টাকার অবমূল্যায়ন: কার লাভ কার ক্ষতি

  বাংলাদেশের কথা ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ দুপুর ০১:০৫, শনিবার, ১৪ মে, ২০২২, ৩১ বৈশাখ ১৪২৯
ফাইল ফটো
ফাইল ফটো

টাকার মান কি কমছে? নাকি ইচ্ছে করে কমানো হচ্ছে। সম্প্রতি মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। দুই মাসেরও কম সময়ের মধ্যে দ্বিতীয়বার টাকার অবমূল্যায়ন করলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কিন্তু কেন? চলুন তা জেনে নিই।

 

টাকার অবমূল্যায়ন কী?
ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমে যাওয়াই টাকার অবমূল্যায়ন। আগে এক ডলার কিনতে আশি টাকা লাগতো এখন এক ডলার কিনতে আটাশি টাকা লাগে। অর্থাৎ এক ডলার কিনতে এখন আরো আট টাকা বেশি লাগে। সেক্ষেত্রে ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমেছে শতকরা ০.১ ভাগ।

বিশ্বে ডলারের অবস্থান এখন কী?
বিশ্বে প্রচলিত মুদ্রার মধ্যে অন্যতম ‘ডলার’। গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই শক্তিশালী হচ্ছে এটি। গত বিশ বছরের মধ্যে ইউরোসহ অন্যান্য মুদ্রার তুলনায় সবচেয়ে শক্তিশালী অবস্থানে আছে ডলার, যার কারণে বিশ্বের অনেক মুদ্রাই তার মান হারাচ্ছে। প্রতিবেশি দেশ ভারতেও রুপির মানের রেকর্ড পতন হয়েছে। দেশেটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলারের বিপরীতে তাদের মুদ্রার মান সাড়ে ৭৭ রুপি করেছে।

টাকার অবমূল্যায়ন কত হলো?
২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের আগষ্ট পর্যন্ত আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দাম ৮৪.৮০ পয়সায় স্থিতিশীল ছিলো। তবে করোনা পরবর্তী অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করায় বাড়তে থাকে আমদানি। আর এরপর থেকে মার্কিন ডলারের বিপরীতে কমতে থাকে টাকার মান।
চলতি জানুয়ারিতে আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলার ৮৬ টাকায় বিক্রি হয়।

ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন:
১০ জানুয়ারি ২০২২- ৮৬ টাকা
২৩ মার্চ ২০২২- ৮৬.২০ পয়সা
২৭ এপ্রিল ২০২২- ৮৬.৪৫ পয়সা
০৯ মে ২০২২- ৮৬.৭০ পয়সা

এদিকে ব্যাংকগুলো ডলার বিক্রি করছে আরো বেশি দামে। আর খোলাবাজারে এক ডলার বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৯৩ টাকায়।

টাকার অবমূল্যায়নে কার লাভ কার ক্ষতি?
টাকার অবমূল্যায়ন হলে মূলত ক্ষতিতে পড়ে আমদানিকারকরা। কারণ সেক্ষেত্রে আমদানি করতে তাদের বেশি অর্থ গুনতে হয়। অন্যদিকে লাভবান হন রপ্তানিকারকরা। কারণ কম পণ্য রপ্তানি করে তারা বেশি অর্থ উপার্জন করতে সক্ষম হন। এছাড়া যারা বিদেশ থেকে রেমিটেন্স পাঠান তারাও টাকার অবমূল্যায়নে লাভবান হন।

টাকার অবমূল্যায়ন কেন করা হচ্ছে?
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা গেছে, গত নয় মাসে দেশে আমদানি বেড়েছে শতকারা ৪৪ ভাগ। আমদানি হয়েছে সাড়ে ৬১ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। আর একই সময়ে রপ্তানি হয়েছে সাড়ে ৩৬ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। সেক্ষেত্রে বাণিজ্য ঘাটতি প্রায় ২৫ বিলিয়ন ডলার। যাতে ব্যাংকগুলোতে দেখা দেয় ডলারের সংকট। আর এ সংকট কাটাতে গত ১০ মাসে বাজারে চার বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এদিকে ব্যাংকের চেয়ে খোলা বাজারে বেশি দামে ডলার বিক্রি হওয়ায় বৈধ চ্যানেলে রেমিটেন্স পাঠানো কমে গেছে। যাতে টান পড়েছে রিজার্ভে। আমদানি বেড়ে যাওয়ার কারণে সৃষ্টচাপ মোকাবেলা ও প্রবাসীদের বৈধ চ্যানেলে টাকা পাঠানোয় উৎসাহিত করতেই ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

অর্থনীতিবিদরা কি বলছেন?
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের টাকার অবমূল্যায়নকে স্বাগত জানিয়েছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান। তবে তা যথেষ্ট নয় বলে মনে করেন তিনি।

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এখন যেটা করা হচ্ছে সেটা নীতি হিসেবে ঠিক আছে কিন্তু মাত্রা হিসেবে আমার মনে হয় ঠিক নেই। সেটা আরো বৃদ্ধি করার প্রয়োজন হবে।

আমদানিখাতে বাণিজ্য ঘাটতি বেড়ে যাওয়ায় ক্রমাগত টান পড়ছে রিজার্ভে। আমদানিতে লাগাম টানতে ধাপে ধাপে টাকার অবমূল্যায়ন করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

Share This Article


চীনের কাছে ৫০০ কোটি ডলার ঋণ চায় বাংলাদেশ

সিলেট ও রশিদপুরে কূপ খননে কাজ পেলো চীনা প্রতিষ্ঠান

রাজস্ব আদায়ের নতুন মাইলফলক ঢাকা দক্ষিণ সিটির

প্রথমবারের মতো লজিস্টিকস নীতি প্রণয়ন, গুরুত্ব পেয়েছে নৌ খাত

আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রের ১ ইউনিট চালু, সরবরাহ হচ্ছে ৭০২ মেগাওয়াট

নতুন বাজারে বেড়েছে তৈরি পোশাক রপ্তানি

কমেছে সোনার দাম

ব্যাংক হলিডে সোমবার, বন্ধ থাকবে পুঁজিবাজারও

বড় ঋণের অনুমোদন দিল বিশ্বব্যাংক, বাংলাদেশের জন্য ‘গেম চেঞ্জার’

বাংলাদেশের জন্য ৭ হাজার ৬৩৮ কোটি টাকা ঋণ অনুমোদন বিশ্বব্যাংকের

রিজার্ভে যোগ হলো আরো দুই বিলিয়ন ডলার

ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া (আরবিআই)

সার্কভুক্ত দেশকে নিজস্ব মুদ্রা বিনিময়ের সুবিধা দেবে ভারত