১০ মাসেই রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ
![১০ মাসেই রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ](/Uploads/Images/News/2022/5/Image-10526-20220510040019.jpeg)
একের পর এক চমক দেখাচ্ছে দেশের রপ্তানি খাত। চলতি অর্থবছরের (২০২১-২২) গত ১০ মাসেই পুরো অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ। এ সময় দেশের রপ্তানি আয় হয়েছে চার হাজার ৩৩৪ কোটি ডলার। আর লক্ষ্যমাত্রা ছিল তিন হাজার ৫৯৬ কোটি ডলার।
এই আয় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২০.৫২ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৩৫ শতাংশ বেশি। চলতি অর্থবছরে দেশের মোট লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল চার হাজার ৩৫০ কোটি ডলার। অর্থাৎ অর্থবছরের দুই মাসে আগেই লক্ষ্যমাত্রার প্রায় পূরণ হয়েছে।
সোমবার (৯ মে) রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) প্রকাশিত চলতি অর্থবছরের গত ১০ মাসের (জুলাই-এপ্রিল) রপ্তানি প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। এতে দেখা যায়, একক মাস হিসেবে গত এপ্রিল মাসে আয় হয়েছে ৪৭৩ কোটি ৮৬ লাখ ডলার। এই আয় গত এপ্রিলের চেয়ে ৫১.৫৮ শতাংশ বেশি।
ইপিবি তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, জুলাই-এপ্রিল সময়ে তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ৩৫.৩৬ বিলিয়ন ডলার, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৩৬ শতাংশ বেশি। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এই খাত থেকে আয় বেড়েছে প্রায় ২২ শতাংশ। হোম টেক্সটাইল রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩৯ শতাংশ।
গত অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল এই ১০ মাসের তুলনায় চলতি অর্থবছরের একই সময়ে হিমায়িত মৎস্য রপ্তানি করে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৭.৪৫ শতাংশ, কৃষি পণ্যে ২৬.২৯ শতাংশ, ম্যানুফ্যাকচার পণ্যে ৩৫.৬১ শতাংশ, কেমিক্যাল ও ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্যে ৪৫ শতাংশ, প্লাস্টিক পণ্যে ৩৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। এ ছাড়া চামড়াজাত পণ্যে ৩৩ শতাংশ, কুটির শিল্পে ৩০.২৪ শতাংশ, সিরামিক পণ্যে ৩৯.৯৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
তবে গত কয়েক মাসের মতো রপ্তানিতে নেতিবাচক অবস্থানে রয়েছে পাট ও পাটজাত পণ্য। এপ্রিল পর্যন্ত ১০ মাসে পাট খাতের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৭.৬৭ শতাংশ এবং গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৬.৬৮ শতাংশ পিছিয়ে আছে। পাট ও পাটজাত পণ্য খাত থেকে রপ্তানি হয়েছে ৯৬ কোটি ৬৫ লাখ ডলার।
চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের শুরুতে ৫১ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করেছে সরকার। সরকার আশা করছে, পণ্য রপ্তানি থেকে ৪৩.৫ বিলিয়ন ডলার এবং সেবা খাত থেকে ৭.৫ বিলিয়ন ডলার আয় হবে।
চলতি বছরের রপ্তানি আয়ে বেশ কয়েকটি মাইলফলক এরই মধ্যে অর্জন করেছে বাংলাদেশ। একক মাসের হিসাবে সবচেয়ে বেশি এসেছিল গত বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ এসেছিল চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে। মার্চ মাস এসেছে ইতিহাসের তৃতীয় সর্বোচ্চ রপ্তানি আয়। আর এপ্রিলে যে পরিমাণ রপ্তানি আয় এসেছে তা চলতি অর্থবছরের চতুর্থ সর্বোচ্চ।
এবারের রপ্তানি আয়ের মাসিক গড় ৪.৩৩ বিলিয়ন ডলার। আর অর্থবছরের বাকি তিন মাস—এপ্রিল, মে, জুন যদি এই গড় আয় অর্জন করা যায় তাহলে এই লক্ষ্য পেরিয়ে যাওয়া যাবে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন আকস্মিক নেতিবাচক কিছু না ঘটলে লক্ষ্যমাত্রার মাইলফলক পূরণ করবে বাংলাদেশ।