনের বিকল্প নেই বাংলাদেশের সামনে৷ আর বিশ্ব রাজনীতি, পশ্চিমা বাণিজ্য সব দিক মাথায় রেখে যুক্তরাষ্ট্র ও প্রতিবেশি রাষ্ট্র ভারতকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ারও পথ নেই বাংলাদেশের৷

এমন বাস্তবতায় কূটনীতিকরা বলছেন, ভারসাম্য সুরক্ষা করাটা হবে সবচেয়ে জরুরি৷ কোনো বলয়ের মধ্যে আটকে না থেকে, ভূ-রাজনৈতিক অবস্থানের যে কৌশলগত সুবিধা বাংলাদেশের হাতে আছে, সেটাকে পুঁজি বানাতে হবে, করতে হবে ‘বার্গেইনিং টুল৷’কেননা বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতি হচ্ছে, সবার সঙ্গেই বন্ধুত্ব কারো সাথে বৈরিতা নয়।

আর এ ক্ষেত্রে বেশ দক্ষতার পরিচয় দিয়ে আসছে বর্তমান সরকার। বাংলাদেশ অত্যন্ত সাবধানে সব পক্ষের সঙ্গেই সমানতালে কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে। শুধু তাই নয়, অনেকে বলছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুকৌশলে এই দেশগুলোকেই বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী করে রেখেছে। সম্পর্কের এমন ভারসাম্য এখন পযন্ত খুব কম দেশই বজায় রাখতে পারছে। আর এটিই বাংলাদেশের জন্য সঠিক কক্ষপথ বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

Share This Article


‘রাতেই বাসা-বাড়িতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট চালু হতে পারে’

‘রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণাকারীদের আইনের আওতায় আনা হবে’

চার দফা না মানলে আট দফা নিয়ে কথা বলার সুযোগ নেই

প্রাথমিক বিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা

ইউনূসের বিবৃতি রাষ্ট্রবিরোধী

তালিকা হচ্ছে গা-ঢাকা দেওয়া আওয়ামী লীগ নেতাদের

আত্মগোপনে বিএনপি নেতা-কর্মীরা

কোটা পদ্ধতির যৌক্তিক সংস্কার আনা এখন সময়ের দাবি: আরেফিন সিদ্দিক

আন্দোলনকারীদের থেকে ইতিবাচক বার্তা পেয়েছি: তথ্য প্রতিমন্ত্রী

নিরাপত্তার স্বার্থে শিক্ষার্থীদের নিজগৃহে অবস্থানের অনুরোধ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের

‘কোটা সংস্কার নিয়ে প্রয়োজনে সংসদে আইন পাস হতে পারে’

মহাসড়ক অবরোধ করে রাবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