৩০ আমলের রমজান

  বাংলাদেশের কথা ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ সকাল ০৯:৫৪, শুক্রবার, ৭ এপ্রিল, ২০২৩, ২৪ চৈত্র ১৪৩০

মুফতি হুমায়ুন আইয়ুব

ইবাদতের বসন্তকাল রমজান। সওয়াবের ভরা মৌসুম। রহমত, বরকত ও নাজাতের মাস। নবীজি (সা.) বলেন, রমজান বরকতময় মাস, তোমাদের দুয়ারে উপস্থিত হয়েছে। এ মাসে আল্লাহ একটি রাত দিয়েছেন, যা হাজার মাস থেকে উত্তম। যে এর কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হলো, সে বঞ্চিত হলো আল্লাহর মহাকল্যাণ থেকে। (ইবনে মাজাহ ১৬৪৪)

এ মাসে রয়েছে অনেক আমল। আমরা ৩০টি বিশেষ আমল উপস্থাপন করছি। আমলগুলো কবুল হবে যদি নিচের এই দুই শর্ত পাওয়া যায়। এক. সহি নিয়ত ও ইখলাস। একনিষ্ঠতার সঙ্গে শুধু আল্লাহর জন্য আমল করা। আল্লাহতায়ালা বলেন, আর তাদের কেবল এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল যে, তারা যেন আল্লাহর ‘ইবাদত করে তারই জন্য দীনকে একনিষ্ঠ করে (সূরা বাইয়্যিনাহ : ৫)


দুই. ইবাদতের ক্ষেত্রে মহানবীর অনুসরণ। কোরআন বলছে, এবং রাসুল তোমাদের জন্য যা নিয়ে এসেছেন তা তোমরা গ্রহণ কর, আর যা থেকে তিনি নিষেধ করেন তা থেকে বিরত হও। (সূরা হাশর : ৭)

আমলগুলো হলো- ১. রোজা রাখা : রোজা ইসলামের অন্যতম স্তম্ভ। মহানবী সা. বলেছেন, যে ব্যক্তি ইমান ও ইখলাসের সঙ্গে আল্লাহকে সন্তুষ্টি করার জন্য রমজানের রোজা রাখবে, তার অতীতের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে। (বুখারি শরিফ : ২০১৪)


২. নামাজ আদায় : রোজার সঙ্গে যথাসময়ে নামাজ জান্নাতের পথ সুগম করে দেয়। আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ রা. বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর নবী! কোন আমল জান্নাতের অতি নিকটবর্তী? তিনি বললেন, সময় মতো নামাজ আদায় করা। (মুসলিম শরিফ : ২৬৩); ৩. বেশি বেশি কোরআন পড়া, ৪. কোরআন পড়া শেখানো, ৫. কোরআন মুখস্থ, ৬. কোরআনের তরজমা তাফসির পাঠ।

নবীজি বলেন, তোমরা কোরআন শিক্ষা কর এবং তিলাওয়াত কর। (সুনানে তিরমিজি : ২৮৭৬) নবীজি আরও বলেছেন, তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ব্যক্তি সেই, যে নিজে কোরআন শিক্ষা করে ও অপরকে শিক্ষা দেয়। (বুখারি শরিফ : ৪৭৩৯); ৭. বরকতময় সাহরি খাওয়া, ৮. ইফতারি গ্রহণ, ৯. তারাবির নামাজ পড়া, ১০. রমজান পাওয়ার জন্য মহান আল্লাহর কৃতজ্ঞতা আদায় করা, ১১. কল্যাণকর কাজ বেশি বেশি করা, ১২. তাহাজ্জুদ নামাজের অভ্যাস গড়ে তোলা, ১৩. অধিকহারে দান-সদকাহ করা, ১৪. উত্তম চরিত্রের অনুশীলন, ১৫. শেষ দশে এতেকাফ করা, ১৬. দাওয়াত-তাবলিগে সময় দেওয়া, ১৭. সামর্থ্য থাকলে ওমরা পালন করা, ১৮. লাইলাতুল কদর অনুসন্ধান করা, ১৯. ইফতার করানো, ২০. অধিকহারে তাওবা ও ইস্তেগফার করা, ২১. আল্লাহর ভয় বা তাকওয়া, জীবনের সর্বস্তরে বাস্তবায়ন, ২২. ফজরের পর সূর্যোদয় পর্যন্ত মসজিদে অবস্থান করা, ২৩. ফেতরা দেওয়া, ২৪. অসহায়দের সহায় দেওয়া, ২৫. অপচয় না করা, ২৬. আত্মীয়স্বজনদের সম্পর্ক উন্নীত করা, ২৭. সবসময় মুখে ঠোঁটে ও অন্তরে আল্লাহর জিকর করা, ২৮. মিসওয়াক করা, ২৯. কোরআন বোঝা, ৩০. কোরআন অনুযায়ী আমল করা।

আল্লাহতায়ালা আমাদের অধিকহারে নেক আমল করার তাওফিক দান করুন।

মুদাররিস : শেখ জনূরুদ্দীন রহ. দারুল কোরআন মাদ্রাসা, চৌধুরীপাড়া, ঢাকা।

Share This Article