গাজীপুরে ইভিএম কারসাজি দিয়ে কি জয়ী হতে পারতোনা আওয়ামীলীগ?

  বাংলাদেশের কথা ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ বিকাল ০৪:২৭, বৃহস্পতিবার, ১ জুন, ২০২৩, ১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০

ব্যালট বাক্সে ভোট কারচুপির সুযোগ থাকলেও ইভিএমে ভোট কারচুপির সুযোগ নেই। বরং এটা অধিক নিরাপদ। কারণ এই মেশিনে একজনের ভোট আরেকজন দিতে পারে না। ভোটার আঙুলের ছাপ দিলে তবেই ইলেকট্রনিক ব্যালট পেপার ভোটদানের জন্য উন্মুক্ত হয়, অন্যথায় নয়।

দেশে ব্যালটে ভোটের পাশাপাশি ইভিএমের ব্যবহার চলছে বেশ কয়েক বছর ধরেই। তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি ও সমমনারা শুরু থেকেই এই যন্ত্রের বিরোধিতা করে আসছে। তাদের দাবি, এই যন্ত্র দূর থেকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। প্রশ্ন উঠেছে,যদি নিয়ন্ত্রণ করাই যেতো, তাহলে গাজীপুরে ইভিএম কারসাজি করে কেন জয়ী হতে পারলোনা আওয়ামী লীগ?

ঢাকার নিকটস্থ হওয়ায় গাজীপুরকে বলা হয়ে থাকে দ্বিতীয় রাজধানী। অনেক জেলা থেকে মানুষ গাজীপুর দিয়ে ঢাকায় প্রবেশ করে। তাছাড়া এটা গার্মেন্টস ও বিভিন্ন শিল্প কল-কারখানা সমৃদ্ধ এলাকা। এখানে লাখ লাখ শ্রমিক কাজ করে। তাই গাজীপুরে যদি নৌকার প্রার্থী জয়লাভ করে তাহলে রাজনৈতিকভাবে লাভবান হতো আওয়ামী লীগ। তবে শত চেষ্টা করেও জয় পায়নি দলটি। আর এটাই হচ্ছে ইভিএমের কামাল।

জানা গেছে, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে এবার নৌকার প্রতীক নিয়ে লড়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আজমতউল্লাহ খান। আর টেবিল ঘড়ি প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ছিলেন গাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন। ইভিএমে ভোট হলেও ১৪ হাজারের বেশি ভোটের ব্যবধানে আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে হারিয়েছেন তিনি।

বলা বাহুল্য, এখানে ভোট লড়াইয়ে ইসলামী আন্দোলন বা চরমোনাই, জাতীয় পার্টিসহ অন্যান্য প্রার্থী থাকলেও নজিরবিহীনভাবে কারো কোনো অভিযোগ ছাড়াই অত্যন্ত সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট শেষ হয় এবং ফলাফলও মেনে নিয়েছেন সবাই। অন্যদিকে, দলীয়ভাবে নির্বাচনে না থাকলেও বিএনপির পক্ষ থেকে ইভিএম নিয়ে কোনো অভিযোগ আসেনি। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্ব নির্বাচনের ফল নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে। ফলে গাজীপুর সিটি নির্বাচন সম্পূর্ণ সুষ্ঠু ও নিরপক্ষ হয়েছে বলে মত দিয়েছেন বিশিষ্টজনরা।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, ব্যালট বাক্সে ভোট কারচুপির সুযোগ থাকলেও ইভিএমে ভোট কারচুপির সুযোগ নেই। বরং এটা অধিক নিরাপদ। কারণ এই মেশিনে একজনের ভোট আরেকজন দিতে পারে না। ভোটার আঙুলের ছাপ দিলে তবেই ইলেকট্রনিক ব্যালট পেপার ভোটদানের জন্য উন্মুক্ত হয়, অন্যথায় নয়।

ছবি সম্বলিত হওয়ায় একজন ভোটার দ্বিতীয়বার ভোট দিতে চাইলে এই মেশিন নিজেই তাকে ভর্ৎসনা করে ফিরিয়ে দেয়। পাশাপাশি মেশিনে কোনো ইন্টারনেট অথবা মোবাইল সংযোগ না থাকায় কোনোভাবেই কেউ নিজের নিয়ন্ত্রণে নিতে পারে না। ফলে হ্যাকিংয়েরও ভয় থাকে না। আর একারণেই অধিক নিরাপদ ইভিএম, যদিও অপরিহার্য্য কিছু কারণে  জাতীয় নির্বাচনে ইভিএমে ভোট গ্রহণ বাতিল করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গাজীপুর সিটি নির্বাচনে এবার ৪৮০টি কেন্দ্রে অন্তত দেড় হাজার ইভিএম ব্যবহার করা হয়েছিল। সেসব কেন্দ্রে পর্যবেক্ষণে ছিল ৪ হাজার ৪৩৫টি সিসিটিভি ক্যামেরা। আগামী ১২ জুন অনুষ্ঠিত হবে বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচন। সেখানেও একইভাবে ভোট সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন ইসি।

Share This Article