২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করতে ‘কক্সবাজার ঘোষণাপত্র’

  বাংলাদেশের কথা ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ সন্ধ্যা ০৭:০৬, শুক্রবার, ২০ মে, ২০২২, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৯

কক্সবাজার প্রতিনিধি:
২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করতে বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনসহ ১৬ দফার 'কক্সবাজার ঘোষণাপত্র' ঘোষণা করেছেন ৪০ জন সংসদ সদস্য। তিন দিনব্যাপী '২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জন’ শীর্ষক কনফারেন্সের শেষ দিন শুক্রবার কক্সবাজারের রয়েল টিউলিপ হোটেলে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে সংসদ সদস্যরা এই ঘোষণাপত্র দেন।

‘বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরাম ফর হেলথ অ্যান্ড ওয়েলবিং’ এর আয়োজনে এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন ও ক্যাম্পেইন ফর ট্যোবাকো-ফ্রি কিডস বাংলাদেশের সহায়তায় অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্য ছিল প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত আগামী ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ বাস্তবায়নে করণীয় অনুসন্ধান ও বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ।

সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণাপত্রটি পাঠ করেন  পার্লামেন্টারি ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবে মিল্লাত এমপি।

এ সময় সরকারি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আ.স.ম ফিরোজ এমপি বলেন, ৪০ জন সংসদ সদস্য শুধুমাত্র তামাকের বিরুদ্ধে সম্মেলন করছে, এটা কেবল বাংলাদেশই নয়, সারা বিশ্বেই বিরল। আমরা সচেতনভাবে একমত হয়ে এই কক্সবাজার ঘোষণাপত্রে ১৬টি প্রস্তাবনা তুলে ধরেছি। আমরা চাই, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা বাস্তবায়নে এর সবগুলোই বাস্তবায়ন করা হোক।

শিরীন আখতার এমপি বলেন, তামাকের বিরুদ্ধে আমাদের এই লড়াই অব্যাহত থাকবে। আমরা বিভিন্ন প্রস্তাবনা পেশ করেছি আজকের ঘোষণাপত্রে। বিশেষ করে পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ও পাবলিক পরিবহনে ধূমপান বন্ধ করা এবং সিগারেটের সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তা ৯০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করাটা খুবই জরুরি।

এ সময় সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে বন উজাড় করে কক্সবাজারে তামাক চাষ বৃদ্ধির পরিস্থিতি সংসদ সদস্যদের নিকট তুলে ধরা হয়। পাশাপাশি, সুযোগ পেলে এ নিয়েও তাদের কাজ করার অনুরোধ জানানো হয়। উপস্থিত সংসদ সদস্যরা এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়ার এবং খুব শীগগিরিই সংশ্লিষ্ট পর্যায়ে চিঠি দেওয়ার আশ্বাস দেন।

‘কক্সবাজার ঘোষণাপত্রে’ প্রস্তাবিত ১৬টি প্রস্তাবনায় তামাক নিয়ন্ত্রণ নীতিতে বাংলাদেশকে বৈশ্বিকভাবে অসামঞ্জস্যপূর্ণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

এছাড়াও পাবলিক প্লেস এবং পাবলিক ট্রান্সপোর্টকে শতভাগ ধূমপানমুক্ত করা, ‘ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান’ বাতিল করা, তামাকপণ্যের বিক্রয়স্থলে পণ্য প্রদর্শন বন্ধ করা, খুচরা সিগারেট বিক্রি বন্ধ করাসহ তামাক কোম্পানিগুলির সমস্ত কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচি নিষিদ্ধ করার কথা বলা হয়।

এছাড়া তামাকপণ্যের মোড়কে স্বাস্ত্য সতর্কবার্তা ৯০ ভাগ পর্যন্ত বৃদ্ধি  করা, ই-সিগারেটসহ সকল হিটেড ট্যোবাকোর আমদানি, রপ্তানি, উৎপাদন, বিতরণ, বিক্রয় এবং বাজারজাতকরণের উপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা বলা হয়।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ তামাকপণ্য ব্যবহারে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে। বাংলাদেশ বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোলে (এফসিটিসি) স্বাক্ষরকারী প্রথম দেশ হলেও প্রতি বছর বাংলাদেশে তামাকজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ। পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হন ৩ লাখ ৮৪ হাজার মানুষ, যার মধ্যে ৬১ হাজারই শিশু।

