লবিংয়ের টাকা ঘুরে ফিরে যায় আমেরিকার পকেটেই !

  বাংলাদেশের কথা ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ সন্ধ্যা ০৭:১৭, বৃহস্পতিবার, ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ২০ মাঘ ১৪২৮

আমেরিকা যেহেতু সুপার পাওয়ার, সুতরাং তাকে রাজি-খুশি করাতে বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে লবিং চলতেই থাকে।

 

বাংলাদেশে যে কাজকে দালালি বলা হয় আমেরিকায় তার পেশাগত নাম লবিস্ট।  এসব লবিস্ট ফার্ম প্রচুর টাকার বিনিময়ে মার্কিন সরকারের কাছে তার ক্লাইন্টের পক্ষে ত্দবির করে।

বেশিরভাগ লবিং ফার্মের সঙ্গেই মার্কিন কংগ্রেসম্যান বা সিনেটররা যুক্ত থাকেন। তারা মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ক্লাইন্টের স্বার্থ উদ্ধারের চেষ্টা করে। তবে ব্যর্থ হলে টাকা ফেরত দেন না।

ক্লাইন্টের চাহিদা যেটাই হোক, ন্যায়-অন্যায়, ভালো-খারাপ কোন বিষয় নয়। ক্লাইন্টের চাহিদাই এখানে মূখ্য বিষয়। ক্লাইন্ট যা চাইবে তার জন্যই লবিং করবে এসব প্রতিষ্ঠান।

যেমন এই এই মুহুর্তে বাংলাদেশ সরকার ও রাজনৈতিক দল বিএনপি, উভয়ের পক্ষেই কিছু লবিস্ট ফার্ম কাজ করছে বলে শোনা যাচ্ছে। নিশ্চিতভাবেই দুটি পক্ষের স্বার্থ এক নয় বরং বিপরীত মুখি। অথচ লবিস্ট ফার্মগুলো দুই পক্ষ থেকেই টাকা নিচ্ছে। টাকা ঘুরে ফিরে যাচ্ছে আমেরিকার ঘরেই।

এটা শুধু বাংলাদেশের চিত্র নয়। আমেরিকা যেহেতু সুপার পাওয়ার, সুতরাং তাকে রাজি-খুশি করাতে বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে লবিং চলতেই থাকে।

কোন কারনে যদি কোন দেশ বা কোন প্রতিষ্ঠান লবিং করতে না চায় তাহলে সেখানে একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়, যেন তারা বাধ্য হয়ে লবিং করে।

যেমন ১৯৯২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর টম হারকিন (ডেমোক্র্যাট) সেই দেশের কংগ্রেসে একটি বিল আনলেন, যাতে বলা হয়েছে যেসব দেশে শিশু শ্রম ব্যবহৃত হয় সেসব দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্র কোনও পণ্য আমদানি করবে না।

বিলটি পাস হলে বাংলাদেশের উঠতি তৈরি পোশাক শিল্প পরে মহাবিপদে। কারন তখন প্রচুর শিশু শ্রমিক গার্মেন্টস এ কাজ করতো।

তৎকালীন বিএনপি সরকার ওয়াশিংটনে লবিস্ট নিয়োগ করলো। কিন্তু সেই তদবির কোনও কাজে লাগেনি। বাংলাদেশে প্রায় দেড় লাখ অল্প বয়সী শ্রমিক বেকার হলো। লবিং এর টাকা পেল আমেরিকার লবিস্ট ফার্ম।

আবার ২০১৩ সালে আন্তর্জাতিক লবিস্ট মার্ক পারসি বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে ওয়াশিংটন টাইমসে একটি প্রবন্ধ লেখেন, যেখানে বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা বন্ধ করার আহবান জানানো হয়।

জানা গেছে জিএসপির সেই বৈধ সুবিধা ফিরে পেতেও সরকারের পক্ষ থেকে লবিস্ট নিয়োগ দেয়া হয়েছিলো। একই সুবিধা বন্ধ করতে এবং ফিরে পেতে (যদিও জিএসপি সুবিধা আর ফিরে পাওয়া যায়নি) যত টাকা খরচ হয়েছে সব টাকা লবিস্টের পকেটেই গিয়েছে।

Share This Article