রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ: যে সমস্যায় বাংলাদেশ

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বজুড়ে খাদ্যশস্যের বাজার ব্যাপক অস্থির হয়ে উঠেছে। প্রতিদিনই দাম বাড়ছে খাদ্যপণ্যে। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও এর প্রভাব পড়েছে।
ভোজ্যতেলে মূল্য বৃদ্ধি :
বিশ্বজুড়ে যেসব ভোজ্যতেল ব্যবহার হয় তার প্রায় ৭৫ শতাংশই আসে ইউক্রেন এবং রাশিয়া থেকে।
যদিও বাংলাদেশে ভোজ্যতেলের বেশিরভাগই আমদানিকৃত পাম এবং সয়াবিন থেকে আসে। তবে যুদ্ধের কারণে এই সরবরাহ ব্যবস্থা বিঘ্নিত হওয়ায় বিশ্বজুড়ে ভোজ্যতেলের দাম বৃদ্ধির পাশাপাশি বাংলাদেশেও তা বেড়েছে।
গম আমদানি বিঘ্নিত:
ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট-এর মতে, বাংলাদেশ তার চাহিদার ৮০ শতাংশ গম আমদানি করে। এর অর্ধেক আসে ইউক্রেন এবং রাশিয়া থেকে।
তবে সরবরাহ ব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত হওয়ার কারণে গমের দাম বেড়েছে। ফলে বাংলাদেশে আটা-ময়দার দামও বেড়েছে। সেই সঙ্গে আটা-ময়দা দিয়ে তৈরি খাদ্যর দামও কিছুটা বেড়ে গেছে।
হাঁস-মুরগির খাবারের দাম বৃদ্ধি :
পোল্ট্রি ফিড উৎপাদনের ৬০ শতাংশ উপকরণ আমদানি করতে হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় উপকরণ হচ্ছে ভুট্টা।
বিশ্ববাজারে ইউক্রেন ১৬ শতাংশ ভুট্টা সরবরাহ করে।
যেহেতু ইউক্রেন থেকে ভুট্টা সরবরাহ আসতে পারছে না সেজন্য বিশ্বজুড়ে পোল্ট্রি ফিড-এর দাম বেড়েছে। এর ফলে বাংলাদেশের বাজারেও মুরগি ও ডিমের দামও বেড়েছে।
সার আমদানি খরচ বৃদ্ধি :
বিশ্ববাজারে সিংহভাগ সার রপ্তানির ক্ষেত্রে রাশিয়া এবং বেলারুশের ভূমিকা রয়েছে। রাশিয়ার ওপর রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কারণে তার প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশেও।
বাংলাদেশ রাশিয়া থেকে সার আমদানি করে। সেটা ব্যাহত হলে ভিন্ন কোন উৎস দেখতে হবে। এতে কৃষিখাতে খরচ বাড়ার শঙ্কা রয়েছে।
জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি :
রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধের সবচেয়ে ভয়াবহ প্রভাব।পড়েছে জ্বালানি তেলের ওপর।বিশ্ববাজারে তেল-গ্যাস সরবরাহের ক্ষেত্রে রাশিয়া বেশ গুরুত্বপূর্ণ। যুদ্ধের কারণে বিভিন্ন দেশেই জ্বালানি তেলের দাম হু হু করে বেড়েছে,তবে দেশে এখনও জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি না হলেও অচিরেই তার আশঙ্কা রয়েছে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, আসছে বাজেটে জ্বালানি তেলের ভর্তুকির জন্য সরকারকে অনেক টাকা গুণতে হবে। অন্যথায় তেলের দাম বাড়াতে হবে। কিন্তু তেলের দাম বাড়লে দ্রব্যমূল্য আরও বাড়বে।