সেই ধারাবাহিকতায়, ২০১৩ সালে সর্বশেষ সংশোধিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনে বেশ কিছু অসঙ্গতি বিদ্যমান; যা তামাকমুক্ত বাংলাদেশ বাস্তবায়নের অন্তরায়। সেই লক্ষ্যে তামাক নিয়ন্ত্রণ সংশোধন জরুরি বলে মনে করেন সংসদ সদস্যসহ সম্মেলনে অংশ নেওয়া বিশেষজ্ঞরা।

তিন দিনব্যাপী এই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সর্বমোট ৪০ জন সংসদ সদস্য। সম্মেলনে ভার্চুয়ালি অংশ নেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোনেম।

সম্মেলনের প্রথম ও দ্বিতীয় দিনে মোট তিনটি সেশনে সভাপতিত্ব করেন পার্লামেন্টারি ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবে মিল্লাত এমপি, অধ্যাপক ডা. আ.ফ.ম রুহুল হক এমপি, জনাব আ.স.ম  ফিরোজ এমপি।

এতে উপস্থিত ছিলেন ড. আব্দুস শহীদ এমপি , শহীদুজ্জামান সরকার এমপি, রওশন আরা এমপি, আরমা দত্ত এমপি, অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল আজিজ, অধ্যাপক মেরিনা জাহান কবিতা এমপি, বেগম শিরীন আখতার এমিপি, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী এমপি, অ্যাড. উম্মে কুলসুম স্মৃতি এমপি, আনোয়ারুল আবেদীন খান এমপি, মো. মো. আখতারুজ্জামান এমপি, বেগম শেরিফা কাদের এমপি, জনাব শিরীন আহমেদ, বেগম আদিবা আনজুম মিতা এমপি, ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল এমপি, বেগম হোসনে আরা এমপি, হাবিবা রহমান খান এমপি, নাদিরা ইয়াসমিন জলি এমপি, গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার এমপি, উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম এমপি, রত্না আহমেদ এমপি, শামিমা আক্তার খানম এমপি, জুয়েল আরেং এমপি, সানোয়ার হোসেন এমপি, জাকিয়া তাবাসসুম এমপি, আলী আজম মুকুল এমপি, নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন এমপি, হাফিজ আহমেদ মজুমদার এমপি, অ্যাড. সৈয়দা রুবিনা আক্তার এমপি, মনোয়ার হোসেন চৌধুরী এমপি, মাহফুজুর রহমান মিতা এমপি, জাফর আলম এমপি, আশেক উল্লাহ রফিক এমপি, কানিজ ফাতেমা আহমেদ এমপি, সায়মুম সরোয়ার কমল এমপি ও শবনম জাহান প্রমুখ।

বিষয়ঃ বাংলাদেশ

Share This Article


ফুটেজ দেখে জড়িতদের গ্রেফতার করা হচ্ছে

মেট্রো স্টেশন যেভাবে ধ্বংস করেছে, মানতে পারছি না: প্রধানমন্ত্রী

রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় নজিরবিহীন তাণ্ডব

কোটা সংস্কার আন্দোলনে মারা যাওয়াদের কারণ অনুসন্ধান করবে বিচার বিভাগীয় কমিশন

আন্দোলন নিয়ে ভারত সরকারকে ‘নোট’ দিয়েছে ঢাকা : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

‘রাতেই বাসা-বাড়িতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট চালু হতে পারে’

‘রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণাকারীদের আইনের আওতায় আনা হবে’

চার দফা না মানলে আট দফা নিয়ে কথা বলার সুযোগ নেই

প্রাথমিক বিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা

ইউনূসের বিবৃতি রাষ্ট্রবিরোধী

তালিকা হচ্ছে গা-ঢাকা দেওয়া আওয়ামী লীগ নেতাদের

আত্মগোপনে বিএনপি নেতা-কর্মীরা