দুই দেশের অচলাবস্থায় যে সুযোগ বাংলাদেশের !

অর্থনীতির বিবেচনায় দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দুই দেশ মিয়ানমার ও শ্রীলঙ্কাকে দুই নক্ষত্র বলা হতো। কয়েক বছর আগেও দেশ দুটি বাংলাদেশের চেয়ে অনেক এগিয়ে ছিলো।
অতিসম্প্রতি মিয়ানমার যখন দ্রুত অর্থনীতিতে এগিয়ে যাচ্ছিল বাংলাদেশের জন্য তা ছিল ‘চেয়ে দেখা ছাড়া উপায় নেই’ অবস্থা। প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর মিয়ানমারে ইউরোপ, জাপান, চীন, ভারতসহ অনেক দেশ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ নিয়ে হাজির হয়।
২০১৬ সালে বাংলাদেশের বৈদেশিক বিনিয়োগ ছিল মাত্র ২.৩৩ বিলিয়ন ডলার, আর একই বছর মিয়ানমারে বৈদেশিক বিনিয়োগ আসে ৩.৮২ বিলিয়ন ডলারের।
এসব বিনিয়োগ মিয়ানমারের কৃষি ও গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রিতে বিপ্লব আনতে থাকে। মজুরি বাংলাদেশের থেকেও কম হওয়ায় দ্রুতই দেশটিতে গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রি বিস্তার লাভ করে। বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের বিকল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠার পথে ছিল মিয়ানমার। আর হুমকিতে পড়ে বাংলাদেশ।
তবে ২০২১ সালে মিয়ানমারে সবকিছু এলোমেলো করে দেয় সামরিক শাসন। দেশটিতে শুরু হয় অবরোধ। ইউরোপসহ অন্য দেশগুলোর বিনিয়োগ থমকে যায়। লোকসানে পড়ে একে একে বন্ধ হয়ে যায় গার্মেন্টসসহ অন্য কারখানাগুলো। বন্ধ হয়ে যায় বিদেশি বিনিয়োগ।
অন্যদিকে, মিয়ানমারের মতোই বেহাল দশা দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কার। এশিয়ার শ্রেষ্ঠ এ দেশটির অর্থনীতি এখন দেউলিয়া। দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতি,পর্যটন শিল্পে ধস,১৪-১৫ ঘন্টা লোড শেডিংসহ টেক্সটাইল ও এপারেলস খাতে দেউলিয়ার বিষাক্ত ছোবল পড়েছে।
বিদেশি ঋণের কিস্তি পরিশোধও অনিশ্চয়তায় পড়ে গেছে এ দেশটি।বন্ধ হয়ে গেছে দেশটির নাগরিকদের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধাও। ভয়ানক প্রভাব পড়েছে চীনের পর দ্বিতীয় বৃহৎ চা রপ্তানির দেশ শ্রীলংকার চা খাতেও।
এশিয়ার দুই দেশের এমন পরিস্থিতিতে তাদের ব্যবসা স্থানান্তর হয়ে বাংলাদেশে আসার সুযোগ দেখছেন অর্থনীতিবিদরা। আর এ সুযোগকে কাজে লাগাতে পারলে অর্থনীতিতে আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে যাবে বলে মনে করেন তারা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জনসংখ্যা ও অর্থনীতির আকার বিবেচনায় ও ভৌগলিক অবস্থানে গোটা বিশ্বের অর্ধেক মানুষের বিশাল বাজার ছড়িয়ে আছে বাংলাদেশকে ঘিরে। এত বড় বাজার আর কোথাও নেই। এখন দরকার বিনিয়োগের পরিবেশ। আর তা হলেই অর্থনীতিতে চমক দেখাতে সক্ষম হবে বাংলাদেশ।