শেষ পর্যন্ত দেশীয় কয়লা উত্তোলনের সিদ্ধান্ত
- খনিতে সম্ভাব্য মজুতের পরিমাণ ৭০.৬ কোটি টন। বছরে ৩০ লাখ টন হিসাবে ৩০ বছরে খনিটি থেকে নয় কোটি টন কয়লা উত্তোলন করা যাবে।
- বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিশাল অঙ্কের বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে।
চলমান জ্বালানি সংকটের প্রেক্ষাপটে আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে দেশীয় কয়লা উত্তোলন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে দিনাজপুরের দীঘিপাড়া খনি থেকে কয়লা উত্তোলনের পরিকল্পনা করছে সরকার। খনিটি হতে কয়লা উত্তোলনের লক্ষে ইতোমধ্যে সবধরনের সমীক্ষা শেষ করেছে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান বিসিএমসিএল।
সমীক্ষায় দেখো গেছে, দীঘিপাড়া কয়লা খনিতে সম্ভাব্য মজুতের পরিমাণ ৭০.৬ কোটি টন। বছরে ৩০ লাখ টন হিসাবে ৩০ বছরে খনিটি থেকে নয় কোটি টন কয়লা উত্তোলন করা যাবে, যার বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় আড়াই লাখ কোটি টাকা। এ কয়লা উত্তোলন করতে ব্যয় হবে প্রতি টনে ১৬০ ডলার। এখানে সর্বোচ্চ ৪৩৪.৪৯ মিটার ও সর্বনিম্ন ৩২৩ মিটার গভীরে ৭২.৩৬ মিটার পুরুত্বের কয়লা রয়েছে। এ ছাড়াও খনিতে রয়েছে সাদা মাটি, বালু মিশ্রিত সিলিকা, যা গ্লাস ফ্যাক্টরিতে এবং সিরামিক কাজে ব্যবহার করা যাবে।
জ্বালানি বিভাগ জানায়, প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি পেলে কয়লা উত্তোলন প্রক্রিয়া শুরু হবে। বর্তমানে দেশের পাঁচ খনিতে ৭ হাজার ৮০৩ মিলিয়ন টন কয়লার মজুত রয়েছে। যে ক’টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণাধীন রয়েছে সেগুলোর দীর্ঘ সময়ের জ্বালানি হিসেবে এই মজুতকৃত কয়লা ব্যবহার করা যাবে।
বিসিএমসিএল সূত্র জানায়, দেশে এখন ৭৯৬ কোটি ২০ লাখ টন কয়লা মজুত রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কয়লা মজুত রয়েছে জয়পুরহাটের জামালগঞ্জে। খনিটিতে ৫৪৫ কোটি টন কয়লা মজুত রয়েছে। এর বাইরে দিনাজপুরের দীঘিপাড়ায় সাড়ে ৮৬ কোটি, বড়পুকুরিয়ায় ৩৯ কোটি, ফুলবাড়ীতে ৫৭ কোটি ২০ লাখ ও রংপুরের খালাসপীরে সাড়ে ৬৮ কোটি টন কয়লা মজুত রয়েছে।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা জানান, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বেজুড়ে জ্বালানি সংকট দেখা দিয়েছে। সে হিসেবে দেশের খনিগুলোয় যে পরিমাণ কয়লার মজুত রয়েছে, তা বিদ্যুৎ উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে। এতে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিশাল অঙ্কের বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে। অন্য দিকে দেশের সম্পদ যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে আরো গতিশিল করতে সহায়তা করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।