প্যারিসে ‘দি এন্ড অব লাভ’

  বাংলাদেশের কথা ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ সকাল ০৯:৫৯, শুক্রবার, ২ জুন, ২০২৩, ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০

‘পিএসজির মাঠে এটাই হবে তার শেষ ম্যাচ। আমার বিশ্বাস, সে উষ্ণ অভ্যর্থনা পাবে’

দুই মৌসুম খুব বেশি দিন নয়। যদি পিএসজির জার্সি গায়ে প্রথম ম্যাচটির দিন-তারিখ ধরা হয়, তাহলে গুনে গুনে ৬৪৩ দিন। এ সময়ে কত হতাশা, কত বিষাদ জমেছে লিওনেল মেসির মনে, কে জানে? 

হয়তো ৩ জুন পার্ক দেস প্রিন্সেসে সেই বিষাদের মেঘ চোখের জল হয়ে নামবে। দর্শকদের দুয়ো, চারদিকে সমালোচনার বাণ কিংবা না বলে সৌদিতে যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা– কম তো হয়নি। তিল তিল করে সেসব সয়েও থাকতে চেয়েছিলেন মেসি। কিন্তু পিএসজির সঙ্গে নতুন চুক্তি নিয়ে কথা বলতে গিয়েই ঝামেলা শুরু। সেই ঝামেলা আর মেটেনি। কেউ আর মিলিয়েও দেননি। তাই যে যার মতো আলাদা হওয়ার পথই বেছে নিল। একের পর এক গুঞ্জনের মাঝে পিএসজির কোচ গালতিয়ের জানিয়ে দিলেন, ৩ জুন শেষ ম্যাচ খেলবেন মেসি। সেদিন বরণডালায় তাঁর জন্য কতটুকু ফুল থাকবে, জানা নেই। নাকি শেষটাও যন্ত্রণার, দুঃস্মৃতির হয়ে রইবে।

লাভ ইন প্যারিস! মেসির প্যারিস অধ্যায়ের শুরুটা হয়েছিল রাজকীয়ভাবে। কিন্তু ভালোবাসার শেষটা ...? অবশ্য গালতিয়েরের চোখে বিদায় পথেরযাত্রী মেসি মহান। তাঁকে না পেলে যেন পিএসজি কিছুই পেত না– এমন একটা আভাস, ‘ফুটবল ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড়কে কোচিং করাতে পেরে আমি গর্বিত। পিএসজির মাঠে এটাই হবে তার শেষ ম্যাচ। আমার বিশ্বাস, সে উষ্ণ অভ্যর্থনা পাবে। এ বছর মেসি দলের গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল। নিয়মিত সে ম্যাচে অবদান রেখেছে। তাকে নিয়ে কোনো বাজে মন্তব্য বা সমালোচনা আমি যুক্তিযুক্ত মনে করি না। দেখুন, সে নিজের সেরাটা দিয়েই লড়াই করেছে, সবটুকু নিংড়ে দিয়েছে। আর পুরো মৌসুমে তাকে পাওয়াটা আমাদের জন্য সৌভাগ্যের বিষয়।’

যে যাই বলুক, মেসির প্যারিসযাত্রার ছায়ায় কিন্তু ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় অর্জনটাই লুকিয়ে। বিশ্বকাপ– যার জন্য বহু রাত, বহু পথ ও বহু সুযোগ হারিয়েছেন মেসি। বার্সা ছেড়ে পিএসজিতে যাওয়ার পর বোধহয় ভাগ্য দেবতা তাঁর দিকে হাসিমুখে তাকান। কাতারের মহামঞ্চে মহা-উৎসবটা তাই ধুমধাম করে সেরেছেন মেসিরা। এর পর তো তাঁর দুঃখ বা আফসোস থাকার কথাও না। সোনালি ট্রফিটি জেতার পর একাধিক সাক্ষাৎকারেও তেমনটি বলেছেন। চ্যাম্পিয়ন হয়ে খেলতে তাঁর কেমন লাগে, সেই স্বাদটাই নিচ্ছেন কেবল। যতদূর শোনা যাচ্ছে, প্যারিস থেকে মেসির বিমানটা যুক্তরাষ্ট্রের দিকে যাবে।  সেখানে ইন্টার মিয়ামির সঙ্গে চুক্তি করতে পারেন তিনি। এর পর তাঁকে লোনে বার্সায় পাঠিয়ে দেবে মিয়ামি। তবে সৌদির ক্লাব আল হিলালে গেলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

শেষ ক’টা মাস বাদ দিলে পিএসজিতে মেসির মাঠের সময়টা একেবারে খারাপ কাটেনি। সব মিলিয়ে ৭৪ ম্যাচে অংশ নিয়েছেন, যেখানে গোল ৩২টি আর অ্যাসিস্ট ৩৫টি। ট্রফি জিতেছেন তিনটি। তিন ট্রফির মধ্যে দুটি আবার লিগ ওয়ান। তবে আক্ষেপটা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ নিয়ে, সেটা কিন্তু মেসির চেয়ে পিএসজিরই বেশি। কেননা তারা এই প্রতিযোগিতায় এখনও সেরা হতে পারেনি। কিন্তু মেসি বার্সার হয়ে একটি নয়, চারটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছেন।

বিষয়ঃ তারকা

Share This Article