ফের তেল উৎপাদন কমানোর ঘোষণা ওপেকের, প্রভাব পড়তে পারে বাংলাদেশেও!

  বাংলাদেশের কথা ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ বিকাল ০৩:৪৬, সোমবার, ৩ এপ্রিল, ২০২৩, ২০ চৈত্র ১৪৩০

আবারও অপরিশোধিত তেল উৎপাদন কমানোর ঘোষণা দিয়েছে বিশ্বের বৃহৎ তেল উৎপাদনকারী সংস্থা ওপেক প্লাস। বাজারে স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে এমন ‘বিস্ময়কর’ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছে সংস্থাটির সৌদি ও ইরাকসহ কয়েকটি উপসাগরীয় অঞ্চলের সদস্য দেশ। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, দৈনিক ১১.৬ লাখ ব্যারেল তেল কম উৎপাদন করা হবে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসি ও রয়টার্সে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।

 

এর আগেও গত বছরের অক্টোবরে দৈনিক ২০ লাখ ব্যারেল তেল কম উৎপাদনের ঘোষণা দেয় সংস্থাটি, যা ওই বছরের নভেম্বর থেকে কার্যকর হয়।
বিশ্বে ৪০ শতাংশ ক্রুড তেল সরবরাহ করে থাকে ওপেক। এর অন্যতম সদস্য সৌদি আরব ও রাশিয়া। সংস্থাটির নতুন করে তেল উৎপাদন কমানোর এই সিদ্ধান্তে আবারও অস্থির হয়ে উঠতে পারে বিশ্বের জ্বালানি তেলের বাজার। বেড়ে যেতে পারে সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম। সারাবিশ্বের মতো এর প্রভাব পড়তে পারে বাংলাদেশসহ অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশেও। কেননা, জ্বালানি তেলের দাম বাড়লে এর সরাসরি প্রভাব পড়বে পরিবহন খাত ও কৃষি খাতে। এতে পরিবহন ব্যয় বাড়বে। সেই সঙ্গে বাড়বে কৃষিপণ্য উৎপাদন ব্যয়। এর পরোক্ষ প্রভাব গিয়ে পড়বে অন্যান্য খাতেও। ফলে আরও মূল্যস্ফীতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ইউক্রেনে রাশিয়ার সেনা অভিযান শুরুর পর হঠাৎ করেই বিশ্ববাজারে রেকর্ড পরিমাণে বেড়েছিল জ্বালানি তেলের দাম। এর প্রভাবে বেড়ে যায় বিদ্যুতের দামও। ফলে বিশ্বজুড়ে অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায় মুদ্রাস্ফীতি। অনেক দেশে সহ্যসীমা ছাড়িয়ে যায় জীবন ব্যয়ও।

সে সময় যুক্তরাষ্ট্র তেলের বাজার স্বাভাবিক রাখতে উৎপাদনকারী দেশগুলোর কাছে তেল উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান জানালেও তাতে সাড়া দেয়নি তারা। এ নিয়ে সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ও হয়।

তবে ওই ঘটনার কিছু দিন পর বিশ্ববাজারে দাম কিছুটা কমলেও ওপেকের নতুন সিদ্ধান্তে দাম আবারও বাড়তে পারে।

নতুন করে তেল উৎপাদন কমানোর ঘোষণায় যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল বলেছে, “বাজারের অনিশ্চয়তার মধ্যে এই মুহূর্তে তেল উৎপাদন কমানোর সিদ্ধান্ত যুক্তিযুক্ত বলে মনে করি না আমরা। এটা পরিষ্কার করেই বলছি।”

নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সৌদি আরব ৫ লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদন কমাবে। ইরাক কমাবে ২ লাখ ১১ হাজার ব্যারেল। সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, আলজেরিয়া ও ওমানও তেল উৎপাদন কমাচ্ছে।

সৌদির জ্বালানি মন্ত্রণালয় বলেছে, বাজারের স্থিতিশীলতা বজায় রাখার পূর্ব সচেতনতামূলক ব্যবস্থা হিসেবেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেল ব্যারেল প্রতি ৮০ ডলারে বিক্রি হচ্ছে। ওপেকের নতুন সিদ্ধান্তে সিদ্ধান্তে এটা বাড়তে পারে। তেল বেচাকেনায় মধ্যস্থতা করা পিভিএম বলেছে, এতে ব্যারেল প্রতি ৩ ডলার বাড়তে পারে তেলের দাম। অন্যদিকে পিকারিং এনার্জি পার্টনার্স বলেছে, তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ১০ ডলারও বাড়তে পারে।

Share This Article