যেসব কারণে গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি জরুরি

  নিউজ ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ রাত ০৮:০৪, সোমবার, ২৭ মার্চ, ২০২৩, ১৩ চৈত্র ১৪২৯
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি
  • পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হত্যাযজ্ঞকে বিংশ শতাব্দীর ভয়াবহতম গণহত্যা হিসেবে আখ্যায়িত করে বিশ্ব সংবাদমাধ্যম।
  • ‘জেনোসাইড’ বা গণহত্যা সাধারণ কোনো হত্যাকাণ্ড নয়।
  • বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও এমন হয়েছিল।
  • নিরীহ মানুষের ওপর নারকীয় হত্যাযজ্ঞ শুরু হওয়ার পরই বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

একাত্তরের ২৫ মার্চ রাতে পূর্ব পাকিস্তান তথা ঢাকার মাটিতে প্রাণ হারিয়েছেন হাজারো নিরীহ মানুষ। এমন নৃশংস বর্বরতার মাধ্যমেই প্রথম ‘গণহত্যা’ শুরু করেছিল পাকিস্তান হানাদারবাহিনী, যা মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাস ধরেই চলছিল। কিন্তু স্বাধীনতার ৫২ বছরেও মেলেনি গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। তবে স্বীকৃতি মিললে ইতিহাসের ভয়াবহতা সম্পর্কে জানাসহ স্বাধীনতাবিরোধীদের সহজেই চিনতে পারবে আগামীর প্রজন্ম। তাই স্বীকৃতি আদায়ে নিরলস কাজ করছে বর্তমান সরকার।

জানা গেছে, দীর্ঘ ৯ মাস ধরেই পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হত্যাযজ্ঞকে বিংশ শতাব্দীর ভয়াবহতম গণহত্যা হিসেবে আখ্যায়িত করে বিশ্ব সংবাদমাধ্যম। কিন্তু দিনটিকে গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতির দাবি আজও মেনে নেয়নি জাতিসংঘ। এর অন্যতম কারণ হলো জাতিসংঘ আগেই ৯ ডিসেম্বরকে ‘আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল। ১৯৪৮ সালে জাতিসংঘের ‘জেনোসাইড কনভেনশন’ বা গণহত্যা সনদ গৃহীত হয়।

তথ্যমতে, ‘জেনোসাইড’ বা গণহত্যা সাধারণ কোনো হত্যাকাণ্ড নয়। অনেক মানুষকে হত্যা করলেই ‘জেনোসাইড’ হিসেবে স্বীকৃতি মেলে না। সেসব হত্যাকাণ্ডকেই ‘জেনোসাইড’ বলা হয় যা কোনো ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠী বা ধর্মীয় কিংবা জাতিগত সংখ্যালঘু মানুষকে সমূলে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে চালানো হয়। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও এমন হয়েছিল।

ভয়াবহ ২৫ মার্চ রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, পিলখানার ইপিআর সদর দফতর, রাজারবাগ পুলিশ লাইনসসহ শহরজুড়ে একযোগে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল পাকিস্তান সেনাবাহিনী। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান ও পাকিস্তান পিপলস পার্টির নেতা জুলফিকার আলী ভুট্টোর যোগসাজশে ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে এমন নৃশংসতা চালানো হয়েছিল। নিরীহ মানুষের ওপর নারকীয় হত্যাযজ্ঞ শুরু হওয়ার পরই বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এরপর থেকেই শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ।

৯ মাসের সশস্ত্র যুদ্ধে নারী-শিশুসহ প্রাণ গিয়েছিল ৩০ লাখ বাঙালির। সম্ভ্রম হারিয়েছিলেন তিন লাখ নারী। বিশ্ব ইতিহাসে এত অল্প সময়ে এত বেশি সংখ্যক মানুষ হত্যার ঘটনা দ্বিতীয়টি নেই। ফলে বাংলাদেশের গণহত্যাকেও ‘জেনোসাইড’ বলা যায়। এছাড়া দেশ স্বাধীনের পর থেকেই ২৫ মার্চের রাতটিকে ‘কালরাত’ হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি যে কারণে অতি জরুরি তা হলো- বাংলাদেশের মাটিতে পাকিস্তান বাহিনী যে নৃশংসতম হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে, এ স্বীকৃতি সেসব হতভাগ্য মানুষকে শ্রদ্ধা জানানোর নামান্তর। এছাড়া এ গণহত্যার স্বরূপকে নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরা; যেন ইতিহাসের ভয়াবহতা সম্পর্কে জানতে পারে আগামীর বাংলাদেশ। একই সঙ্গে যেন এমন অপরাধের বিরুদ্ধে গণসচেতনতা গড়ে তোলা যায়। মূলত গণহত্যাকে ঘৃণা করা; গণহত্যকারীদের চিহ্নিত করা ও প্রতিবাদ করা এবং আর যেন এ ধরনের নৃশংস বর্বরতা কখনো না ঘটে তার জন্য বিশ্বজনমত তৈরি করা।

১৯৭১ সালে পরিকল্পিতভাবে ৩০ লাখ মানুষকে হত্যা করেছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নাৎসি জার্মানিও তাই করেছে। ১৯৪২ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত পরিকল্পিতভাবে ১১ মিলিয়ন মানুষকে হত্যা করেছে তারা। বাংলাদেশের ১৯৭১ সালের গণহত্যার স্মরণও একই কারণে। মানবতার বিরুদ্ধে যারাই নিকৃষ্টতম অপরাধ করে তাদের ঘৃণা করতে হবে, আর যেন এমন ভয়ংকর অপরাধ অন্য কোথাও না ঘটে। তাই জাতিসংঘকে বাংলাদেশের গণহত্যার স্বীকৃতি দেয়া এখন সময়ের দাবি।

বিষয়ঃ বাংলাদেশ

Share This Article


নির্দলীয় উপজেলা নির্বাচনে বিভিন্ন দলের বর্জন কি তাৎপর্যপূর্ণ?

আইএমএফের ঋণ: তৃতীয় কিস্তির জন্য ৯ শর্ত পূরণ বাংলাদেশের!

যে কারণে স্থায়ী জামিন পাননি ইউনূস

শেখ হাসিনা দেশ পরিচালনায় মসৃণভাবে এগিয়ে যাচ্ছেন: মার্কিন থিংক ট্যাংক

মোমবাতি জ্বালিয়ে সেহরি-ইফতার খাবারের দিন এখন অতীত!

ভিসা নিষেধাজ্ঞায় ইউনুসের হাত!

ঈদযাত্রায় স্বস্তি আনতে ১৫ বছরে সরকারের যত উদ্যোগ

বৃদ্ধির পথে রিজার্ভ: বাড়ল ৫১ কোটি ডলার!

গ্রামীণ ফোনের ইনকামিং কল চার্জ বন্ধ করলেও বিদেশী বন্ধুদের দ্বারা সরকারকে থ্রেট দিয়েছিলেন ইউনুস!

পোশাকের নতুন বাজার: আওয়ামীলীগ সরকারের শাসনামলে ১০ গুণ বেড়েছে রপ্তানি!

পাহাড়ে ‘কেএনএফ’ সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আসলে কারা?

বিশ্ব খাদ্য নিরাপত্তায় শঙ্কা: বাংলাদেশের অবস্থান কোথায়