আসুন সুন্দরবনকে ভালোবাসি

  বাংলাদেশের কথা ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ সকাল ১০:১৪, সোমবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১ ফাল্গুন ১৪২৮

আজহার মাহমুদ  : এক অর্থে সুন্দরবন হলো বাংলাদেশের প্রাণ।

কারণ এ বন ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের তাণ্ডব থেকে আমাদের উপকূলকে রক্ষা করে। বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বন, বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ আমাদের এই সুন্দরবন। ২০০১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি দেশের পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোর অংশগ্রহণে প্রথম জাতীয় সুন্দরবন সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেই সম্মেলনে ১৪ ফেব্রুয়ারিকে ‘সুন্দরবন দিবস’ ঘোষণা করা হয়। সেই থেকে প্রতিবছর দিনটি সুন্দরবন দিবস হিসাবে পালিত হয়ে আসছে।

সুন্দরবনে রয়েছে ৫ হাজার প্রজাতির উদ্ভিদ, ১৯৮ প্রজাতির উভচর প্রাণী, ১২৪ প্রজাতির সরীসৃপ, ৫৭৯ প্রজাতির পাখি, ১২৫ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী এবং ৩০ প্রজাতির চিংড়ি মাছ। দুঃখজনক, প্রতিনিয়ত বনখেকোদের আগ্রাসনের ফলে সুন্দরবন আজ হুমকির মুখে। সুন্দরবনের সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে রয়েছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলসহ গোটা দেশের পরিবেশ। অথচ সুন্দরবনের গুরুত্ব অনুধাবনে আমরা ব্যর্থ। সুন্দরবনকে বাঁচাতে, এ বনের উদ্ভিদ ও প্রাণিসম্পদকে বাঁচাতে আমাদের সবার এগিয়ে আসতে হবে। সরকারকে এ ব্যাপারে আরও তৎপর হতে হবে। কাঠ চোরাকারবারি, বন ও জলদস্যু, পশুপাখি শিকারি ও দখলদারদের তৎপরতা থেকে সুন্দরবনকে বাঁচাতে হবে। বনের প্রতি অতিমাত্রায় নির্ভরতা এবং মানুষের নির্বিচার আচরণে দিন দিন বিপন্ন হচ্ছে এর পরিবেশ ও প্রতিবেশ। গত ১৯ বছরে ৩১ বার আগুন লেগেছে সুন্দরবনে। পুড়ে গেছে প্রায় ১০০ একর বনভূমি, গাছপালা, লতাগুল্ম। মারা গেছে বিভিন্ন প্রজাতির জীবজন্তু। আবাসস্থল হারিয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী। এ আগুন আপনাআপনি লাগে না। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিবছর একটা নির্দিষ্ট সময়ে এই আগুন লাগানো হয়। বনের মাঝখানে জলাশয়ে মিঠা পানির মাছ ধরতেই আগুন লাগায় সেখানকার কিছু মানুষ। এতে ক্ষতি হয় আশপাশের এলাকারও। সবাই সবকিছু জানে, কিন্তু উদ্যোগ নেয় না। সরকারকেই এ ব্যাপারে এগিয়ে আসতে হবে।

জলবায়ুর পরিবর্তন ও সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় মারাত্মক হুমকির মধ্যে আছে আমাদের সুন্দরবন। সুন্দরবনকে বাঁচাতে প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। এগিয়ে আসতে হবে সব শ্রেণির মানুষকে। সুন্দরবনের অবদান ও সৌন্দর্য মানুষের মাঝে তুলে ধরতে হবে। তাহলেই আমরা আমাদের প্রিয় এই বনকে রক্ষা করতে পারব। মনে রাখতে হবে, সুন্দরবন বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে। তাই আসুন, সুন্দরবনকে বাঁচাতে আমরা সবাই সজাগ হই।

আজহার মাহমুদ : প্রাবন্ধিক

[email protected]

 

বিষয়ঃ পর্যটন

Share This Article